ভিসি এয়ার মার্শাল নজরুল : ওবিই হচ্ছে জ্ঞানগর্ভ ও চিন্তা উদ্দীপক কর্মশালা

আগের সংবাদ

টানা ৪ জয়ে সেমিতে পাকিস্তান

পরের সংবাদ

সাম্প্রদায়িক সহিংসতাবিরোধী সমাবেশ : রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার দাবি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২, ২০২১ , ১২:৩৪ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : যতই সমালোচনা করা হোক না কেন, রাজনীতিকে সা¤প্রদায়িকতা মুক্ত করতে না পারলে প্রশাসন, সংস্কৃতি, অর্থনীতিসহ দেশের পুরো সমাজকাঠামো কখনোই অসা¤প্রদায়িক হতে পারবে না। গতকাল সোমবার সা¤প্রদায়িক সহিংসতাবিরোধী প্রতিবাদী সমাবেশে এ মন্তব্য করেন বক্তারা। ‘সা¤প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’ স্লোগানকে সামনে রেখে বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি (৬৮টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফরম) এ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশ থেকে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা; সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনাসহ এসব ঘটনা প্রতিরোধে ১২ দফা দাবি জানিয়েছে কমিটি।
বক্তারা বলেন, সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনাগুলো কেন বারবার ঘটছে তা খতিয়ে দেখা জরুরি। এই সহিংসতা প্রতিরোধ করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। সা¤প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়তে আইসিটির ৫৭ ধারা বাতিলের পাশাপাশি শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে। সব ধর্মের মানুষকে সমান মর্যাদা দিতে হবে, জনপ্রতিনিধি, জনগণ অসা¤প্রদায়িক হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এবং সা¤প্রদায়িক সহিংসতা চালাচ্ছে তাদের এ দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।
সমাবেশে উত্থাপন করা দাবিগুলো হলো- শারদীয় দুর্গোৎসবে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা-নির্যাতন এবং মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় অপরাধী ও ইন্ধনদাতাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা; সহিংসতার ঘটনায় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতার আওতায় আনা; সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণ দেয়া; সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাসমূহ ঘটানো হচ্ছে সে বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের

অপপ্রয়োগ বন্ধ করে সঠিক ও যথাযথ প্রয়োগ; ২০১৩-১৪ সালে সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে হামলাকারীদের ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বিচারের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল তা কার্যকর করা; রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা; ধর্মীয় সমাবেশ থেকে ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ এবং নারীর বিরুদ্ধে সব ধরনের অপপ্রচার বন্ধ করা; সব সম্প্রদায়ের মানুষের সহাবস্থান, সম্প্রীতি, শান্তি, সৌহার্দ্য রক্ষা ও বর্তমান নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতির অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে সরকার, প্রশাসন, সব গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা; দেশের যে কোনো স্থানে এ ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ; ’৭২-এর সংবিধানের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক চেতনার পুনপ্রতিষ্ঠা করা।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। সভার শুরুতে প্রতিবাদী গান পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। সভায় সংহতি জানান ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুদ্দীন আহমেদ মানিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিম, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সালমা আলী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য, হিন্দু-বৌদ্ধ-খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা কাজল দেবনাথ, স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার, আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা। ঘোষণা পাঠ করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নিনা গোস্বামী। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপপরিচালক শাহনাজ সুমী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়