চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা : চালকের সহকারী শাহীরুল এখন কোটিপতি

আগের সংবাদ

তিস্তার তাণ্ডবে লালমনিরহাটে পথে বসেছে হাজারো পরিবার

পরের সংবাদ

সাইবার অপরাধ দমন ও প্রচলিত আইন

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তথ্যপ্রযুক্তি অপরাধ শনাক্তে দেশের প্রচলিত আইন দুর্বল জেনে অপরাধী চক্র দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বিষয়টি নিঃসন্দেহে আতঙ্কের। জানা যায়, সেপ্টেম্বরে খোদ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকেই (বিটিআরসি) এ বিষয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে দেখা গেছে। এবারের দুর্গাপূজায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনাও ঘটেছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে- ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, গুগলের মতো জনপ্রিয় সেবাগুলো কি এ দেশে নিয়ন্ত্রণহীনই থেকে যাবে- এমন প্রশ্ন বারবার সামনে আসছে। মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান সারাবিশ্বের মধ্যে দশম। বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ১৩ কোটিরও বেশি। সহজলভ্যতার কারণে একদিকে যেমন বেড়ে চলছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা, তেমনই পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে সাইবার অপরাধও। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুককেন্দ্রিক অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে বেশি। প্রযুক্তির এই যুগে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন ছাড়া জীবনযাপন প্রায় অসম্ভব। প্রযুক্তি জনমুখী হয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে মানুষকে। এটা যেমন সত্য এবং যুগের বাস্তবতা, তেমনি এর অপব্যবহারও হয়ে উঠছে মানুষের যন্ত্রণার অন্যতম কারণ। স্কুল-কলেজপড়–য়া অল্পবয়সি মেয়েরাই এসব প্রতারণার শিকার হচ্ছে বেশি। শুধু যে নারী নিগ্রহের লক্ষ্যেই সাইবার অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে তা নয়, আর্থিক ক্ষেত্রেও সাইবার অপরাধীরা ভয়ংকর অপরাধ করে চলেছে। মোবাইল ফোনে ভুয়া মেসেজ দিয়ে নম্বর হ্যাক করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ লোপাট করার মতো ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এছাড়া আরেকটি বড় অপরাধ প্রবণতা হলো- ইন্টারনেটে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো। আমরা প্রায়ই সংবাদ মাধ্যমে ইন্টারনেটকেন্দ্রিক প্রতারণা ও অপরাধের খবর পাচ্ছি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টরাই বলছেন, এ সংক্রান্ত অপরাধের মাত্রা আরো বেশি, অনেক অপরাধের খবরই সংবাদ মাধ্যমে আসে না। মান-সম্মানের ভয়ে অনেকে এ রকম অপরাধের শিকার হয়েও থানা-পুলিশ কিংবা অন্য কোনো সংস্থার কাছে অভিযোগ করছেন না। ফলে অনেক ঘটনাই বিচারের আওতায় আসছে না আর যেগুলো আসছে, সেগুলোরও অনেক ক্ষেত্রে অপরাধীদের শনাক্ত করা যায় না। এক্ষেত্রে আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। মনে রাখতে হবে, সাইবার অপরাধ যেমন বাড়ছে তেমনি তা দমনেও অপরাধ তদন্ত বাহিনীকে প্রশিক্ষিত হওয়া দরকার। প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হচ্ছে এবং অপরাধীরা সে প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে অপরাধ করে চলেছে। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে যারা মাঠপর্যায়ে অপরাধ তদন্তে কাজ করছেন তাদেরও এ ব্যাপারে দক্ষতা বাড়াতে হবে। দেশের নিরাপত্তা এবং সুনাম রক্ষার স্বার্থে, সাইবার অপরাধী শনাক্ত এবং দমনে প্রযুক্তিপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গড়ে তোলার বিকল্প থাকতে পারে না। পাশাপাশি প্রয়োজন হয় যুগোপযোগী আইন। দেশে এখনো সেগুলো গড়ে ওঠেনি। বিশ্বের অনেক দেশ এই বিষয়ে আইন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে আইনের আওতায় এনেছে। আমাদেরও সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়