১০ সরকারি ব্যাংকে নতুন ২০ ডিএমডি

আগের সংবাদ

মাসসেরার দৌড়ে সাকিব

পরের সংবাদ

বার্সা-বায়ার্নের জয়ের রাতে ম্যানইউর ড্র

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : টান টান উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে বল পায়ে জাদু দেখালেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তার জোড়া গোলের সুবাদে নাটকীয় ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ২-২ গোলে ম্যাচ ড্র করেছে আতালান্তার বিপক্ষে। গতকাল রাতে শুরুতে পিছিয়ে পড়ার পর রোনালদো গোলে সমতায় ফিরে ম্যানচেস্টার। এরপর তিনি ফের পিছিয়ে পড়া দলকে শেষে গিয়ে উপহার দিলেন আরেক গোল। ফলে ড্র করে মূল্যবান একটি পয়েন্ট তুলে স্বস্তি নিয়ে মাঠ থেকে ফেরেন ওলে গানার শোলজার শিষ্যরা। এখানে পয়েন্ট হারালেও গ্রুপের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ম্যানচেস্টার। চার ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট তাদের।
এদিকে বার্সেলোনা থেকে লিওনেল মেসি চলে যাওয়ার পর এখন সবচেয়ে বড় ভরসা আনসু ফাতি। এক কথায় বলা যায়, তিনি এখন বার্সার ত্রাণকর্তা। এমনকি গতকাল ফাতির একমাত্র গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ডায়নামো কিয়েভেরে বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় পেয়েছে কাতালান ক্লাবটি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টিকে থাকতে হলে বার্সেলোনার জন্য জয়টা বেশ প্রয়োজন ছিল। ডায়নাভো কিয়েভের বিপক্ষে নিজেদের মাঠে জয় এসেছিল। এবার প্রতিপক্ষের মাঠেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখল কাতালানরা।
এছাড়া অন্য ম্যাচে রবার্তো লেভানদোভস্কির হ্যাটট্রিকে বায়ার্ন মিউনিখ ৫-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বেনফিকাকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের শততম ম্যাচটাকে দারুণভাগে রাঙালেন রবের্ত লেভানদোভস্কি।
‘ই’-গ্রুপ বায়ার্ন মিউনিখ চার ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে। বার্সেলোনা সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। বেনফিকা ৪ ও ডায়নামো কিয়েভ ১ পয়েন্ট নিয়ে অবস্থান করছে।
এদিকে কয়েক দিন আগে ঘরের মাঠে দুই গোল হজমের পর দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছিল ম্যানচেস্টার। আতালান্তার বিপক্ষে এবার জয় না মিললেও হারের মুখ থেকে ঘুরে দাঁড়াল দলটি এবং নায়ক সেই রোনালদো। গতকাল বল দখলের মতো আক্রমণেও সমানে সমান লড়াই করেছে ম্যানচেস্টার-আতালান্তার। অল্প ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও স্কোরলাইনে অধিকাংশ সময় আধিপত্য তো স্বাগতিকদেরই ছিল। গোলের উদ্দেশ্যে তাদের ১০ শটের ৪টি ছিল লক্ষ্যে আর ১৩ শটের ৪টি। ম্যাচ শুরু হতেই ম্যানচেস্টার আক্রমণ করে। ১৯ সেকেন্ডের মাথায় রোনালদোর দূর থেকে নেয়া শটটি যদিও যায় গোলরক্ষক বরাবর। চতুর্থ মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল তারা। কিন্তু ম্যানচেস্টার মিডফিল্ডার স্কট ম্যাকটমিনের শট এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে দিক পাল্টে পোস্টে লেগে ফেরে। প্রথম দেখায় ৩০ মিনিটের মধ্যে দুবার ম্যানচেস্টার জালে বল পাঠানো আতালান্তা এবার দ্বাদশ মিনিটে এগিয়ে যায়। গোলটিতে অবশ্য পুরো দায় গোলরক্ষক দাভিদ দে হেয়ার। স্বাগতিক মিডফিল্ডার ইলিচিচের নিচু শট আয়ত্বে¡র মধ্যে থাকলেও ঝাঁপিয়ে ধরতে গিয়ে তালগোল পাকান তিনি।
চার মিনিট পরই পাল্টা আঘাত হানতে পারত ম্যানচেস্টার। তবে অ্যারন ওয়ান-বিসাকার ডি-বক্সে বাড়ানো থ্রæ বল ছুটে গিয়ে একটুর জন্য পায়ে নিতে পারেননি রোনালদো। এগিয়ে এসে বল নিয়ন্ত্রণে নেন গোলরক্ষক। এগিয়ে গিয়ে আতালান্তাও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। আক্রমণাত্মক ফুটবলের জন্য পরিচিত দলটি মাঝেমধ্যেই ভীতি ছড়াতে থাকে ম্যানচেস্টার রক্ষণে। জমে ওঠা লড়াইয়ে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে দারুণ পাসিং ফুটবলে সমতায় ফেলে ম্যানচেস্টার। ম্যাকটমিনের পাস ধরে ডান দিকে রোনালদোকে বাড়িয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন ব্রুনো ফের্নান্দেস। রোনালদো তার ডানে গ্রিনউডকে পাস দেন, তিনি আবার খুঁজে নেন ফের্নান্দেসকে। এরপর জাতীয় দল সতীর্থের ব্যাকহিলে বল পেয়ে নিচু শটে ঠিকানা খুঁজে নেন পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার। দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতে এগিয়েও যেতে পারত তারা। তবে ডি-বক্সে রোনালদোর পাস পেয়ে প্রতিপক্ষের পায়ে মেরে বসেন ফের্নান্দেস।
৫৬ মিনিটে ফের এগিয়ে যায় আতালান্তা। আবার পিছিয়ে পড়ে যেন জ্বলে ওঠে ম্যানচেস্টার। তাদের আক্রমণ ও দ্রুত বল দখলে নেয়ার প্রচেষ্টাসহ সবকিছুতে মরিয়া ভাব ফুটে উঠছিল। দুবারই জাপাতার চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়; প্রথমবার তার হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পাঁচ মিনিট পর নিচু শট ঠেকিয়ে দেন দে হেয়া। এরপরই যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে রোনালদোর ওই গোল। ডি-বক্সের মধ্যে থেকে গ্রিনউডের কাটব্যাক বাইরে পেয়ে জোরালো কোনাকুনি ভলিতে দলকে উল্লাসে ভাসান পর্তুগিজ তারকা।

