চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা : চালকের সহকারী শাহীরুল এখন কোটিপতি

আগের সংবাদ

তিস্তার তাণ্ডবে লালমনিরহাটে পথে বসেছে হাজারো পরিবার

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপে সবার উপরে সাকিব

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একের পর এক মাইলফলক স্পর্শ করছেন সাকিব আল হাসান। শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গাকে পেছনে ফেলে হয়েছেন টি-টোয়েন্টির সেরা উইকেট শিকারি। বিশ্বকাপে বাছাইপর্বের তিন ম্যাচে ৯ উইকেট তুলে তিনি শহিদ আফ্রিদির সঙ্গে যৌথভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেরা উইকেট শিকারি হন। আর গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২ উইকেট তুলে সবাইকে ছাড়িয়ে এককভাবে সিংহাসন দখল করেছেন টাইগার অলরাউন্ডার।
ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসান স্বপ্নের মতো এক আসর কাটিয়েছেন। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসরে এসেই একের পর এক ঝলক দেখাচ্ছেন টাইগার অলরাউন্ডার। যদিও আসরের শুরু একদমই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। সংযুক্ত আরব আমিরাতে মূলপর্বে যাওয়ার আগে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ওমানে প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ রানে হারে বাংলাদেশ। তবে ওই ম্যাচ বাংলাদেশ হারলেও রেকর্ড গড়েন সাকিব আল হাসান। ১৭ রানের বিনিময়ে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ২ উইকেট শিকার করেন তিনি। ফলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি (১০৭) মালিঙ্গাকে পেছনে ফেলে ১০৮ উইকেট নিয়ে সবার উপরে উঠে আসেন সাকিব। এদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে ৩৯ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিল পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি। আসরে ১০ উইকেট ফেলে সাকিব তাকে টপকে বনে যাবেন টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট। গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩ ওভারে ১৭ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট তুলে আসরে ১১ উইকেট পেয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এখন সাকিব। বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচে এখন তার উইকেট সংখ্যা ৪১।
অন্যদিকে ব্যাট হাতে ৬৮৫ রানের সঙ্গে ৪১ উইকেট বিশ্বকাপ ইতিহাসে সেরা অলরাউন্ডার এখন সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপের শুরুর আগে এসব রেকর্ড গড়তে সাকিবের প্রয়োজন ছিল ২৭ রান ও ১০ উইকেট। এর আগে প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট হাতে সাকিব ২৮ বল খেলে ২০ রান করেন আর বল হাতে ১৭ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন ২ উইকেট। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ২৯ বলে ৪২ রান এবং বল হাতে ২৮ দিয়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। আর বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিজেদের শেষ ম্যাচে সাকিব পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৭ বলে ৪৬ রান করেন। আর বল হাতে বিধ্বংসী রূপে মাত্র ৯ রান দিয়ে তুলে নেন ৪ উইকেট। আর গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাট হাতে ১০ রান এবং বল হাতে ২ উইকেট তুলে নেন সাকিব।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিবের অভিষেক ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর তিনি একে একে খেলেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ছয়টি আসর, আর চলমান রয়েছে তার সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যাত্রা। বিশ্বকাপে সাকিব কাল পর্যন্ত খেলেছেন ২৮টি ম্যাচ। বিশ্ব আসরে ২৭ ইনিংসে তিনি সংগ্রহ করেছেন ৬৭৫ রান। বিশ্বকাপে সাকিবের সর্বোচ্চ ৮৪ রানের ইনিংস পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১২ সালে শ্রীলংকার মাটিতে। আসরগুলোতে সাকিবের কোনো শতক না থাকলেও আছে তিনটি অর্ধশতক রানের ইনিংস। আর বল হাতে সাকিব কাল পর্যন্ত ২৯ ম্যাচ থেকে নিয়েছেন ৪১টি উইকেট। এতদিন বিশ্বকাপে তার সেরা বোলিং ফিগার ছিল ১৫ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট, ২০১৬ সালে ওমানের বিপক্ষে। আর গতকাল পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে নেয়া ৯ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট বিশ্বকাপে এখন তার সেরা বোলিং ফিগার।
