চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা : চালকের সহকারী শাহীরুল এখন কোটিপতি

আগের সংবাদ

তিস্তার তাণ্ডবে লালমনিরহাটে পথে বসেছে হাজারো পরিবার

পরের সংবাদ

৬ ডাকাত গ্রেপ্তার : ‘চাঁদা না দিলে তোর অবস্থাও ঢাকা টায়ারের মতো হবে’

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী আর্মি আলমগীর, জিসান ও শাহাদাত হোসেনের পরিচয়ে চাঁদা দাবি করে আসছিল চক্রটি। মুঠোফোনে হুমকি দিয়ে বলেছিল পাশের ঢাকা টায়ারের অবস্থা দেখেছিস। চাঁদা না দিলে তোর অবস্থাও এমন হবে। তবু আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আমার মোটরসাইকেলের শোরুমে ডাকাতি করে তারা। গত ১২ অক্টোবর পাঁচ মিনিটের মধ্যে দোকানের কর্মীদের ছুরিকাঘাত করে প্রায় ৩ লাখ টাকা লুট করাসহ ভাঙচুর করে একটি সিপিইউ নিয়ে যায়। আমি প্রাণ নিয়ে কোনো রকম রক্ষা পাই। এ সময় জানতে পারি পাশের একটি প্রতিষ্ঠান ঢাকা টায়ারেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছিল তারা। পরে এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করি।’
গতকাল রবিবার দুপুরে রাজধানীর র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে নিজ প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির ঘটনার এভাবেই বর্ণনা করেন রাজধানীর শ্যামলীর ইডেন অটোস মোটরসাইকেল শোরুমের মালিক আবদুল খালেক। এর আগে এ ডাকাতির ঘটনায় হোতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় মিরপুরের শ্যামলীবাগ এলাকায় অবস্থিত উত্তরা মটরসের ডিলার ইডেন আটোস নামক শোরুমে একটি ডাকাত দল শোরুমে ঢুকে ব্যবস্থাপক ওয়াদুদ সজিব ও মোটর মেরামতকারী নূর নবী হাসানকে ধারাল চাপাতি দিয়ে আঘাত করে। এ সময় ডাকাত দলের কিছু সদস্য শোরুমের দোতলায় উঠে গøাস, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ক্যাশ বাক্স ভাঙচুর করে নগদ টাকা ও ডেস্কটপ মনিটর নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় শোরুমের মালিক কে এম আবদুল খালেক, শেরে বাংলা নগর থানায় ঘটনার পর দিন একটি মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে র‌্যাব ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-২ ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ও ধামরাই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাত চক্রের হোতা জহিরুল ইসলাম ওরফে জহির (৩৩), জসিম উদ্দিন (৩৪), জাহিদুল ইসলাম শিকদার (২৬), খায়রুল ভুঁঁইয়া (২০), রাকিব হাসান (২০) ও মো. নয়নকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ৪টি চাপাতি, শোরুম থেকে লুণ্ঠিত ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তিনি আরো বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা কেউ পিয়ন, কেউ পরিচ্ছন্নতাকর্মী আবার কেউ অটোরিকশাচালকের কাজ করলেও এর আড়ালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শ্যামলী ও আদাবর এলাকার ভয়ঙ্কর চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং ডাকাতির কাজ করত চক্রটি। বিদেশি নম্বর থেকে প্রথমে শীর্ষ সন্ত্রাসী পরিচয়ে ফোন দিয়ে চাঁদা দাবি করত এ চক্রটি। তাদের এ দাবি মেটাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেই ব্যবসায়ীদের ওপর চড়াও হতো তারা। নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোসহ দোকান লুটের মতো ঘটনাও ঘটাত চক্রটি। শ্যামলীর শোরুমের মালিকের কাছেও চাঁদা দাবি করে না পাওয়ায় পরিকল্পিত ডাকাতির ঘটনা ঘটায় তারা। কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত জহিরুল ইসলাম ওরফে জহির এ চক্রের হোতা। জিজ্ঞাসাবাদে জহির আরো জানায়, জসিম ও অন্যদের সহযোগিতা নিয়ে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও নির্মাণাধীন ভবন থেকে টাকা দাবিসহ নানা অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত। মোটরসাইকেল শোরুমে ঢুকেই সে ম্যানেজার ওয়াদুদ সজিবকে চাপাতি দিয়ে বাম পায়ে আঘাত করে।
এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, বিদেশি নম্বর থেকে ফোন করলেই কেউ শীর্ষ সন্ত্রাসী হয়ে যায় না। দেশে থেকেও অবৈধ প্রক্রিয়ায় ভিওআইপি কলে ফোন করা যায়। মূলত শীর্ষ সন্ত্রাসীর তকমার প্রমাণ করতে বিদেশি নম্বর থেকে ফোন করে তারা। এরপর চাঁদা না পেলে হামলা করে। তারা ইডেন অটোস মোটরসাইকেল শোরুমে অস্ত্রসহ হামলা চালিয়ে ডাকাতি করেছিল মূলত আতঙ্ক ছড়াতে যাতে অন্যরা চাঁদা চাইলে ভীত হয়ে দিয়ে দেয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়