ডেঙ্গুতে ৯১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত সাড়ে ২৩ হাজার

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সংঘাত থামছেই না : সংঘর্ষে জড়িতদের তালিকা করছে আ.লীগ, অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে এক মাসে নিহত ৮, নির্বাচনী সংঘর্ষে ৩৮ নিহত

পরের সংবাদ

সোনাগাজীতে গভীর নলকূপ স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সৈয়দ মনির আহমদ, সোনাগাজী (ফেনী) থেকে : সোনাগাজীতে সিন্ডিকেট ঠিকাদারদের খামখেয়ালিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের গভীর নলকূপ স্থাপনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারদের পেশিশক্তির কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সে কাজ ভাগিয়ে নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি নিজের ইচ্ছামতো কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপকারভোগীদের উপকারের পরিবর্তে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে পদে পদে। দরপত্র মোতাবেক কাজ না করে নিম্নমানের পাইপ, মোটর ও ট্যাংক দিয়ে বসানো হচ্ছে গভীর নলকূপ। পাটাতন পাকা না করে দীর্ঘদিন ধরে খোলা স্থানে রাখায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কলগুলো। ঠিকাদাররা উপকারভোগীদের দিয়ে গরুর বিষ্ঠা (গোবর) ক্রয় করে কলগুলো স্থাপন করেন। উপকারভোগীদের দিয়ে মানসম্মত ফিল্টার ক্রয় করে যুক্ত করান কলে। নানা অজুহাতে গভীর নলকূপ স্থাপনে কর্মরত শ্রমিকদের দুই-তিন দিন ধরে খাবার খাওয়াতে বাধ্য করেন উপকারভোগীদের। এছাড়া অসাধু ব্যক্তিদের মাধ্যমে গভীর নলকূপের বরাদ্দ আনতে গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। দরপত্রে ৭০০ ফুট গভীর পর্যন্ত নলকূপ স্থাপনের কথা থাকলেও নানা অজুহাতে কোথাও কোথাও ৫০০-৬০০ ফুট গভীর পর্যন্ত স্থাপন করেন। ফলে পানিগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সোনাগাজী অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে সমগ্র বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় ২৩৪টি, আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পের আওতায় ৫৩১টি ও পল্লী পানি প্রকল্পের জন্য ৩৯টিসহ ৮০৪টি গভীর নলকূপ স্থাপনের বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া মোটর ও ট্যাংকসহ ২৫টি গভীর নলকূপ স্থাপনের বরাদ্দ দেয়া হয়। ৮০৪টি গভীর নলকূপ স্থাপনে ভালো ও উন্নত মানের পাইপ ব্যবহার ও পাটাতন পাকাকরণের অনুকূলে ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সরকারি কোষাগারে ৭ হাজার টাকা জমা দিয়ে কল বরাদ্দ পান উপকারভোগীরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, একটি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ঠিকাদারি কাজ পান হাতেগোনা দুই একটি প্রতিষ্ঠান। মোটর ও ট্যাংকসহ বরাদ্দকৃত গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ পেয়েছে এমবিএস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার হলেন হুমায়ূন কবীর। যার বিরুদ্ধে গত কয়েক মাস পূর্বে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিপ্তরের সহকারী প্রকৌশলীর ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছিল। ৭৬১টি গভীর নলকূপের বরাদ্দ পায় জামাল এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজটি ওই প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বরাদ্দ হলেও কাজ করাচ্ছেন কয়েকজন ব্যক্তি।
সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের রহিমা খাতুন নামে এক উপকারভোগী বলেন, দীর্ঘ চার মাস পূর্বে নিম্নমানের পাইপ দিয়ে গভীর নলকূপ স্থাপন করে চলে গেছেন ঠিকাদার। কিন্তু চার মাসেও কলের পাটাতন পাকা করা হয়নি। ফলে কলটি বাঁকা হয়ে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। চরচান্দিয়া ইউনিয়নের হাসিনা বেগম অভিযোগ করেন প্রায় চার মাস পূর্বে নানা হয়রানির মাধ্যমে কলটি বসানো হলেও পাটাতন পাকা না করায় কলটি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের সোনাগাজী শাখার সহকারী প্রকৌশলী আবু সায়েম বলেন, যেসব কলের পাটাতন পাকা করা হয়নি, সেগুলো দ্রুত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করেনি।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন বলেন, কিছু কিছু অনিয়মের খবর পেয়েছি। তবে ঠিকাদারদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দরপত্র অনুযায়ী কাজ না করা হলে বিল প্রদান করা হবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়