নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে এক নারীকে রিসোর্টে এনে আটকে রেখে ধর্ষণ মামলায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের বিচারক ছুটিতে থাকায় নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আনিসুর রহমানের আদালতে এ অভিযোগ গঠন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবুদ্দিন আহমেদ ধর্ষণ মামলার অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন। এ সময় আদালতে কাঠগড়ায় আসামির উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন করা হয়।
গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টের কথিত স্ত্রী পরিচয় দিয়ে জান্নাত আরা ঝর্নাকে নিয়ে এক কক্ষে অবস্থান করেন মামুনুল। খবর পেয়ে স্থানীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নারীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে হেফাজতের ইসলামের কর্মীরা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে পুলিশ হেফাজত থেকে মাওলানা মামুনুল হকসহ ওই নারীকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
পরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, যুবলীগ সভাপতির বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে বেপরোয়া ভাঙচুর চালান। হামলা হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুই শতাধিক যানবাহনেও। এ ঘটনায় সহিংসতার অভিযোগ এনে পুলিশ ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা বাদী হয়ে মামুনুল হককে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেন।
রিসোর্টকাণ্ডের দিন সঙ্গিনীকে মামুনুল দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করলেও তার দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সহিংসতার মামলায় ১৮ এপ্রিল গ্রেপ্তারের পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন জান্নাত আরা ঝর্না।
তিনি অভিযোগ করেন, মামুনুল বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েছেন।
ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁও থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সফিকুল ইসলাম তদন্ত শেষ করে গত ১০ সেপ্টেম্বর আদালতে মাওলানা মামুনুল হককে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত গতকাল শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এর আগে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি কাশিমপুর কারাগার থেকে সকাল ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। পরে আদালতের গারদখানায় রাখা হয় মামুনুল হককে। আদালতে তোলা হলে অভিযোগ গঠনের পর আবারো কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।