এএসপি আনিসুল হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক

পরের সংবাদ

আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : ছয় মাস ধরে বিকল পানির পাম্প, রোগী ও স্বজনরা বিপাকে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানি সরবরাহের মূল পাম্পটি ৬ মাস ধরে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী, চিকিৎসক, নার্স ও অন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন। অপরদিকে, হাসপাতালে করোনা টিকা ও ভ্যাকসিন নিতে আসা নারী-পুরুষরাও পর্যাপ্ত পানির অভাবে টয়লেট ব্যবহার করতে পারছেন না ভুক্তভাগীরা।
জানা গেছে, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানি সরবরাহের মূল পাম্পটি গত এপ্রিল মাসে বিকল হয়ে যায়। বেশ কিছুদিন হাসপাতালে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসক ডা. আবদুল মুনয়েম সাদ নিজ উদ্যোগে হাসপাতাল মসজিদের সামনের গভীর নলকূপ থেকে সংযোগ দিয়ে স্বল্প আকারে হাসপাতালে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। বর্তমানে হাসপাতালে অর্ধশতাধিক রোগী ভর্তি থাকলেও সামান্য পানিতে রোগী এবং তাদের সঙ্গে থাকা স্বজনরা গোসল ও শৌচাগার করতে সমস্যা হচ্ছে। প্রতিদিন রোগীর স্বজনরা বাহির থেকে পানি এনে গোসলসহ জরুরি কাজ সারছেন।
অপরদিকে, হাসপাতালের চারটি আবাসিক কোয়ার্টারে থাকা চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচা
রীরাও ভোগান্তিতে রয়েছেন। পর্যাপ্ত পানির অভাবে তারা তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় ও সাংসারিক কাজকর্ম করতে পারছেন না।
সম্প্রতি সরজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, পর্যাপ্ত পানি না থাকায় হাসপাতালের বাথরুম ও টয়লেট থেকে দুর্গন্ধ বেরুচ্ছে। করোনা টিকা নিতে আসা নারী ও পুরুষরা দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় আবার ফিরে আসছেন।
হাসপাতালে ভর্তি রোগী রাশেদা বেগম বলেন, পর্যাপ্ত পানি না থাকায় হাসপাতালের টয়লেট ও বাথরুমগুলো থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ না থাকায় আমি এবং সঙ্গে থাকা স্বজনদের গোসল ও শৌচাগার করতে সমস্যা হচ্ছে।
আরেক ভর্তি রোগী সাইফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের টয়লেট ও বাথরুমে সরবরাহ করা পানিতে গোসল ও শৌচাগার করতে সমস্যা হয়। তাই প্রতিদিন বাহির থেকে বালতিতে পানি এনে জরুরি কাজে ব্যবহার করতে হচ্ছে। করোনা টিকা নিতে আসা মোস্তাফিজুর রহমান ও রাবেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, টয়লেট ও বাথরুমে পানি না থাকায় দুর্গন্ধে তা ব্যবহার না করে ফিরে আসতে হয়।
হাসপাতালের কোয়ার্টারে বসবাসরত নার্স রেবা রানী ও ইতি মৃধা জানান, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের পানির পাম্পটি অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় তারা নিয়মিত পানি পাচ্ছেন না। বিকল্প পন্থায় যে পানি সরবরাহ করা হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ওই পানি দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও সাংসারিক কাজকর্ম সম্ভব হচ্ছে না। বাহিরে থেকে পানি এনে কাজকর্ম করতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (পটুয়াখালী) উপসহকারী প্রকৌশলী দেবব্রত হালদার বলেন, আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত পাম্পের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পুরনো পাম্প দিয়ে আর পানি উঠছে না। হাসপাতালে পানির সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য ওখানে একটি নতুন পানির পাম্প স্থাপন করতে হবে। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মুনয়েম সাদ বলেন, ৬ মাস ধরে পানির পাম্পটি বিকল হয়ে পড়ে থাকায় হাসপাতালে পানি সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিকল্প হিসেবে হাসপাতাল মসজিদের সামনের নলকূল থেকে সংযোগ দিয়ে স্বল্প আকারে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি। সেটিও কখন বন্ধ হয়ে যায় তা বলা যাচ্ছে না।
বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, বিষয়টি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। আশা করি, দ্রুত তারা এ সমস্যাটির সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়