এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

দীর্ঘায়িত দুর্ভোগ : তিন দিন লাগল বৈঠকে বসতেই

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : হঠাৎ করে তেলের দাম বাড়ানোর পর পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা অঘোষিত ধর্মঘট শুরুর পর ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে যাত্রীদের দুর্ভোগ নিরসনে ‘কার্যত’ কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বরং এই সময়ের মধ্যে মন্ত্রীরা একের পর এক ‘সাফাই’ গাইতে থাকলেও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে দ্রুত বৈঠক করে মানুষের কষ্ট লাঘবে কোনো পদক্ষেপ নেননি। এ রকম পরিস্থিতিতে দুর্ভোগ শুরু হওয়ার তিন দিন পর আজ রবিবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পরিবহন সংশ্লিষ্টদের একটি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন। এরপরই ক্ষুব্ধ মানুষজন পাল্টা প্রশ্ন করে বলেছেন, বৈঠক করতে তিন দিন সময় লাগল কেন?
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বুধবার মধ্যরাত থেকে বাড়তি তেলের দাম কার্যকর হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে মানুষের ভোগান্তি। দুর্ভোগের তৃতীয় দিনে আজ রবিবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসছে। অথচ এই বৈঠকটি বৃহস্পতিবারই করা যেত। কিন্তু তা না করে শুধু কালক্ষেপণ করা হয়েছে। এর ফলে মানুষের কষ্ট বেড়েছে। অবশ্য রবিবারের বৈঠকের আগেই গতকাল শনিবার ট্রাক মালিক সমিতির নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ‘দেখা’ করে হুমকি দিয়েছেন, তেলের দাম না কমানো পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। অর্থাৎ বৈঠকের আগেই আলটিমেটাম। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, আজকের বৈঠক কতটুকু ফলপ্রসূ হবে? তাহলে কি আবারো গণপরিবহনে ভাড়া বাড়িয়ে মালিক-শ্রমিকদের চাওয়ার পূর্ণতা দেয়া হবে?
এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে তেলের দাম বাড়াতে সময় লাগেনি, ধর্মঘটে যেতেও সময় লাগেনি, মন্ত্রীদের কথা বলতেও সময় লাগেনি- সেখানে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে বিআরটিএ কেন তাৎক্ষণিক বৈঠক করতে পারেনি? এই বৈঠক করতে কেন তিন দিন অপেক্ষা করতে হলো? এসব প্রশ্নের সরাসরি জবাব সড়ক পরিবহন সংশ্লিষ্ট কেউ দেননি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় জনজীবনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কায় এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। এমন সংকটে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন ছিল বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। তবে কর্তৃপক্ষের ‘ধীরে চলো নীতিতে’ অনেকেই ক্ষোভ জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক বলেন, পরিবহন খাতে দীর্ঘদিনের বিশৃঙ্খলার ফলেই মালিক-শ্রমিকরা ঘোষণা ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর মতো জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আলোচনার পরামর্শ দেন তিনি।
সড়কের এ সংকট সমাধানের বিআরটিএর কোনো উদ্যোগ আছে কি না, জানতে চাইলে বিআরটিএ পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে এ ধর্মঘট করছে তারা (বাস-ট্রাক মালিক)। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। আজ রবিবার আমাদের বৈঠক আছে। প্রায় একই কথা জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আজ বেলা ১১টায় মিটিং আছে, সেখানে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এর আগে গত বুধবার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়। এরপর বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সারাদেশে পণ্য পরিবহনে ধর্মঘট শুরু করে। পরে বাস মালিকরা তাতে যোগ দেয়। এ রকম পরিস্থিতিতে শুক্রবার দুপুরে লঞ্চ মালিক সমিতির পক্ষ থেকে তেলের দাম বাড়ার কারণে লঞ্চের ভাড়াও শতভাগ বাড়ানোর দাবি জানানো হয়। শনিবার দুপুরের মধ্যে এ বিষয়ে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে সময় বেঁধে দিতে বলা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়