দেশে ২ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮৪৬

আগের সংবাদ

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সেমিতে অস্ট্রেলিয়া

পরের সংবাদ

রংপুরে ইঁদুর নিধনে জনপ্রিয় চোঙা ফাঁদ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হাসান গোর্কি, রংপুর থেকে : মাঠের ফসল খেয়ে দাঁপিয়ে বেড়ানো ইঁদুরের কারণেই কাক্সিক্ষত উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা। সময়মতো আমন ধানে ভরছে না তাদের গোলা। ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ঠ সবাই। তবে দিন দিন রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলায় ইঁদুর নিধনে সচেতনতা বাড়ছে। গেল কয়েক বছর এ অঞ্চলে আমনের ক্ষেতে বাঁশ দিয়ে তৈরি ‘চোঙা ফাঁদ’ পদ্ধতি কৃষকদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে।
জেলার পীরগাছা উপজেলার পারুল, ইটাকুমারী, অন্নদানগর, ছাওলা, তাম্বুলপুর ও কান্দিসহ বিভিন্ন এলাকায় মাঠের পর মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। বেড়ে ওঠা ধান গাছগুলো কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে ইঁদুর। ওই জমিতে ধান গাছগুলো হলুদ বর্ণ ধারণ করে মরে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা ইঁদুর নিধনে জিংক পাউডার, গ্যাস ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন বিষ ব্যবহার করেও তেমন সুফল পাচ্ছেন না। ফলে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে বাঁশের সাহায্যে চোঙ্গা ফাঁদ তৈরি করেন। তারা রাতে ধানক্ষেতে এ চোঙা ফাঁদ পেতে ইঁদুর নিধনের চেষ্টা করছেন। উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের জগজীবন গ্রামের কৃষক নুর হোসেন বলেন, আগে গ্রামের কৃষকরা ইঁদুরের যন্ত্রণায় অসহায় হয়ে পড়েছিল। এ বছর চোঙা ফাঁদ ব্যবহার করায় ইঁদুরের উপদ্রব অনেক কমেছে। তাম্বুলপুর ইউনিয়নের প্রতিপাল বগুড়াপাড়া গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন এই চোঙ্গা ফাঁদে প্রতিদিন অন্তত ১০-১৫টি ইঁদুর মারা পড়ছে বলে জানান। চোঙ্গা ফাঁদ তৈরিতে খরচ নেই বললেই চলে। গ্রামের অন্য কৃষকরাও এটি ব্যবহার করছেন।
জানা গেছে, ইঁদুর নিধনে কৃষক থেকে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। প্রয়োগ করা হচ্ছে বিভিন্ন ফাঁদ আর কৌশল। এবার আমন মৌসুমে রংপুর কৃষি অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ১১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৬টি ইঁদুর নিধন করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, আমন মৌসুমে রংপুরেই ৭ লাখ ২৮ হাজার ২৮২টি ইঁদুর নিধন করা হয়েছে। এই অঞ্চলের পাঁচ জেলার মধ্যে রংপুরে সবচেয়ে বেশি ইঁদুর নিধন হয়েছে। এছাড়া গাইবান্ধা জেলায় ১ লাখ ৮ হাজার ২৯০, কুড়িগ্রামে ৯৮ হাজার ৭৮টি, লালমনিরহাটে ৭৬ হাজার ১৫৬টি এবং নীলফামারীতে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৬০টি ইঁদুর নিধন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সাল থেকে সরকারিভাবে দেশে ইঁদুর নিধন অভিযান শুরু হয়েছে। কিন্তু কার্যকরভাবে ইঁদুর নিধন করা সম্ভব না হওয়ায় প্রতি বছর আশানুরূপ ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক। ফলে মোট উৎপাদনের বিরাট একটি অংশ ইঁদুরের পেটে চলে যাচ্ছে।
রংপুর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় প্রায় ছয় লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ শুধু আমন মৌসুমে মোট উৎপাদনের ৬ শতাংশ ইঁদুরের খাবারে পরিণত হয়। এভাবে প্রতি মৌসুমে গমের মোট উৎপাদনের ১০ শতাংশ, আলুর ৬ শতাংশ, শাকসবজির ৫ শতাংশ, নারকেলের ১০ শতাংশ ও আনারসের ১০ শতাংশ ফলন খেয়ে ফেলে ইঁদুর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়