মিয়ানমার ছায়া সরকার ও মার্কিন প্রতিনিধির বৈঠক

আগের সংবাদ

ইএফডির দাম নিয়ে জটিলতা : দোকান নির্ধারণ করবেন ভ্যাট কর্মকর্তারা, বিপাকে পড়বেন ছোট ব্যবসায়ীরা

পরের সংবাদ

পরীক্ষা শুরু ১৪ নভেম্বর : এসএসসি পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১,৭৯,৩৩৪ জন

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে অনুষ্ঠিতব্য চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন। গতবারের চেয়ে এবার এক লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন বেড়েছে। গতবার পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন। নির্বাচনী পরীক্ষা না হওয়ায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে আগামী ৮ থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘ প্রায় দুই বছর পর এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে ৯ মাস পিছিয়ে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে। সারাদেশে মোট তিন হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৮ লাখ ৯৯৮ জন, তিন লাখ এক হাজার ৮৮৭ জন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল এবং এক লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসবে।
মহামারি পরিস্থিতির কারণে এবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কেবল তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেয়া হবে। বাংলা, ইংরেজির মতো আবশ্যিক বিষয়গুলোতে পরীক্ষা না নিয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেছিলেন, এসএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি এবং এইচএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক বিষয়গুলোর নম্বর দেয়া হবে। এসব বিষয়ে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট নেয়া হচ্ছে না।
দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে গত বছরের মার্চে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। কয়েক দফা উদ্যোগ নেয়ার পর শেষ পর্যন্ত এ বছরের সেপ্টেম্বরে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরানো সম্ভব হয়। এই দেড় বছরে কোনো পাবলিক পরীক্ষায় বসতে পারেনি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত বছর মহামারির আগে এসএসসি পরীক্ষা হয়ে গেলেও এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে ফেব্রুয়ারির পরীক্ষা পিছিয়ে এসেছে নভেম্বরে। ১৪ নভেম্বর সকালে বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে।

পরদিন ১৫ নভেম্বর সকালে বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা, বিকালে হিসাববিজ্ঞান পরীক্ষা হবে। ১৬ নভেম্বর সকালে রসায়ন (তত্ত্বীয়), ১৮ নভেম্বর সকালে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া (তত্ত্বীয়), ২১ নভেম্বর সকালে ভূগোল ও পরিবেশ এবং বিকালে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ের পরীক্ষা হবে।
করোনা ভাইরাসের কারণে এবার পরীক্ষার সময় ও বিষয় কমিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এবার সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা হবে। নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়গুলো এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর অনলাইনে বোর্ডে পাঠাবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ পরীক্ষা শুরু হয়ে থাকলেও বৈশ্বিক অতিমারি করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ বছর যথাসময়ে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে করোনার সংক্রমণ সহনীয় হয়ে আসায় পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বসবে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা শেষের ত্রিশ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হবে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবার বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের একই সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ না করে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পরীক্ষা নেয়া হবে। পাশাপাশি পরীক্ষার সময় ও নম্বর কমিয়ে আনা হয়েছে।
ডা. দীপু মনি বলেন, এবারো পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ত্রিশ মিনিট আগে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। তবে অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে এর পরে প্রবেশ করতে দিলে তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় দেরি হওয়ার কারণ সবকিছু রেজিস্ট্রারে লিখতে হবে। এবারো পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা শিক্ষক ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। সব বিষয়ে পরীক্ষা না হওয়ার কারণে পরীক্ষার ব্যয় কমে যাওয়ায় পরীক্ষার ফরম পূরণে আদায় করা অর্থের বাকি অংশ ফেরত দেয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগের মতোই সব নিয়মকানুন থাকবে। এবারো যেন কেউ প্রশ্নপত্র ফাঁস না করতে পারে সেজন্য কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি কোনোভাবে পরীক্ষা নিয়ে কোনো গুজব যেন ছড়াতে না পারে সেদিকেও গোয়েন্দাদের নজরদারি রয়েছে। এ সময় তিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সতর্কতা অবলম্বন করার পরও যদি কোনো শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়, তাহলে বাসা কিংবা চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে তার পরীক্ষা নেয়া হবে। কারণ এবার একটা অস্বাভাবিক ব্যবস্থার মধ্যে পরীক্ষা হচ্ছে। প্রশ্নফাঁসের গুজব বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা গুজবে এবং প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরীক্ষার পুরো সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়