ভিসি এয়ার মার্শাল নজরুল : ওবিই হচ্ছে জ্ঞানগর্ভ ও চিন্তা উদ্দীপক কর্মশালা

আগের সংবাদ

টানা ৪ জয়ে সেমিতে পাকিস্তান

পরের সংবাদ

বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলন : ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১’-এ বিনিয়োগকারীরা বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন।
মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলনের আউটকাম ডিক্লারেশন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
গতকাল সোমবার ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। ডিসিসিআই সহসভাপতি মনোয়ার হোসেনসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।
সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২১’ চলাকালীন আয়োজিত বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) সেশনে বিশ্বের ৩৮টি দেশের ৫৫২টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি ৩৬৯টি বিটুবিতে অংশ নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত ২৬ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত এ সামিট অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ সামিটের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অবকাঠামো, আইটি, চামড়াজাত পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মাসিউটিক্যালস, এগ্রো এন্ড ফুড প্রসেসিং, প্লাস্টিক পণ্য, ফার্স্ট মুভিং কনজিউমার গুডস (এফএমসিজি) এবং জুট ও টেক্সটাইল পণ্য নিয়ে ইনভেস্টমেন্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় ৩৮টি দেশ।
সংবাদ সম্মেলনে সামিটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, আমরা সামিটে ৪৫০টি বিটুবি বৈঠকের ব্যবস্থা রেখেছিলাম। এর মধ্যে ৩৬৯টি বিটুবি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রিজওয়ান রহমান বলেন, ১৩টি দেশের ২০টি কোম্পানি যৌথ বিনিয়োগ আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ হতে ২৬টি পণ্য আমদানির বিষয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, অবকাঠামো, ওষুধ, বেবি বোতল, ছাতা, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে পাঁচটি দেশের (চীন, নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ভারত) উদ্যোক্তারা সরাসরি বিনিয়োগের বিষয়ে নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং জ¦ালানি, বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য জ¦ালানি, ডেইরি প্রোডাক্টস, চামড়া, তৈরি পোশাক, এফএমসিজি, পাট, অটোমোবাইল প্রভৃতি খাতেও বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে রিজওয়ান রাহমান বলেন, এ সম্মেলন উপলক্ষে বিষয়ভিত্তিক ছয়টি ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়, যেখানে অংশগ্রহণকারী আলোচকরা ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকরণে নীতিমালার সংস্কার, সহায়ক নতুন নীতিমালা প্রণয়ন, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরি, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সহায়তা প্রদান, এফটিও এবং পিটিএ স্বাক্ষর, কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার প্রভৃতি বিষয়ের ওপর জোরারোপ করেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আরো বলেন, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া-প্যাসিফিক প্রভৃতি অঞ্চল হতে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তরণ-পরবর্তী রপ্তানি স¤প্রসারণের প্রতি আরো বেশি হারে মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি রপ্তানির সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে দ্রুততম সময়ে এফটিএ ও পিটিএ স্বাক্ষরের জন্য উদ্যোগী হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তরণে পরবর্তীতে বাণিজ্য স¤প্রসারণে আমাদেরকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। তবে এফটিএ স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে উভয় দেশের শুল্ক কাঠামো পুনর্বিন্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে হঠাৎ করেই আমাদের বিদ্যমান শুল্ক হার কমানো সম্ভব নয়, কারণ এতে আমাদের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা হ্রাস হতে পারে, পাশাপাশি স্থানীয় শিল্পায়নকে সহায়তার বিষয়েও সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।
বাণিজ্য সচিব জানান, দেশের ব্যবসাবন্ধব পরিবেশ আরো উন্নতকরণের লক্ষ্যে সরকার প্রদত্ত সব ধরনের সেবা ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে সরকারি সেবা পেতে দেশবাসীর কষ্ট-দুর্ভোগ লাঘব হবে। রপ্তানিমুখী পণ্যের স¤প্রসারণে দেশের সম্ভাবনাময় চামড়া খাতের জন্য সরকার ঘোষিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর অন্তত একটিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের জন্য বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন এবং তৈরি পোশাক খাতের মতো সম্ভাবনাময় রপ্তানিমুখী শিল্পে বন্ড সুবিধা দেয়ার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়