শাহজালাল বিমানবন্দর : পাকস্থলীতে করে ইয়াবা পাচারের সময় গ্রেপ্তার ১

আগের সংবাদ

নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে বাড়ছে সহিংসতা

পরের সংবাদ

বইপাঠ > তাহমিনা কোরাইশীর গল্পেরা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তাহমিনা কোরাইশী আমাদের সাহিত্যাঙ্গনে পরিচিত নাম। ছড়া, কবিতা ও গল্পের ভুবনে তার নিত্য বিচরণ। প্রচণ্ড গতিতে লিখতে পারেন। বলা যায় দুহাতে লিখে চলেন। লিটিল ম্যাগ, দৈনিকের সাপ্তাহিক সাময়িকীতে প্রায়ই চোখে পড়ে তার লেখা। ইতোমধ্যে ২৭টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
পরিবারে সাংস্কৃতিক আবহে বড় হয়ে ওঠা। শিশু বয়সেই হাতে উঠেছে কলম। ছড়া-কবিতা দিয়ে শুরু। ঢাকায় জন্ম ও বসবাসের সুবাদে ইংরেজ শাসনের অবসানের পরে আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতির নতুন বেগবান ধারাটির সঙ্গে পরিচয় ঘটে অল্প বয়সেই। দেশের খ্যাতিমান শিল্পী সাহিত্যিক সংস্কৃতজনের সহচার্য পেয়েছেন শৈশবে। কৈশোরে খুব কাছ থেকে দেখেছেন স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কমার্শিয়াল কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘ ২৭ বছর চাকরি করেছেন।
এসব কিছুই তার মানস গঠনে রেখেছে ভূমিকা। তিনি উদার, সহজ সরল, বন্ধুবৎসল। সর্বদা হাসিখুশি এক মানুষ। তার লেখাতেও এর প্রভাব দেখা যায়। ইতিবাচকতা তার লেখার উল্লেখযোগ্য দিক। ছড়াগুলি পাঠে তাই বাজে আনন্দধ্বনি। কবিতা হয় মানবিক। গল্পগুলিতেও জীবনের কঠিন বাস্তবতাকে খুব সাবধানতার সাথে উপস্থাপন করেন। যেন সেসব পাঠক মনকে বেশি পীড়িত না করে।
সম্প্রতি তার ৫০টি গল্প নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। সংকলনের নাম ‘গল্প প্রিয় পঞ্চাশ’। নামটি আমাদের ইঙ্গিত দেয়- গ্রন্থভুক্ত গল্পগুলি তার নিজের রচনার ভেতর সবচেয়ে প্রিয়। এবং সেই সঙ্গে ভালো রচনাও বটে।
কেমন সেই গল্পগুলো? একসঙ্গে কয়েকটি গল্প পড়া হলে লেখকের লেখনী, দর্শন ও চিন্তা সম্পর্কে অনেকটাই জানা হতে পারে। তাহমিনা কোরাইশীর গল্প কি তাকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে? এ প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই মনে আসে।
তাই তার কয়েকটি গল্পের মূলটা কেমন তা দেখা যাক প্রথমে।
এই গ্রন্থের প্রথম গল্পটির নাম ‘অহল্যা যামিনি’।
অনুস্বর নামের এক নারী গল্পের প্রধান চরিত্র। ক্যারিয়ারিস্ট বাবা-মায়ের সন্তান অনুস্বরের ছোটবেলা কেটেছে নিঃসঙ্গতায়। মেয়ের জন্য লেখাপড়া ও অন্য সব কিছুর সুবন্দোবস্ত তারা নিশ্চিত করতেন। শুধু একটি শিশুর বিকাশের জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার- প্রিয় মানুষের, বাবা-মায়ের সহচার্য সেটাই অনুস্বর পায়নি। মায়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে তার। শেষপর্যন্ত বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়েছে। অনুস্বর বিয়ে করেছে। বিয়ের পর স্বামীর পরিবারে এসে সে ভালোবাসা, হার্দিক সহচার্য পায়। এ পরিবারের সবাই তাকে ভালোবাসা আর সম্মানে ভরিয়ে তোলে। সে সুখী ও পরিতৃপ্ত হয়। একসময় অনুস্বরের গর্ভে সন্তান আসে। এসময় তার মায়ের মৃত্যু ঘটে। মৃত্যুর পর মায়ের ডায়েরি পড়ে জানতে পারে মা শেষপর্যন্ত নিজের সন্তানের প্রতি অবহেলার কথা স্মরণে কষ্ট পেয়েছে, অনুতাপ করেছে। মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অনুস্বর পড়ে যায়। পতনজনিত আঘাতে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কায় সে চিন্তিত হয়ে পড়ে। জন্মের পরে সন্তান দেখা যায় সন্তানের শ্রবণ সমস্যা রয়েছে। অনুস্বর ভেঙে পড়ে না। ডাক্তারের পরামর্শ আর তার পরিবারের সকলের নিরন্তর চেষ্টায় একদিন শিশুটি মা বলে ডেকে ওঠে। শিশুর এই ডাক অনুস্বরকে পূর্ণতা দেয়। তার নারীজীবন সার্থক করে তোলে।
গল্পটি নারীর চিরন্তন মাতৃত্বের আখ্যান। সন্তানের প্রতি নারীর দায়িত্ব, কর্তব্য পালনে অবহেলা কাক্সিক্ষত নয় লেখকের কাছে- এমনই প্রতিয়মান হয়।
