ভিসি এয়ার মার্শাল নজরুল : ওবিই হচ্ছে জ্ঞানগর্ভ ও চিন্তা উদ্দীপক কর্মশালা

আগের সংবাদ

টানা ৪ জয়ে সেমিতে পাকিস্তান

পরের সংবাদ

মুখোমুখি সাংবাদিকরা : মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীকে বাঁচাতে মানববন্ধনে বাধা!

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, রাজশাহী : মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা বিকৃতিকারী রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেনকে অপসারণ ও শাস্তি দাবির মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হয়েছে। গত রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর রেলগেটে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সভাপতি রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে এ বাধা দেয়া হয়। এ সময় ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। বন্ধ হয়ে যায় সড়ক। সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
জানা গেছে, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেন নিজেকে ইতিহাসের শিক্ষক ও গবেষক দাবি করে মুজিববর্ষে প্রতিষ্ঠানটির একটি অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ইতিহাসের শিক্ষক ছিলাম এবং অনেক কিছু গবেষণা করেছি। গবেষণা করে জানতে পেরেছি, মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ৩০ লাখ নয়। শহীদ হয়েছেন ৩ লাখ। ৩-এর সাথে একটি শূন্য বাড়িয়ে বলা হয়।’
ওই অনুষ্ঠানে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ড. মোকবুল হোসেন ও সাংবাদিকসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। তার এমন বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে ও শাস্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দেয় জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ নামে উত্তরবঙ্গের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলেও তদন্ত রিপোর্ট ধাপাচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে।
এসবের পরিপ্রেক্ষিতে ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেয়ায় গত রবিবার সকালে নগরীর রেলগেটে মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেয় কয়েকটি সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠন। সেখানে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা ছাড়াও অংশ নেন বীর কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আইনজীবী। এ সময় অকস্মাৎ এসে মানববন্ধন করতে নিষেধ করেন আরইউজে সভাপতি রফিকুল ইসলাম। তখনই ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। মানববন্ধনে বক্তব্য দিতে থাকেন অতিথিরা। কিন্তু আরইউজে সভাপতি তার পক্ষের আরো কয়েকজন ঘটনাস্থলে ডাকেন। এরপরই উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি অবস্থানে যায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত রেলগেটে সড়ক অবরোধ করে রাখেন আরইউজে সভাপতি গ্রুপের সংবাদকর্মীরা।
এদিকে রেলগেটের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে রাজশাহী প্রেস ক্লাব। সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. আসলাম-উদ-দৌলা এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, রেলগেট এলাকায় দেশের শীর্ষ স্থানীয় দৈনিকের সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং নবীন সাংবাদিকদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে মুখোমুখি অবস্থানকে ঘিরে সৃষ্ট ঘটনায় মূলধারার সাংবাদিকরা বিব্রত। সভা-সমাবেশ, মিছিল-মানববন্ধন স্বাধীন দেশের সাংবিধানিক অধিকার। সংবিধানের ৩৭ ও ৩৮ অনুচ্ছেদে এ অধিকার দেয়া আছে। গনতান্ত্রিক দেশে সাংবাদিকরা এসব করতে পারেন। কিন্তু শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রফিকসহ কয়েকজনের ওপর যেভাবে হামলা চালানো হয়েছে তা নিন্দনীয়, ন্যক্কারজনক। আমরা এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।
হামলার শিকার রফিকুল ইসলাম রফিক সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত মুখ। কী কারণে তার ওপর হামলা চালানো হলো? কী কারণে তিনি মুখোমুখি অবস্থানে গেলেন? কী কারণে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার মতো পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটল, কেন তিনি সেখানে উপস্থিত হলেন এসব প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তবে মহাসড়কে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে কর্মসূচি পালন কাম্য নয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়