ডেঙ্গুতে ৯১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত সাড়ে ২৩ হাজার

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সংঘাত থামছেই না : সংঘর্ষে জড়িতদের তালিকা করছে আ.লীগ, অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে এক মাসে নিহত ৮, নির্বাচনী সংঘর্ষে ৩৮ নিহত

পরের সংবাদ

দৃঢ় হোক সম্প্রীতির বন্ধন

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ বাংলাদেশে কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে সম্প্রীতির ওপর আঘাত আসবে তা কখনো কোনোদিন প্রকৃত ধার্মিক বাঙালি মেনে নেয়নি এবং নেবেও না। বাঙালির যে আবহমান কালের সংস্কৃতির ধারা তাতে প্রত্যেক ধর্মের মানুষের সহাবস্থান বিশ্বে অতুলনীয়। প্রত্যেক ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্মকে যেভাবে সম্মান এবং শ্রদ্ধা করে তেমনি অন্য ধর্মকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করে। বাঙালির আচরণের এ এক বৈশিষ্ট্য। এটাই প্রকৃত ধার্মিকের লক্ষণ। এদেশে যখন মসজিদে আজান হয় বা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা নামাজ পড়েন অন্য ধর্মের লোকরা তাদের মন্দিরের সাউন্ড বন্ধ করে দেয়, যাতে মুসল্লিদের নামাজের কোনো বিঘœ না ঘটে। আবার ইসলাম ধর্মের লোকরাও অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখে। এই যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সেটা অন্য কোনো দেশে পাওয়া যাবে কিনা জানা নেই। এটাই আমাদের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চিত্র।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার। তাঁর সে স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবক্ষেত্রে সব ধর্মের মানুষকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিচ্ছে। যেটা আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের জন্য সহায়ক। তাই বলা হয় ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ প্রত্যেক ধর্মের মানুষের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছিল। যেটা ছিল অসাম্প্রদায়িক এক বাংলাদেশ। যেখানে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকার লাভ করেছিল। কিন্তু মাঝে মাঝে এ শান্তিময় সহাবস্থানে দুষ্কৃতকারীদের আচরণ শান্তি বিঘিœত করতে প্রয়াস চালিয়েছে এবং চালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে, নষ্ট করতে চেয়েছে এবং চাচ্ছে সম্প্রীতির এ বন্ধনকে। কিন্তু এ সম্প্রীতির বন্ধনকে রক্ষা করতে সদা প্রস্তুত বাংলার স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সব সম্প্রদায়ের ধর্মপ্রাণ মানুষ। কিছু স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মানুষের জন্য গোটা দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে, সম্প্রীতির বন্ধন নষ্ট হবে, এটা বাঙালি মেনে নেবে না। বিশ্বে যে সুনাম বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এ দেশের জন্য বয়ে আনছেন সে সুনামের মর্যাদা রক্ষা করতে প্রস্তুত বাংলাদেশের মানুষ। বিশ্ববাসীর কাছে এদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার লক্ষ্যে এদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র প্রমাণ করার জন্য একটা স্বার্থান্বেষী মহল বারবার অপচেষ্টা অতীতেও চালিয়েছে, বর্তমানেও চালিয়ে যাচ্ছে। এর বিচার অবশ্যই বাংলার মাটিতে হবে। সময়ের প্রতীক্ষা মাত্র। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো এসব চক্রান্তকারী থেকে সর্বস্তরের মানুষ যেন সাবধান থাকে সেটা দেখতে হবে। সমাজে তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দিতে হবে। ধর্মান্ধতা নয় ধার্মিক হতে হবে। অন্যের ধর্মে আঘাত নয় শ্রদ্ধা ও সম্মান করতে হবে। মানবিক গুণের অধিকারী বলেই আমরা মানুষ। আমাদের চিন্তা-চেতনাকে প্রসারিত করতে হবে। সেসব গুণাবলির বিকাশ যেন আমাদের আচরণে প্রকাশ পায় এবং বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটায়। তবেই হবে মানবতার বিজয়।
ধর্মান্ধতার আবরণ থেকে বেরিয়ে প্রকৃত ধার্মিক হয়ে মানুষে মানুষে ভালোবাসার বন্ধন তৈরি করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করার জন্য সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক। ধার্মিকতার চেতনায় গড়ে উঠুক অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। নিপাত যাক সাম্প্রদায়িকতা।

বিভাস গুহ : শিক্ষক ও লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়