এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

ড. শামসুল হক : তড়িঘড়ি তেলের দাম বাড়ানো অপ্রত্যাশিত

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেছেন, কোনো আলোচনা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে যেভাবে জ¦ালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে তা একেবারেই অপরিকল্পিত ও অপ্রত্যাশিত হয়েছে। সরকারের এখানে জবাবদিহিতার অভাব, দায়সারা ভাব দেখা গেছে। কোভিড উত্তরকালে পরিবহন সেক্টরে যে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল তাতে বড় ধাক্কা খেয়েছে। এছাড়া পরিবহনের খরচ বাড়ায় সব কিছুর দাম বেড়ে যাবে, এটা স্বাভাবিক। তাই কোভিড উত্তরকালে সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবের যে সংগ্রাম করছিলেন মূল্য বাড়ার ফলে তা ব্যাপকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হবে। গতকাল শনিবার ভোরের কাগজকে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শামসুল হক বলেন, গণপরিবহনের সঙ্গে জ¦ালানি তেল সরাসরি যুক্ত। সেই সঙ্গে কোভিড উত্তরকালে পরিবহন সেক্টরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের ইনসেনটিভ দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু এই সেক্টর তা পায়নি। সে কারণে জ¦ালানি তেলের দাম বাড়ানোর ফলে তাদের কাছে এবং এমনকি জনগণের কাছে সরকারের কিছুটা নেতিবাচক বার্তা পৌঁছে গেছে। একই সঙ্গে দেশজুড়ে কোভিড উত্তরকালে সরকারি চাকরির পরীক্ষা, বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা যাতায়াতের সমস্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- যা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। একই সঙ্গে পরিবহন ব্যয় বাড়ার ফলে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। এতে জণগণের দুর্ভোগ আরো এক ধাপ বাড়বে।
তিনি বলেন, যদি সরকার ও সংশ্লিষ্ট সেক্টরগুলো আগে থেকে পরিবহন সেক্টরের সঙ্গে আলোচনা করে তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিত তাহলে জনগণের ভোগান্তি কিছুটা কম হতো। কিন্তু তা না করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির মতো একটা সমস্যা তৈরি করা একেবারেই কাম্য ছিল না। শুধু তেলের দাম বাড়িয়ে সরকারের আয় বাড়াব- অন্য কোনো কিছু থেকে কি করা যেত না? এখানে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে আরো বেশি দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। জ¦ালানি তেল সরাসরি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
তিনি জানান, এখন ভোগান্তির পরে সরকার পরিবহন সেক্টরের সঙ্গে বসে সমাধানের পথ খুঁজতে চাইছে। সেটা কি আগেই করা যেত না? তাহলে জনগণও বুঝত, কি হতে চলেছে, তারাও প্রস্তুতি নিতে পারত।
ড. শামসুল হক বলেন, একই সঙ্গে পরিবহন সেক্টরের মালিকরা জনদুর্ভোগ তৈরি করে যেভাবে তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করছে, তাও অপ্রত্যাশিত-অনাকাক্সিক্ষত। আমাদের পরিবহন সেক্টর উচ্ছৃঙ্খল, পেশিনির্ভর। এসব জেনেও তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে তড়িঘড়ি করে আধাঘণ্টার মধ্যে জ¦ালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া কতটা সমুচিত হয়েছে তা ভাবতে হবে।
তিনি বলেন, এটা আমজনতার একটা ট্রান্সপোর্ট সেক্টর। এটা সরাসরি অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত। তাই জ¦ালানি তেলের দাম বাড়ানোর আগে কিছু হোম ওয়ার্ক বা আলোচনা পর্যালোচনা করা দরকার ছিল, তা না করে কোনো পরিশ্রম ছাড়াই রাতারাতি দাম বাড়ানোর ঘোষণা সরকারের পরিপক্কতার অভাব। সুষ্ঠু পরিকল্পনার কোনো রকম ছাপ এখানে দেখা যায়নি। এর ফলে সাধারণ জনগণ যারা কর্মহীন, দরিদ্র থেকে আরো দরিদ্র হয়েছে, সমস্যায় রয়েছে, জিনিসপত্র ও যাতায়াত ভাড়া বাড়লে তাদের কাছে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দেবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়