১০ সরকারি ব্যাংকে নতুন ২০ ডিএমডি

আগের সংবাদ

মাসসেরার দৌড়ে সাকিব

পরের সংবাদ

অজিদের জন্য হুমকি টাইগাররা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সুপার টুয়েলভে টানা চার ম্যাচ হেরে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। তবে এখনো আসরের একটি ম্যাচ বাকি আছে তাদের। দেশে ফেরার আগে এই ম্যাচে জয় নিয়েই ফিরতে চান লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এদিকে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের স্বপ্ন বেঁচে আছে অস্ট্রেলিয়ার। বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে হারাতে পারলে তারা পৌঁছে যাবে সেমিফাইনালে। একই সঙ্গে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার হারের প্রার্থনাও করতে হবে তাদের। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে হারলে সেমিফাইনাল যাত্রায় পিছিয়ে পড়বে অজিরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বিকাল ৪টায় অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে টাইগাররা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি হয়েছে চারবার। একটিতেও জয় পায়নি টাইগাররা। ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাপটাউনে প্রথম দেখায় টাইগারদের ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় অজিরা।
২০১০ সালে দ্বিতীয় দেখায় তাদের বিপক্ষে ২৭ রানে হারে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে বাংলাদেশকে ঘরের মাটিতে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারায় অ্যারন ফিঞ্চরা। ২০১৬ সালে সাকিবরা হারে ৩ উইকেটের ব্যবধানে।
সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের দেখা হয়েছে নয়বার। চলতি বছরে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাদে বাকি চার ম্যাচ ছিল বিশ্বকাপে।
আর চলতি বছরের আগস্টে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবার বিশ্বকাপের বাইরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে। ঘরের মাঠে অজিদের নাস্তানাবুদ করে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ।
বড় ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও বাংলাদেশের মন্থর পিচ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ঘরের মাঠে সুবিধামতো পিচ বানিয়ে ফায়দা নিলেও বাংলাদেশ একই পিচ পাবে না দুবাই স্টেডিয়ামে। ফলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এ ম্যাচে টাইগাররা জ¦লে উঠবে, তা ঠিক বলা যাচ্ছে না। তার ওপর সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের যে কঠিন দশা, তাতে মিরপুরের প্রতিশোধ সুদে আসলে পরিশোধ করতে প্রস্তুত অজিরা।
ম্যাচের আগের দিনের সংবাদ সম্মেলনে অজি স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগারের কণ্ঠেও শোনা গেল সে রকম বার্তাই। এবারের খেলা যে অন্য কন্ডিশনে তা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই কন্ডিশন এখানে নেই বলে মনে হচ্ছে। বাংলাদেশে যেমনটা দেখেছি, আমার সন্দেহ আছে ততটা স্পিনবান্ধব উইকেট এটা কিনা।’ মন্থর, নিচু আর টার্নিং উইকেটে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এ বিষয়ে অ্যাগার বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো ওই কন্ডিশনে আমাদের অনেকে সম্ভবত প্রথমবার খেলেছিল। আমরা বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম, সত্যি কথা বলতে ওই কন্ডিশনে বাংলাদেশ অসাধারণ খেলেছিল।
তারা ঘরের মাঠে ভালো খেলেছে এটা আমাদের কাছে আশ্চর্যের কিছু নয়, কিন্তু এখন ভিন্ন ব্যাপার। আমাদের দল এখন আলাদা এবং উইকেট বাংলাদেশের মতো আচরণ করছে না। আমরা দেখব কী হয়। আমাদের জিততে হবে এবং জেতার জন্যই ছেলেরা খেলবে। এটা হবে দারুণ ম্যাচ।’
তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে কোনো চিন্তা করছেন না দলীয় স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। বাংলাদেশ দল যে দুবাইয়ে মিরপুরের পিচ পাবে না, তা মনে করিয়ে দিয়ে অস্ট্রেলিয়া দলের এ গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার বলেন, ‘খুব সম্ভবত ঢাকার উইকেট আন্তর্জাতিক উইকেটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য। বিশেষ করে আমাদের বিপক্ষের ওই সিরিজের উইকেট। আমি মনে করি না যে দুবাইয়ে এতটা খারাপ উইকেট দেখতে পাব।’
এদিকে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না বাংলাদেশ। অজিদের কীভাবে মোকাবেলা করবে, সে প্রশ্ন সমর্থকদের। কদিন আগে টাইগার স্পিনার নাসুম আহমেদ জানান, তাদের দ্বারা হচ্ছে না। গত মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারের পর তাসকিন আহমেদ জানান, একশ দশ ভাগ দিয়েও সফলতার দেখা পাচ্ছেন না তারা। তাসকিনের দাবি, পুরো টুর্নামেন্টে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারেননি। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৬ উইকেটে হেরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাসকিন বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা এখনো আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। যেমন পারফর্ম করছি, তার চেয়েও আমরা ভালো দল। কিছু সহজ জয় আমরা হাতছাড়া করেছি, যা জেতা উচিত ছিল।’
সুপার টুয়েলভ পর্বে টানা চার ম্যাচে হার। যার দুটোতে জয়ের খুব কাছে ছিল বাংলাদেশ দল। শ্রীলঙ্কার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষের ম্যাচেও জয়ের পাল্লা ভারী ছিল। এবারের বিশ্বকাপে আর একটি ম্যাচ বাকি টাইগারদের।
নিজেদের শেষ ম্যাচে আজ অজিদের মুখোমুখি হবেন মাহমুদউল্লাহরা। ম্যাচটি জিতে দেশকে অন্তত একটি জয় উপহার দিতে চান তাসকিন। তাসকিন বলেন, ‘দুটি জেতা ম্যাচ জিততে পারলে অনেক কিছুই মনে হতো না। সহজ দুটি ম্যাচ হারায় সবকিছু আমাদের বিপক্ষে মনে হচ্ছে। ব্যাটিং ক্লিক করেনি কিছু ম্যাচে, এজন্য অনেক কিছু মনে হচ্ছে। যেটা চলে গেছে ওটা তো ফেরত আনতে পারব না।
সামনে একটা ম্যাচ আছে, যতটা ভালো খেলা যায়। দেশকে একটাও যদি জয় উপহার দিতে পারি। এটাই আমাদের জন্য অনেক। সামনের দিনগুলো যাতে ভালো যায়, সেই চেষ্টা করছি।’
বাংলাদেশ বিশ্বকাপ যেখানে শুরু করেছিল আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ের ছয়ে থেকে, সেখানে তিন ধাপ নেমে বাংলাদেশ অবস্থান করছে এখন র‌্যাঙ্কিংয়ের নয়ে। অন্যদিকে বিশ্বকাপ শুরুর আগে সাতে থাকা অজিরা এখন অবস্থান করছে আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ের ছয়ে।
র‌্যাঙ্কিং বা পরিসংখ্যান সব দিক দিয়েই বাংলাদেশের চেয়ে আজকের ম্যাচে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। তবে বাংলাদেশের জন্য এখনো অনুপ্রেরণা হয়ে আছে ঘরের মাঠে অজিদের ৪-১ ব্যবধানে হারানোর স্মৃতি। তবে বাংলাদেশের চিন্তার কারণ অজি ফাস্ট বোলার মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স ও জম হ্যাজেলউড এবং স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা ও অ্যাস্টন অ্যাগার।
অজিদের এই বোলিং মিশেলে ধসে যেতে পারে মুশফিকদের ব্যাটিং লাইনআপ। তাছাড়া অ্যারন ফিঞ্চ, জশ ইংলিশ, গেøন ম্যাক্সওয়েলরা ব্যাটিংয়ে দুর্ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন তাসকিনদের জন্য। এর বাইরে বাংলাদেশের চিন্তার বড় কারণ যেটি, ইনজুরিতে পড়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন সাকিব আল হাসান, নুরুল হাসান সোহান ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। বাংলাদেশের বড় অস্ত্র সাকিবকে ছাড়া অজি বধের মিশন রিয়াদের জন্য তাই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফিল্ডিংয়ের সময় হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে সাকিবের বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়ে যায়।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ খেলার পড়েই ইনজুরিতে পড়ে দেশে ফিরে আসেন টাইগার পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফ উদ্দিন। তিন টাইগারকে হারিয়ে শেষ ম্যাচে জয় নিয়ে দেশে ফেরা রীতিমতো দুঃসাধ্য অধিনায়ক রিয়াদের জন্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়