ভিসি এয়ার মার্শাল নজরুল : ওবিই হচ্ছে জ্ঞানগর্ভ ও চিন্তা উদ্দীপক কর্মশালা

আগের সংবাদ

টানা ৪ জয়ে সেমিতে পাকিস্তান

পরের সংবাদ

পাত্তাই পেল না শ্রীলঙ্কা : টানা চার জয়ে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২, ২০২১ , ১:১৮ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আগেই তিন ম্যাচ জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছিল ইংল্যান্ড। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ জিতলেই আর কোনো সন্দেহ থাকবে না ইংলিশদের সেমিফাইনাল যাত্রা নিয়ে। আর শ্রীলঙ্কা জিতলে বেঁচে থাকবে তাদের সেমিফাইনাল স্বপ্ন। এমন সমীকরণে শারজায় গতকাল লঙ্কানদের ২৬ রানে হারিয়ে টানা চার ম্যাচ জিতে সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড। টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৩ রান সংগ্রহ করে ইয়ান মরগান বাহিনী। ১৬৪ রানের জবাবে খেলতে নেমে ১৯ ওভারে ১৩৭ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানদের ইনিংস। ম্যাচের একপর্যায়ে ৭৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে সিংহলিজরা। তবে ষষ্ঠ উইকেটে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে সঙ্গী করে অধিনায়ক দাসুন শানাকা ৫৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ম্যাচে নাটকীয়তা ফিরিয়ে আনলেও ইংলিশ বোলার এবং ফিল্ডারদের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে শেষ পর্যন্ত গুটিয়ে যায় লঙ্কানদের ইনিংস। ইংলিশ বোলারদের মধ্যে আদিল রশিদ, মঈন আলী ও ক্রিস জর্ডান প্রত্যেকে ২টি করে এবং ক্রিস ওকস ও লিভিংস্টন একটি করে উইকেট লাভ করেন। ঝড়ো গতির ১০১ রানের ইনিংস খেলায় ম্যাচসেরা হন জস বাটলার। ৬ নভেম্বর ইংল্যান্ড গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মোকাবিলা করবে।
শারজায় গতকাল টসে জিতে ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় লঙ্কানরা। ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়লেও জস বাটলার ও ইয়ন মরগানের ব্যাটে ভর করে বড় পুঁজি পায় ইংল্যান্ড। বাটলার ৬৭ বলে ১০১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। মরগান ৩৬ বলে ৪০ রান করেন। ৪ উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৬৩ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। লঙ্কান বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ২১ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ৩ উইকেট।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বিপাকে পড়ে ইংল্যান্ড। ইংলিশ শিবিরে প্রথম আঘাতটি হানেন লঙ্কান স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে বোল্ড আউট করে সাজঘরে ফেরান জেসন রয়কে। ৬ বল খেলে এক বাউন্ডারির সাহায্য ৯ রান করে মাঠ ছাড়েন তিনি। দলীয় ৩৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ইংলিশরা। এবার লঙ্কান পেসার দুশমান্থা চামিরার বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন ডেভিড মালান। তার ব্যাট থেকে ৮ বলে আসে ৬ রান। অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে দলকে বিপদমুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জস বাটলার। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে এসে তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি আরেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো। হাসারাঙ্গার বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে শূন্য হাতেই মাঠ ছাড়েন তিনি। দলীয় ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে ইংল্যান্ড। ব্যাটে বলে ঠিক মিলাতে পারছিলেন না ব্যাটিংয়ে আসা ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগানও। বারবার লাইন মিস করছিলেন সেট ব্যাটসম্যান বাটলারও। শ্রীলঙ্কার বোলাররা কয়েকবার এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করলেও আম্পায়ারের সাড়া মেলেনি। সুযোগ পেয়ে আরো চেপে ধরেন লঙ্কান বোলাররা। তবে দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যানই শক্ত হাতে প্রতিহত করতে থাকেন তাদের। ধীরে ধীরে বিপদ কাটিয়ে দলকে রানে ফেরান বাটলার ও মরগান জুটি। দলীয় রান ৬০ পার হতেই বিধ্বংসী ব্যাট চালাতে থাকেন বাটলার। অন্য প্রান্তে রানের তুলনায় দ্বিগুণ বল হজম করা মরগানও খেলেন হাত খুলে। মারমুখো ব্যাটিংয়ে বাটলার ৪৫ বলে তুলে নেন ফিফটি। এরপর যেন আরো বিধ্বংসী রূপে ধরা দেন বাটলার। ইনিংসের ১৮.২ ওভারে ১১৩ রানে ভাঙে মরগান-বাটলার জুটি। ইংলিশ অধিনায়ক ৩৬ বলে ৪০ রান করে হাসারাঙ্গার শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন। অন্যদিকে বিধ্বংসী ব্যাটলার ঝড়ো গতিতে ব্যাট করে ৬৭ বলে তুলে নেন তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম শতক। তিনি সমান ছয় বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে ১০১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩২ বলে ৭১ রানের অপরাজিত ঝড়ো ইনিংস খেলেন বাটলার। নির্ধারিত ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। লঙ্কান বোলারদের মধ্যে হাসারাঙ্গা ২১ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ৩ উইকেট। দুশমান্থা চামিরা ৪৩ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ১ উইকেট।
টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে অপ্রতিরোধ্য ইংল্যান্ড। তাদের ব্যাটিং বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারছে না গ্রুপের অন্য দলগুলো। প্রথম ম্যাচেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ^কাপ ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় ডোবান তারা। দুই ইংলিশ স্পিনার আদিল রশিদ ও মঈন আলীর ঘূর্ণিতে ক্যারিবীয় ব্যাটিং লাইনআপ ধসে যায় মাত্র ৫৫ রানে। আদিল ২.২ ওভারে ২ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ৪ উইকেট। মঈন ৪ ওভারে ১৭ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ২ উইকেট। ম্যাচটি ইংল্যান্ড জিতে নেয় ৬ উইকেটের ব্যবধানে। গত আসরের ফাইনালে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে হারের প্রতিশোধ যেন দ্বিগুণ করে তুলে নিল ইংলিশরা। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশও দাঁড়াতে পারেনি ইংলিশ বোলিং শিবিরের সামনে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রান তুলে নেয় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৪.১ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। তৃতীয় ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়াকেও ১২৫ রানে বেঁধে দিয়ে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড। আর গতকাল চতুর্থ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২৬ রানে হারিয়ে সবার আগে সেমির টিকেট নিশ্চিত করে মরগান বাহিনী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়