দেশে ২ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮৪৬

আগের সংবাদ

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সেমিতে অস্ট্রেলিয়া

পরের সংবাদ

ব্যর্থ মিশন শেষে দেশে টাইগাররা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : এবার সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসরে ব্যাট-বল হাতে মাঠ দাঁপিয়ে বেড়াবে টাইগাররা, এমন স¦প্ন দেখেছিলেন ভক্তরা। কিন্তু তাদের হতাশ করেছেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সুপার টুয়েলভে ৫ ম্যাচ খেলে পাঁচটিতেই হেরেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের এই বিশ্বকাপ কেটেছে দুঃস্বপ্নের মতো। বিশ্বকাপ মঞ্চ থেকে হতাশার এক মিশন শেষ করে গতকাল দেশে ফিরছে টাইগাররা। তারা দুই ভাগে দেশে ফিরবেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথম ধাপে ঢাকায় পা রাখেন সাত ক্রিকেটার- শরিফুল ইসলাম, নাইম শেখ, নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, আফিফ হোসেন ও শামীম পাটোয়ারী। তাদের সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী ও সিনিয়র মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম। আর ছুটি কাটাতে দুবাইয়ে আছেন চারজন ক্রিকেটার- মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস ও তাসকিন আহমেদ। ছুটিতে আছেন রাসেল ডমিঙ্গোসহ কোচিং স্টাফরাও। তাদের সবার ফেরার কথা রয়েছে ১১ নভেম্বর। দলের সঙ্গে থাকা নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সকাল ও বিকালে দুটি ফ্লাইটে ভাগ হয়ে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর, লিটন ও তাসকিন ছুটিতে আছেন। তাদের সঙ্গে কোচরাও ছুটিতে আছেন। তাদের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশে ফেরার কথা রয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম জানিয়েছেন, দলের সঙ্গে আসছেন না চার ক্রিকেটার। তারা হলেন- অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস ও তাসকিন আহমেদ।
এই চার ক্রিকেটার দুবাইয়ে তাদের পরিবারের সঙ্গে কয়েক দিন ছুটি কাটাবেন। পাকিস্তান সিরিজ সামনে রেখে ১২ নভেম্বর থেকে অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা। এর আগেই দেশে ফিরবেন তারা।
বিশ্বকাপে ব্যর্থ মিশন শেষে আগামী ১৯ নভেম্বর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এবং দুই টেস্ট সিরিজও খেলবে টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবার সুপার টুয়েলভে উঠে স্মরণকালের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে বাংলাদেশ দল। দুটি ম্যাচে অলআউট হয়েছে একশর নিচে। দারুণ ফর্মে থাকা পাকিস্তানকে ঘরের মাঠে মোকাবেলা করা হবে টাইগারদের জন্য আরেক কঠিন পরীক্ষা।
ঘরের মাঠে কেমন লড়াই করবে মুশফিক-তাসকিনরা, তা দেখতে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন ভক্তরা। তবে বিশ্বকাপের মূল লড়াইয়ে শুরু থেকে খেই হারায় টাইগারররা। কোনো ম্যাচ না জিতে সুপার টুয়েলভ শেষ করেছে তারা। তবে মাঠের পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই হলেও আইসিসির কোষাগার থেকে দেড় লাখ ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ। আইসিসির আগের ঘোষণা অনুযায়ী, সুপার টুয়েলভ থেকে বাদ পড়ায় প্রাইজমানি হিসেবে বাংলাদেশ পাচ্ছে ৭০ হাজার ডলার। এছাড়া প্রাথমিক রাউন্ডে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে বোনাস হিসেবে প্রতি ম্যাচে ৪০ হাজার ডলার করে মোট ৮০ হাজার ডলার পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। সব মিলিয়ে অঙ্কটা দাঁড়ায় দেড় লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় অঙ্কটা ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
এদিকে টাইগারদের এমন ভরাডুবির পর চুপ থাকতে পারেনি সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। কারণ এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তরুণ ও সেরা দল নিয়ে খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু এবারও শূন্য হাতেই ফিরতে হচ্ছে টাইগারদের। গত ছয় আসরে লড়াই করলেও এবার দায়সারা ক্রিকেট খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকরা। এক বছরের মধ্যে আরেকটি বিশ্বকাপ খেলতে যাবে টাইগারররা। সেই বিশ্বকাপ মাথায় রেখে সঠিক পরিকল্পনা, পরিচর্যার মাধ্যমে দলকে তৈরি করা উচিত বলে মনে করেন মাশরাফি। ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসের শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশ যে ঢংয়ে হেরেছে, তাতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের দায় এড়ানোর উপায় নেই। এমন অবস্থায় দলের পাশে দাঁড়ানোর কাজটাও বেশ কঠিন।
নড়াইল এক্সপ্রেসের ভাষ্য, আরো একটি বিশ্বকাপ শেষ হলো। ৮ ম্যাচ খেলেছি, ২টি জয়, ৬টি হার। প্রথমেই বলে নেই, ক্রিকেটারদের দায় কোনোভাবেই এড়ানোর উপায় নেই। বিশেষ করে, যেভাবে আমরা হেরেছি। ধৈর্য ধরে সঠিক প্রক্রিয়াতে থাকাই এখন দলের একমাত্র কর্তব্য। দল যে শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াবে, তা নিয়েও কোনো প্রকার সন্দেহ নেই বাংলাদেশি এ পেসারের। মাশরাফি লিখলেন, আমি বিশ্বাস করি, ওরা হয়তো খুব দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে। ঠিক এই মুহূর্তে ক্রিকেটারদের উচিত ধৈর্য ধরা এবং সঠিক প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা। কোনো সমালোচনার জবাব দেয়া উচিত নয়। আশা করি, তারা বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারবে এবং সঠিক কাজটি করবে। যদি দায়টা কেবল ক্রিকেটারদের ঘাড়েই বর্তায়, তাহলে দেশের ক্রিকেটের জন্য আরো খারাপ সময়ও অপেক্ষা করছে। বললেন, কিছু ব্যাপার মেলানো প্রয়োজন। সেটা হলো, খারাপ হওয়ার প্রথম দায় অবশ্যই ক্রিকেটারদের। এরপর আর কি কারো দায় নেই? শুধু ক্রিকেটারদের ঘাড়ে চাপিয়ে যদি শেষ করেন, তাহলে মনে রাখবেন, আরো খারাপ সময় অপেক্ষা করছে। প্রমাণ তো আগেও দেখা গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়