ডেঙ্গুতে ৯১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত সাড়ে ২৩ হাজার

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সংঘাত থামছেই না : সংঘর্ষে জড়িতদের তালিকা করছে আ.লীগ, অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে এক মাসে নিহত ৮, নির্বাচনী সংঘর্ষে ৩৮ নিহত

পরের সংবাদ

সরকারি সম্পত্তি দখল : বি.বাড়িয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নালিশ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : জাল দলিলের মাধ্যমে কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি দখল, বৃক্ষরোপণ ও আরসিসি পাইপ প্রকল্পে অনিয়ম, ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় ইছাপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ৩৬ নেতাকর্মী স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগপত্র সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে দাখিল করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিজয়নগর উপজেলার খাদুরাইল গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বকুল ও তার ভাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার ১৯৯৯ সালে জাল দলিল তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে মির্জাপুরে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ২৭ একর সরকারি জমি দখল করেন। মির্জাপুর গ্রামের ভূপেষ চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি তৎকালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ভূমি উদ্ধারে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এরপর ভূমিদস্যু এ চক্রকে দিয়ে টাকার প্রভাবে মামলার সব নথিপত্র গায়েব করিয়েছেন।
ভূপেষ চৌধুরী কর্তৃক মামলা দায়েরের প্রায় ২০ বছর পর ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুখ্য বিচারিক হাকিম মাসুদ পারভেজ অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বকুলসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে স্থানীয় ধীতপুর গ্রামের রাস্তা থেকে বড় বাড়ির সাকুলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় এডিবি প্রকল্পের মাধ্যমে সিসিকরণ কাজ দেখিয়ে দুই লাখ টাকা, খাদুরাইল সাকুলের বাড়ি থেকে পূর্ব দিকের রাস্তা পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণ কাজের নামে এক লাখ টাকা, ধীতপুর আইনুদ্দিনের বাড়ি থেকে ডালপা ফজলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণে চার লাখ টাকা এবং এডিপি ও এলজিএসপি প্রকল্প থেকে ইছাপুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আরসিসি পাইপ সরবরাহের নামে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩৭ টাকা এবং ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বকুল।
এছাড়া কাবিখা-কাবিটা, এলজিএসপি, উন্নয়ন কর এবং এডিপির ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন এই ইউপি চেয়ারম্যান। গত বছর প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি এই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পায় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ২০১৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জিয়াউল হক বকুল আনারস প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয় এবং কেন্দ্র দখল করে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাকে উপজেলা যুবলীগ সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করেছিল জেলা যুবলীগ। বহিষ্কারে ক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগ করায় সে। এ ঘটনায় থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, জিয়াউল হক বকুলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগে অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগ অবগত নয়। তবে জিয়াউল হক বকুলের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের যে মামলা হয়েছিল, তা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর মধ্যস্থতায় সমঝোতা হওয়ার পর অভিযোগকারীরা মামলা প্রত্যাহার করে নেয়।
আনীত অভিযোগ প্রসঙ্গে জিয়াউল হক বকুল বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি পক্ষ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়