ডেঙ্গুতে ৯১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত সাড়ে ২৩ হাজার

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সংঘাত থামছেই না : সংঘর্ষে জড়িতদের তালিকা করছে আ.লীগ, অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে এক মাসে নিহত ৮, নির্বাচনী সংঘর্ষে ৩৮ নিহত

পরের সংবাদ

মাহাদি আইসিইউতে, থমথমে চমেক : ছাত্রলীগের একাংশের বিক্ষোভ সমাবেশ, গ্রেপ্তার দুই

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা দুজনেই চমেকের ছাত্র। গত শনিবারের সংঘর্ষে গুরুতর আহত দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদিপ জে আকিব আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। গতকাল রবিবার তার জ্ঞান ফিরলেও আশঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। মাহাদি ৬২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
এদিকে মাহাদীর ওপর হালাকারীদের গ্রেপ্তার ও হামলার প্রতিবাদে কলেজের সামনে ছাত্রলীগের একাংশ প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তারপরও যে কোনো সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সাদিকুর রহমান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার হওয়া রক্তিম দে (২১) ও এনামুল হোসেন সীমান্ত (২১) দুজনই এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তারা ছাত্রলীগের কর্মী এবং মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গত শনিবার ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত আকিবের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারকারী চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী। তিনি সাংবাদিকদের জানান, আকিবের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। গত শনিবার তার অবস্থা গুরুতর ছিল। মাথার ডান দিকে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আকিবের জ্ঞান ফিরেছে।

আইসিইউতে যে টিউবের ভেতরে রাখা হয়েছিল সেটা থেকে তাকে বের করেছি। বাকিটা অভ্যন্তরীণ রিকভারির বিষয়। সেটা সময়সাপেক্ষ। ইনফেকশন না হওয়া এবং ব্রেইনের বিহেভিয়ারের ওপর (যেহেতু বড় আঘাত পেয়েছে) বাকিটা নির্ভর করছে। বয়স কম হওয়ায় এবং দ্রুততম সময়ে অপারেশন হওয়ায় আকিব দ্রুত রিকভার করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে ছেলের আহত হওয়ার খবর পেয়ে কুমিল্লার বুড়িচং থেকে ছোট ভাই ও এক আত্মীয়কে নিয়ে চট্টগ্রামে ছুটে এসেছেন আকিবের বাবা গোলাম ফারুক মজুমদার। তিনি বলেন, পূজার সময়েও ছেলেটা বাড়ি গিয়েছিল। তারপর ক্লাস করতে ক্যাম্পাসে আসে। গোলাম ফারুক মজুমদার বলেন, ‘আমার ছেলেটা নিরীহ। সে এ অবস্থায় পড়বে কখনো ভাবতে পারিনি। সবাই দোয়া করবেন সে যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের একপক্ষের ওপর হামলা চালায় অন্যপক্ষের কর্মীরা। এর জেরে শনিবার সকালে চমেকের ফটকের সামনে সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়। এরপর দুপুরে একাডেমিক কাউন্সিলে জরুরি বৈঠকে বসে। বৈঠকের পর মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে ছাত্রাবাসও খালি করে দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সংঘর্ষে জড়ানো ছাত্রলীগের একটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের এবং অন্য পক্ষটি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। হামলার ঘটনায় রাতে আকিবের আত্মীয় তৌফিকুর রহমান নামে একজন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
এদিকে মাহাদি আকিবের ওপর হামলাকারীদের ফাঁসির দাবিতে গতকাল রবিবার দুপুরে ছাত্রলীগের একাংশ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মেডিকেল কলেজের বাইরের সড়কে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৬২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা মো. মাহাদি আকিবের ওপর গতকাল শনিবার সকালে চমেকের মেইন গেটের অদূরে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে অতর্কিত হামলা করা হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন চমেক ছাত্রলীগের বিভিন্ন বর্ষের নেতাকর্মী। তারা বলেন, শিক্ষার্থীরা চিকিৎসক হওয়ার উদ্দেশ্যে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। অনেকে পড়ালেখার পাশাপাশি রাজনীতি করে। রাজনীতির নামে এই রকম ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয়। এই কাজে অধ্যক্ষের পরোক্ষ মদত রয়েছে, যিনি তার প্রশাসনিক ব্যর্থতা রাজনীতির ওপরে চাপানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করা ও হত্যাচেষ্টাকারীদের বহিষ্কারের দাবি জানানো হয় মানববন্ধনে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, সহসভাপতি একরামুল হক রাসেল, মাইনুল হাসান চৌধুরী শিমুল, আবুল মনসুর টিটু, সাব্বির সাকিব। উপস্থিত ছিলেন ডা. ইমন সিকদার, ডা. কে এম তানভীর, ডা. খোরশেদুল ইসলাম, ডা. শ্বাশত মজুমদার, ডা. মো. সাকি, ডা. রেজাউল করিম শ্রাবণ, তৌফিকুর রহমান, অভিজিৎ দাশ, কনক দেবনাথ, পিয়াল, জামশেদ, ফয়েজ, জামিল, আরিফ প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়