এছাড়া কিয়েভের মাঠে বল দখলে এগিয়ে থেকে আক্রমণও করেছে বার্সেলোনা। কিন্তু প্রথমার্ধে কোনো লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। ম্যাচ শুরুর ৪ মিনিটে বার্সেলোনা গোল পেতে পারত। কিন্তু মেমফিস দিপাইয়ের বাঁ পায়ের শট ডিফেন্ডার প্রতিহত করেন। ৬ মিনিট পর মেমফিস দিপাইয়ের পাসে আনসু ফাতি ডান পায়ে শট নিলেও আবারো ডিফেন্ডার গোল হতে দেয়নি। ২২ মিনিটে আনসু ফাতির পাসে বাসকুয়েটসের বক্সের বাইর থেকে নেওয়া শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। এরপর ডায়নামো কিয়েভ আক্রমণ করেন। কিন্তু সফল হতে পারেনি। ২৪ মিনিটে মাইকোলা শাপারেনেকার বা পায়ের শট বাইরে দিয়ে গেলে সমর্থকদের হতাশ হতে হয়। পরের মিনিটে কার্লোস দ্য পিনার শট প্রতিহত করেন গোলকিপার। ৩ মিনিট পর ফের শাপারেনেকার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বিরতির ৩ মিনিট আগে বার্সেলোনা সুযোগ নষ্ট করে। নিকোলাস গনজালেসের হেড জালে জড়ানোর আগে ডিফেন্ডার প্রতিহত করেন। বিরতির পর আক্রমণ অব্যাহত রেখে বার্সেলোনা গোল করতে সমর্থ হয়। ৭০ মিনিটে বক্সের ভেতরে থেকে আনসু ফাতি গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। কিন্তু গোল শোধে চেষ্টা করেও ডায়নাভো ম্যাচে সমতা আনতে পারেনি। নতুন কোচের অধীনে লা লিগায় আগের ম্যাচে ড্র হলেও এবার জয়ের মুখ দেখলো কাতালানরা।
এদিকে অন্য ম্যাচে বল দখল কিংবা আক্রমণ, পুরো ম্যাচেই আধিপত্য ছিল বায়ার্নের। তাদের ২৪ শটের ১২টি ছিল লক্ষ্যে। আর বেনফিকার সাত শটের দুটি লক্ষ্যে। ম্যাচের ২৬ মিনিটে হেডে গোলের সূচনা করেন লেভানদোভস্কি। ছয় মিনিট পর তার বাড়ানো বল থেকেই ব্যাকহিলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সের্গে জিনাব্রি। ৩৮ মিনিটে রদ্রিগেস দ্য সিলভা স্কোরলাইন ২-১ করেন। বিরতির ঠিক আগে লেভানদোভস্কি অবশ্য ব্যবধান আবারো বাড়িয়ে নিতে পারতেন। কিন্তু তার দুর্বল স্পট কিক সহজেই ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। বিরতির পর ম্যাচ শুরু হতেই হাফ ভলিতে ব্যবধানটাকে দুই গোলে বাড়িয়ে নেন লেরয় সানে। আর ম্যাচের ঘড়ির কাটায় ঠিক এক ঘণ্টা পর চিপ শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন লেভানদোভস্কি। ৭৪ মিনিটে দারউইন নুনেস আবারো ব্যবধান কমান। তবে তাতে ম্যাচে কোনো বাড়তি নাটকীয়তা আসেনি।
এর ১০ মিনিট পরই হ্যাটট্রিক পূরণ করেন লেভানদোভস্কি। ইউরোপ সেরার মঞ্চে পোলিশ তারকার গোল হলো ৮১টি, ৪টি হ্যাটট্রিকসহ।
চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বায়ার্নের হয়ে ১৮ ম্যাচে ২২ গোল করলেন তিনি। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে করলেন সর্বোচ্চ ৮টি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়