বিশ্বকাপে সাকিব ৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনবার, ৩ উইকেট চারবার, ২ উইকেট পাঁচবার আর এক উইকেট করে নিয়েছেন সাত ইনিংসে। ব্যাটে-বলে পারদর্শী টাইগার অলরাউন্ডার বিশ্বকাপে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন তিনবার। এর মধ্যে দুইবার চলতি আসরেই।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অলরাউন্ডারদের মধ্যে ৫৯৩ রান আর ১২ উইকেট নিয়ে ভারতের যুবরাজ সিং এখন দুইয়ে নেমে এসেছে। ৫৪৬ রান ও ৩৯ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা তিনে পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি। এদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৩৪ ম্যাচে ৩৯ উইকেট নিয়ে উইকেট শিকারির তালিকায় এখন দুইয়ে পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৮ উইকেট নিয়ে তালিকায় এরপরের অবস্থানটি শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গার। ৩৬ উইকেট তিনে পাকিস্তানের সাঈদ আজমল। এদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে ব্যাটসম্যানদের মধ্যেও সেরা পাঁচে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে সাকিবের। ৬৮৫ রান করে ভারতের রোহিত শর্মাকে পেছনে ফেলে এখন তালিকার ছয়ে সাকিব আল হাসান। ৭১৭ রান করে পাঁচে ডি ভিলিয়ার্স। এছাড়া ৭৭৭ রান করে চারে বিরাট কোহলি, তিনে থাকা দিলশানের রান সংখ্যা ৮৯৭, দুইয়ে থাকা গেইলের রান ৯২০ আর ১ হাজার ১৬ রান নিয়ে সিংহাসন দখল করে আছেন মাহেলা জয়াবর্ধনে। কোহলি, গেইল, রোহিতরা ছাড়া অন্যরা অবসরে থাকায় সাকিব সুযোগ পাচ্ছেন সেরা পাঁচে স্থান করে নেয়ার।
এবারের আসরে সাকিবের হাতে আরো চার ম্যাচ রয়েছে। আগামী ২৭ অক্টোবর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ২৯ অক্টোবর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মোকাবিলা করবে সাকিবরা। চূড়ান্ত পর্বের চতুর্থ ম্যাচে আগামী ২ নভেম্বর বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকার। আর বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সবকিছু ঠিক থাকলে এই সব ম্যাচে মাঠে থাকবে সাকিব। তার সামনে বিশ্বকাপে এখনো একটি মাইলফলক স্পর্শ করার সুযোগ রয়েছে। বোলিংয়ে ইতোমধ্যে তিনি সবার সেরা হয়েছেন। এবার তার চোখ ব্যাটিংয়ের দিকে। ৬৮৫ রান করে সাকিব এখন বিশ্বকাপ ইতিহাসে সেরা ছয়ে অবস্থান করছেন। আর ৩৩ রান করতে পারলেই তিনি পৌঁছে যাবেন বিশ্বকাপ ইতিহাসে সেরা পাঁচের মাইলফলকে। এরপর তার বাকি লড়াইটা চলবে ভারতের বিরাট কোহলির সঙ্গে। কোহলি ৭৭৭ রান নিয়ে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছেন। তিনে থাকা শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান তিলকারতেœ দিলশানের রান সংখ্যা ৮৯৭। সুতরাং সাকিবের সামনে সুযোগ থাকবে বিশ্বকাপ শেষে সেরা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় তিনে জায়গা করে নেয়ার।
তবে সাকিবকে এ বিশ্বকাপে কোহলির পাশাপাশি প্রতিযোগিতা চালিয়ে যেতে হবে রোহিত শর্মার সঙ্গেও। ৬৭৩ রান দিয়ে সাকিবের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন রোহিত। চলতি বিশ্বকাপে চার ম্যাচ খেলে তার রান সংখ্যা ১২৮। অন্যদিকে বিশ্বকাপে ভালো ব্যাটিং করে যাচ্ছে বাংলাদেশের ওপেনার নাইম শেখ। তিনি তিন ম্যাচ খেলে তার সংগ্রহ ১২৬ রান। এদিকে সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এসে ফিফটির দেখা পেয়েছে বাংলাদেশের আরেক উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়