মিয়ানমার ছায়া সরকার ও মার্কিন প্রতিনিধির বৈঠক

আগের সংবাদ

ইএফডির দাম নিয়ে জটিলতা : দোকান নির্ধারণ করবেন ভ্যাট কর্মকর্তারা, বিপাকে পড়বেন ছোট ব্যবসায়ীরা

পরের সংবাদ

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী : কিংবদন্তি হয়ে এই বাংলায় আছেন আব্বাসউদ্দীন

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আব্বাসউদ্দীনের মরমী কণ্ঠের জাদুতে সমৃদ্ধ এদেশের লোকসংগীত। যতদিন এদেশের লোকসংগীত থাকবে ততদিন আব্বাসউদ্দীনের নাম উচ্চারিত হবে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়। ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে’, ‘মাঝি বাইয়া যাও রে’, ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ’- এই গানগুলো সংগীতপিপাসুদের মাঝে এখনো দোলা দেয়, স্মরণ করিয়ে দেয় মরমী শিল্পী আব্বাসউদ্দীনের কীর্তি। গতকাল ২৭ অক্টোবর বুধবার ছিল আব্বাসউদ্দীনের ১২১তম জন্মদিন। এই উপলক্ষে ‘লোকসংগীত সম্রাট আব্বাসউদ্দীন আহমদ ও তার শিল্পী জীবন’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনার আয়োজন করে জাতীয় জাদুঘর। বিকালে জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নজরুল সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ। জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এতে আলোচক ছিলেন সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান। মূল প্রবন্ধে বুলবুল মহলানবীশ বলেন, নিজ গ্রামের চাষিদের কণ্ঠে ভাওয়াইয়া গান শুনে শুনে অনায়াসেই সেই গান কণ্ঠে তুলে নেয়ার ঈশ্বর প্রদত্ত ক্ষমতা ছিল তার। ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ’ একমাস রোজা রাখার পর ঈদের দিনে এই গানটি না গাইলে বাঙালির ঈদ সম্পূর্ণ হয় না। হয়তো অনেকেই জানেন না এই গানের জন্ম-ইতিহাস। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম গানটি লিখেছিলেন ১৯৩১ সালে শিল্পী আব্বাসউদ্দীন আহমেদের অনুরোধে। গানটি প্রথম গেয়েছেন আব্বাসউদ্দীন নিজেই। লেখার কদিন পরেই রেকর্ড করা হয় গানটি। নজরুলের বেশ কিছু গান আব্বাসউদ্দিনের কণ্ঠে রেকর্ড করা হয়েছে এবং সেগুলো জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, আব্বাসউদ্দীন আহমদ কিংবদন্তি হয়ে আমাদের মাঝে আজো আছেন। আধুনিক, স্বদেশী, ইসলামি, পল্লীগীতি, উর্দুগান সবই গেয়েছেন তিনি। ওকি গাড়িয়াল ভাই, তার এই গানটি কালজয়ী হয়ে আছে যুগের পর যুগ বেঁচে আছেন। অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, লোকসংগীত সম্রাট আব্বাসউদ্দীন আহমদের স্মরণের এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে শিল্পী আব্বাসউদ্দীনের জীবন সম্পর্কে জানা-অজানা অনেক কথা জানতে পারলাম। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তিনি। ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে’, ‘মাঝি বাইয়া যাও রে’- এসব এমন ধরনের গান যা যুগের পর যুগ বেঁচে থাকবে। তিনি বহুমাত্রিক গান করতেন। তার গানে দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হয়। তিনি আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন তাঁর সৃষ্টি কালজয়ী গানের মধ্যদিয়ে।
বাবার স্মৃতিচারণ করে আব্বাসউদ্দীন আহমদের মেয়ে শিল্পী ফেরদৌসী রহমান বলেন, আমার বাবা বেস্ট বাবা ছিলেন। তাকে মন খুলে যে কোনো কথা বলা যেত। তিনি মনোযোগ দিয়ে সব কথা শুনতেন এবং মতামত দিতেন। ব্যক্তি জীবনে বাবা অনেক ব্যস্ত ছিলেন, কিন্তু তারপরও পরিবারকে অনেক সময় দিতেন তিনি। মায়ের প্রতি ছিল তার প্রচণ্ড ভালোবাসা। ১৯০১ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহারে জন্মগ্রহণ করেন আব্বাসউদ্দীন। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি লোকসংগীতশিল্পী, সংগীত পরিচালক ও সুরকার। সংগীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি মরণোত্তর প্রাইড অফ পারফরমেন্স (১৯৬০), শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৯) এবং স্বাধীনতা পুরস্কারে (১৯৮১) ভূষিতে হন। তার বড় ছেলেন ড. মোস্তফা কামাল ছিলেন বিচারপতি, মেজো ছেলে মুস্তাফা জামান আব্বাসী ও একমাত্র মেয়ে ফেরদৌসী রহমান সংগীতশিল্পী। ১৯৫৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৫৮ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়