কাগজ প্রতিবেদক : আজ ৩ নভেম্বর। বাঙালি জাতির জীবনে কলঙ্কময় জেলহত্যা দিবসের ৪৬ বছর আজ। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতির পিতার আজীবন রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকারী উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অর্থমন্ত্রী এম মুনসুর আলী, খাদ্য ও ত্রাণমন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাত্রিতে জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর খুনি মোশতাক সরকার কারান্তরালে এই জাতীয় চার নেতাকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। জাতীয় চার নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ও চেতনাকে নির্মূল করা। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ সুদীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম আর আত্মত্যাগের বিনিময়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্র এবং তাদের হত্যার রাজনীতিকে পরাজিত করেছে। আজ এ দেশের জনগণ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে ঐক্যবদ্ধভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে। প্রতিবারের ন্যায় এবারো আওয়ামী লীগ সমগ্র বাঙালি জাতির সঙ্গে সশ্রদ্ধচিত্তে যথাযথ মর্যাদা ও বেদনার সঙ্গে শোকাবহ এ দিবসটিকে স্মরণ করবে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে জেলহত্যা দিবসে সীমিত পরিসরে নানা কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে উপস্থিত থাকবেন।
আজকের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্য উদয় ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সংগঠনের সব স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৮টায় জাতির পিতার স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবে আওয়ামী লীগ। এছাড়াও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনসহ মহানগরের প্রতিটি শাখার নেতাকর্মীরা যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের কালরাতে নিহত সব শহীদ ও কারাগারে নির্মমভাবে নিহত জাতীয় নেতাদের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত। আর রাজশাহীতে জাতীয় নেতা শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১১টায় জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে দলের সব সাংগঠনিক জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন শাখা এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক ও সর্বস্তরের জনগণকে ৩ নভেম্বর যথাযথ মর্যাদা ও শোকাবহ পরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় জেলহত্যা দিবস পালনের বিনীত আহ্বান জানিয়েছেন।