মিয়ানমার ছায়া সরকার ও মার্কিন প্রতিনিধির বৈঠক

আগের সংবাদ

ইএফডির দাম নিয়ে জটিলতা : দোকান নির্ধারণ করবেন ভ্যাট কর্মকর্তারা, বিপাকে পড়বেন ছোট ব্যবসায়ীরা

পরের সংবাদ

ব্যাটিং ব্যর্থতাকে দায়ী করলেন মাহমুদউল্লাহ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কখনো সফল হয়নি, লিখতে পারছে না সফলতার গল্পও। ভারত আইপিএলের মাধ্যমে টি-টোয়েন্টিতে উন্নতি করলেও বিপিএল খেলেও উন্নতি নেই টাইগারদের। কখনো বোলিং আবার কখনো ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচ হারতে হয় বাংলাদেশকে। অথচ ব্যাটিং বা বোলিং কোথাও ঘাটতি নেই। তাও বিষাদের গল্প লিখে যাচ্ছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গতকাল ৮ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১২৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। হারের কারণ হিসেবে টাইগার অধিনায়ক দুষছেন ব্যাটিং ব্যর্থতাকে।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ব্যর্থতার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে বলেন, ‘ব্যাটিং নিয়ে খুবই হতাশ। আজকের উইকেট ভালো ছিল। আমরা শুরুটা ভালো করিনি। মাঝের ওভারে আমরা কোনো জুটি গড়তে পারিনি। যে ভালো শুরুটা দরকার, সেটা আমরা পাচ্ছি না। কারণ এসব উইকেটে পরে ব্যাটিং করাটা একটু কঠিন। আমার মনে হয়, আমাদের ব্যাটিংয়ের কিছু দিক নিয়ে আরো চিন্তা করা উচিত।’
ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও ৯ বলে ১৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে স্পিনার নাসুম আহমেদ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন চাইলেই ভালো ব্যাট করা সম্ভব। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়। আমরা প্রথম ছয় ওভারে রান তুলতে পারছি না। এই জন্য আমরা পিছিয়ে পড়ছি। রানও তুলতে পারছি না। উইকেটও পড়ছে। এটা নিয়ে সবাই আলোচনা করছি। সবারই ভালো কিছু করার চেষ্টা আছে। কিন্তু আমাদের দ্বারা হচ্ছে না।’
এর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টয়েলভের ম্যাচে গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট হাতে কোনো দাপট দেখাতে পারেননি লিটন, সাকিব ও মুশফিকরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে মাত্র ১২৪ রান তুলতে সক্ষম হয় টাইগাররা। স্বল্প রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে হেসেখেলে ম্যাচ জিতে নেয় ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ আগামী শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
এদিন টাইগার বোলাররা ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের সামনে পাত্তাই পায়নি। ১২৫ রানের লক্ষ্যে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন জস বাটলার ও জেসন রয়। ২৯ বলে ৩৯ রানের এই জুটি ভেঙে দলকে প্রথম ব্রেক থ্রæ এনে দেন টাইগার স্পিনার নাসুম আহমেদ। ১৮ বলে ১ চার ও ১ ছয়ে ১৮ রান করে লং অফে তুলে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ নাঈমের হাতে তালুবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন বাটলার। অন্যদিকে বিশ্বকাপে নিজের অভিষেক ম্যাচে শরিফুল ইসলাম প্রথম উইকেট তুলে নেন। তার শিকার ইংল্যান্ডের আরেক ওপেনার জেসন রয়। ডেভিড মালানের সঙ্গে তার ৪৮ বলে তার ৭৩ রানের জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের স্থলাভিষিক্ত এই বাঁ-হাতি পেসার। জেসন ৩৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৬১ রান করে নাসুম আহমেদের তালুবন্দি হন। এরপর টাইগার বোলাররা আর কোনো উইকেটের পতন ঘটাতে না পারলে শেষ পর্যন্ত ১৪.১ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংলিশরা। ডেভিড মালান ২৮ ও জনি বেয়ারস্টো ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ব্যাট হাতে দুই ওপেনার লিটন ও নাঈম শুরুটা ভালো করতে পারেননি। দলের খাতায় ১৪ রান যোগ করতেই প্রথম হোঁচট খায় টাইগাররা। আগের ওভারের শেষ দুই বলে লিটন দাস টানা দুটি চার মারেন মঈন আলীকে। কিন্তু পরের ওভারে ইংল্যান্ড স্পিনারের খেলা প্রথম বলেই আউট হন তিনি। ৮ বলে ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন। পরের বলে বাজে ক্রিকেট খেলে মিড অনে ক্রিস ওকসের সহজ ক্যাচের শিকার হন নাঈম। ৭ বলে ৫ রান করেন এই ওপেনার। দুই ওপেনার দ্রুত বিদায় নেয়ার পর দায়িত্বশীল ব্যাটিং প্রত্যাশা করা হচ্ছিল সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে। কিন্তু পারলেন না নিজের কাজটা করতে। মাত্র ৭ বল খেলে ৪ রানে আউট তিনি। ক্রিস ওকসের বলে শর্ট ফাইনে আদিল রশিদের দুর্দান্ত ক্যাচ হন সাকিব। এরপর মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্ট করে বাংলাদেশ।
কিন্তু মুশফিক রিভার্স সুইপ খেলতে গেলে লিয়াম লিভিংস্টোনের বল তার প্যাডে লাগে। আম্পায়ার তার আপিলে সাড়া দেননি। রিভিউ নেয় ইংল্যান্ড। পতন ঘটে মুশফিকের উইকেটের। এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। তিনি ৩০ বলে ৩ চারে ২৯ রান করেন। এরপর তাড়াহুড়ো করে খেলতে গিয়ে আউট হন আফিফ। লিয়াম লিভিংস্টোনের বল বৃত্তের মধ্যে পাঠিয়েই মাহমুদউল্লাহ সিঙ্গেল নেস। টাইমাল মিলস নন স্ট্রাইক এন্ডে থ্রো করতে গিয়েও করলেন না। জস বাটলারের দিকে পাঠালেন। কিন্তু ততক্ষণে আফিফ দ্বিতীয় রান নিবেন কিনা বুঝলেন না। তবে রান নিতে যাওয়ার সময় মাহমুদউল্লাহ নো কল করলেন। তাতেই দ্বিধান্বিত আফিফ ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে আসেন এবং ততক্ষণে বাটলার স্টাম্প ভেঙে তাকে সাজঘরের পথ দেখান। এরপর অবশ্য ভালো খেলার আভাস দেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু তিনিও শেষ পর্যন্ত আহত বাঘদের দায়িত্ব নিতে পারলেন না। তার ব্যক্তিগত খাতায় যখন ১৯ রান, তখন লিভিংস্টোনের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্রিস ওকসের হাতে ক্যাচ তুলে মাঠ ছাড়েন তিনি। ২৪ বলে ১ চারে ১৯ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। রিয়াদের বিদায়ের পর তাড়াহুড়ো করে খেলতে গিয়ে ১১ রান করে আউট হন শেখ মেহেদি। এরপর নুরুল হাসান ও নাসুম আহমেদ ঝড়ো গতিতে রান তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু এদিন দলের স্কোর বড় করতে খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারেননি নুরুল। টাইমাল মিলসের গতির কাছে পরাস্ত টাইগার উইকেটরক্ষক ১৮ বল থেকে ১৬ রান করে ফিরে যান। নাসুম ৯ বলে ২ ওভার বাউন্ডারি ও ১ বাউন্ডারির সাহায্য ১৯ রান করে অন্য প্রান্তে অপরাজিত থাকেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়