ডিএমপি কমিশনার : স্মার্টকার্ড লাইসেন্সের প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ থাকলে মামলা নয়

আগের সংবাদ

ইইউ-চীন-যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের অঙ্গীকার > ৫০ বছরেই ‘কার্বন নিরপেক্ষ’ : এক হাজার কোটি ডলার তহবিলের নিশ্চয়তা, উষ্ণতা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখা

পরের সংবাদ

১৭ নথি গায়েব : সিআইডির কব্জায় ঠিকাদারসহ তিন কর্মচারী

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েবের ঘটনা ছায়া তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ আলামত ও ক্লু পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের যোগসাজশে ঠিকাদার সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিয়েছে এসব নথি। মন্ত্রণালয়ের ৬ কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরো তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে সিআইডি। এছাড়া রাজশাহী থেকে এক ঠিকাদারকে ঢাকায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের ৯ জন কর্মচারী ও ১ জন ঠিকাদারকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
নতুন যে তিনজন কর্মচারীকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে তারা হলেন- অহিদ খান, সেলিম ও হাবিব। তাদের মধ্যে অহিদ খান মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। একই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সংশ্লিষ্ট নাসিমুল ইসলাম টোটন নামে এক ঠিকাদারকে গত সোমবার রাতে রাজশাহী থেকে ঢাকায় এনেছে সিআইডি। ওই ঠিকাদারের বাড়ি রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানার কেশবপুর এলাকায়। একই এলাকায় তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কেনাকাটার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গায়েব হওয়া নথির মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কেনাকাটা সংক্রান্ত নথিও আছে।
তবে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসাইন, বিশেষ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ও মুখপাত্র অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৮টা) বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি। তারা বলছেন, জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। প্রাপ্ততথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সিআইডি রাজশাহীর বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল জানান, নাসিমুল ইসলাম টোটন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঠিকাদারি করেন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১৭টি ফাইল গায়েবের ঘটনা তদন্ত করছে সিআইডি। ওই ঘটনার তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য টোটনকে ঢাকায় সিআইডির সদর দপ্তরে নেয়া হয়েছে। তাকে আটক বা গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এসব নথিতে অধিদপ্তরের কেনাকাটা সংক্রান্ত বিষয় ছিল। মন্ত্রণালয়ের মতো জায়গা থেকে নথি চুরির ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। মন্ত্রণালয়ের কারো সহায়তা ছাড়া এভাবে চুরি হতে পারে না। কেন মন্ত্রণালয়ের সিসিটিভি অকেজো ছিল তারও তদন্ত হওয়া দরকার। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে থেকে কীভাবে এসব নথি আলমারি থেকে খোয়া গেল তারও তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে ১৭টি নথি খোয়া যায়। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে মন্ত্রণালয়।
পুলিশ জানায়, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) শাহাদৎ হোসাইনের কক্ষের লাগোয়া ঘর থেকে নথিগুলো খোয়া যায়। শাহাদৎ হোসাইন সচিবালয়ের ৩ নম্বর ভবনের ২৯ নম্বর কক্ষে বসেন। পাশের লাগোয়া ঘরটিতে বসেন ক্রয় ও সংগ্রহ শাখা-২ এর সাঁটমুদ্রাক্ষরিক ও কম্পিউটার অপারেটর মো. জোসেফ সরদার ও আয়েশা সিদ্দিকা। ফাইলগুলো এই দুই কর্মীর কেবিনেটে ছিল। ফাইল খোয়া যাওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবারই পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিট সচিবালয়ে যায়। গত রবিবার সিআইডি ও শাহবাগ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারা ১১ জনের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে। ছয়জনকে নিজেদের জিম্মায় নেয়। তবে এখন পর্যন্ত কে, কেন এই নথিগুলো সরিয়েছে, সে সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নথি চুরির ঘটনায় অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) শাহ্ আলমের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এখন মামলা রুজু না হলেও জিডির সূত্রে ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে গত তিন দিন ধরে ৬ কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি। যে ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তারা হলেন- জোসেফ সরদার, আয়শা সিদ্দিকা, বাদল, বারী, মিন্টু ও ফয়সাল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়