১০ সরকারি ব্যাংকে নতুন ২০ ডিএমডি

আগের সংবাদ

মাসসেরার দৌড়ে সাকিব

পরের সংবাদ

লঙ্কা বধে মরিয়া ক্যারিবীয়রা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : সুপার টুয়েলভের গ্রুপ-১ ইতোমধ্যে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠার সম্ভাবনা আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার। আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ রাত ৮টায় শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগে চার ম্যাচের তিন ম্যাচ হেরে সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গেছে লঙ্কানরা।
গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে চলতি আসরটা খুব বাজেভাবে শুরু করেছে তারা। সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচেই তারা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৫ রানে গুঁড়িয়ে যায়, হারে ৬ উইকেটের ব্যবধানে। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারে ৮ উইকেটের ব্যবধানে। তৃতীয় ম্যাচে ঘুড়ে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যারিবীয়রা জয় তুলে নেয় ৩ রানের ব্যবধানে। ফলে সেমিফাইনাল মিশনের স্বপ্ন এখনো বেঁচে আছে তাদের।
গ্রুপ-১ এ ৪ ম্যাচের সবকটিতে জয় নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড। দক্ষিণ আফ্রিকার ৪ ম্যাচের ৩টিতে জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে টেবিলে দুইয়ে। ৩ ম্যাচে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে অস্ট্রেলিয়া। ৩ ম্যাচে এক জয় ক্যারিবীয়দের। গ্রুপের অন্য দুই দল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার এক ম্যাচ বাকি থাকলেও সেমিফাইনালের পথ তাদের জন্য বন্ধ। ৩ ম্যাচের একটিতে জয় পাওয়া উইন্ডিজ, বাকি ২ ম্যাচে জয় পেলে সেমিফাইনালে পৌঁছাতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে যে সমীকরণটি দাঁড়ায়, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার হার এবং নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো। তার আগে অবশ্যই শ্রীলঙ্কাকে হারাতে হবে। অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতলে, দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারলে, উইন্ডিজ শেষ দুই ম্যাচ জিতলে; তিন দলেরই পয়েন্ট হবে ৬। তাই সেমিফাইনালে যেতে ক্যারিবীয়দের শুধু জয় নয়, বড় ব্যবধানে জিততে হবে।
এদিকে সুপার টুয়েলভের যাত্রাটা ভালোভাবেই শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশকে ৫ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের আধিপত্যের ইঙ্গিত দিয়েছিল আসালাঙ্কা, রাজাপাকসেরা। কিন্তু পরপর তিন ম্যাচে হেরে সেমিফাইনালের যাত্রা থেমে গেছে তাদের। তবে আসরে তাদের পারফরম্যান্স খুব একটা হতাশ করেনি সমর্থকদের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারলেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রায় জয় তুলে নিচ্ছিল লঙ্কানরা। কিন্তু ডেভিড মিলার ও কাগিসো রাবাডার শেষ দিকের ব্যাটিং তাণ্ডবে ১ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় প্রোটিয়ারা। নিজেদের চতুর্থরা ম্যাচে লঙ্কানরা প্রথমে ইংলিশদের বিপক্ষে লড়াই চালালেও শেষ পর্যন্ত ২৬ রানে হারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটি তাদের জন্য শুধুই নিয়ম রক্ষার। তবে গেইলদের জন্য বাঁচা মরার লড়াই।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে দেখা হয়েছে সাতবার। এর মধ্যে পাঁচবারই দাপট দেখিয়ে জয় তুলে নিয়েছে লঙ্কানরা। দুদলের মধ্যে প্রথম দেখা হয় ২০০৯ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ট্রেন্ট ব্রিজে। সে ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দিলকারতেœ দিলশানের ৭৪ রান ও সানথ জয়াসুরিয়ার ৮১ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯২ রান তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৭৭ রানে থামে ক্যারিবীয়দের ইনিংস। দ্বিতীয় দেখায় ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। একই আসরে দ্বিতীয় বার দুদলের দেখা হয় সেমিফাইনালে। দিলশানের ৯৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে সেদিন লঙ্কানরা ১৫৮ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১০১ রানে গুঁড়িয়ে যায় ক্যারিবীয় ইনিংস। ২০১০ সালে তৃতীয় দেখায় গ্রুপপর্বে উইন্ডিজ তাদের ঘরের মাঠে হারে ৫৭ রানের বড় ব্যবধানে। জয়াবর্ধনে সে ম্যাচে ৯৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। ২০১২ সালে ফের দুদলের দুবার দেখা হয়। এবারো গ্রুপপর্বের ম্যাচে দাপট দেখিয়ে ৯ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। একই আসরের ফাইনালে উইন্ডিজ সব প্রতিশোধ দ্বিগুণ করে ফিরিয়ে দেন। জয় তুলে নেন ৩৬ রানের ব্যবধানে। এরপর ২০১৪ সালে সেমিফাইনালে ক্যারিবীয়দের ২৭ রানে হারিয়ে আসর ছাড়া করেন লঙ্কানরা। ২০১৬ সালে গ্রুপপর্বের ম্যাচে ৭ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় উইন্ডিজ।
সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুদলের দেখা হয়েছে ১৪ বার। বিশ্বকাপে লঙ্কানরা এগিয়ে থাকলেও ওই ম্যাচগুলোতে দুদলের সাফল্যের পাল্লা সমানে সমান। অর্থাৎ ৭ ম্যাচে শ্রীলঙ্কা জিতেছে বাকি ৭ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এবং র‌্যাঙ্কিং বিচারে বেশ এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান আটে, দুই ধাপ পিছিয়ে শ্রীলঙ্কা দশে। আবর বিশ্বকাপে যেখানে লঙ্কানদের বাছাইপর্ব খেলে মূলপর্বে উতরাতে হয়েছে সেখানে ক্যারিবীয়রা খেলছে সরাসরি মূলপর্বে। শুধু পারফরম্যান্সে নয় অভিজ্ঞতায়ও ক্যারিবীয়দের চেয়ে পিছিয়ে লঙ্কানরা। এবারের বিশ্বকাপে বলা যায় একেবারে নতুন দল নিয়ে মাঠে নেমেছে সাঙ্গাকারার উত্তরসূরিরা।
নিঃসন্দেহে আজকের ম্যাচে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ম্যাচ ঘোরানোর দারুণ ক্ষমতা আছে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদেরও। আসালাঙ্কা, রাজাপাকসেরা হতে পারেন বিপজ্জনক। তাছাড়া চামিরা করুনারতেœ, লাহিরু কুমারা, থিকশানাদের বলে দিশোরা হয়ে উঠতে পারে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা। পাল্টা জবাব দিতে পারেন ক্যারিবীয় দানব গেইল, আন্দ্রে রাসেল, পোলার্ডরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়