‘কুয়াশার দেয়ালে যে সূযর্’ গল্পটির আখ্যান এক বীরাঙ্গনাকে নিয়ে। স্বাধীনতার বয়স ৫০। এ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ এবং এর অনুষঙ্গ, সময়, ঘটনা নিয়ে প্রচুর লেখা হয়েছে। তবু সব লেখা হয়নি। বা লেখার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি। এখনো অনেক অজানা বিষয়, ঘটনা তুলে ধরছেন কবি, কথাসাহিত্যিকরা। আগামীতেও লিখবেন। তাহমিনা কোরাইশীর এই গল্পে আলতা বানু নামের এক বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার দেখা পাওয়া যায়। অন্য সব জানা ঘটনার মতো, গ্রামের মেয়ে আলতা বানুও একদিন হঠাৎ পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। আর্মি ক্যাম্পে সে শুধু নির্মম ধর্ষণের শিকারই হয় না, একসময় অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়ে। যুদ্ধ শেষে আলতা বানুকে জন্ম দিতে হয়েছে এক অনাকাক্সিক্ষত সন্তানকে। যে সন্তানকে স্বীকার করে না। এদিকে যুদ্ধ থামলেও আলতা বানুর জীবনে শুরু হয়েছে নতুন যুদ্ধ। বেঁচে থাকার যুদ্ধ। চারপাশের লোলুপ মানুষের থাবা থেকে নিজেকে বাঁচানোর লড়াই। তারই মধ্যে একদিন একজন এসে ভালোবাসার কথা বলে। সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখায়। আলতা বানু আশায় ঘর বাঁধে। সুখে আল্লাদে কাটে কয়েকটা দিন। মাত্রই কটা দিন! মধু একদিন উধাও হয়ে যায়। তবু তার ফেরার অপেক্ষায় থাকে আলতা বানু। একরাতে ফিরে আসে মধু। অন্ধকারেও শরীরের দখল নেয়া লোকটি মধু বুঝতে পারে আলতা বানু। সে বিস্মিত হয়ে দেখে মধু বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। আলতা বানু সিদ্ধান্ত নেয়-যদি শরীর বেইচ্যাই যদি খাওন লাগব তায় অইন্যের মর্জিতে না। নিজেই নিজের শরীরের মালিক। আজ থেইক্যা শরীরই বেচুম। নিজের পছন্দ মতো খদ্দের পাইলে এই পোড়া শরীরটা দিমু, না পাইলে নাই। আর করুম না সংসার নামের এই পতিতাবৃত্তি।’ সে চলে যায় বানিয়া শান্তা পতিতালয়ে। সেখানেই তাকে খুঁজে পায় সাংবাদিক ঋতু। তাকে সুস্থ জীবন ফিরিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আলতা বানু আর কাউকে বিশ্বাস করে না।
খুবই বাস্তব কাহিনী। যুদ্ধের নিবিড় যন্ত্রণা নারীর ওপর নিপীড়ন, যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ব্যাপক মাত্রায় ঘটেছিল। যুদ্ধ শেষে সমাজে সেই নির্যাতিতাদের গ্রহণ করেনি। রাষ্ট্র তাদের নিরাপত্তা দেয়নি। দেয়নি খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান। চরম অপমান, লাঞ্ছনা আর দারিদ্র্যই তাদের প্রাপ্তি হয়েছে। পৌঢ়া আলতা বানু আমাদের অজানা অচেনা বীরাঙ্গনাদের প্রতিনিধি হয়ে প্রশ্ন করে যাচ্ছে- ওদের কী এই জীবন প্রাপ্য ছিল?
‘সাবলেট’ নামের গল্পটি যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের আর্থিক দৈন্য দশার একটি চিত্র। গত শতকের আাশির দশকে দেশের মানুষ রাজধানী অভিমুখী হওয়া শুরু করে। জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি অন্যদিকে সে অনুপাতে পরিকাঠামো নির্মাণ না হওয়ায় ঢাকা শহরে তীব্র বাসস্থান সংকট দেখা দেয়। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মধ্যবিত্ত-নিম্ন-মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস ওঠে। ঢাকায় ধেয়ে আসা মানুষের আবাসন সংকট আর অভাব- নতুন পথ খুঁজে নেয় অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে। শহরের সরকারি আবাসনে বসবাসকারী অল্প বেতনভোগী চাকরিজীবীরা বাধ্য হয়ে দু’কামরার বাসার একটি কামরা সাবলেট দিতে শুরু করেন। নতুন চাকরি পাওয়া অথবা চাকরিপ্রত্যাশী তরুণ, তরুণী, নতুন দম্পতি, বা ছোট পরিবারই এই সাবলেটের বাসিন্দা হয়। ছোট্ট বাসার মধ্যে দুটো পরিবার বসবাসের জায়গা অপ্রতুল। একই রান্নাঘর, একই বাথরুম ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে গিয়ে দুই পরিবারে নিত্য খিটিমিটি লেগে যেতো। একইসঙ্গে নতুন একটি সমস্যা অনেক পরিবারে ব্যাপক অশান্তি তৈরি করে। মানুষে মানুষে নতুন সম্পর্ক তৈরি হওয়া। এমনই একটা কাহিনী ‘সাবলেট’। মাসুম-রেখার বাসায় সাবলেট নেয় মালা আর তার স্বামী মতুর্জা। মালা অতি রূপসী। সে কারণে প্রথম থেকেই রেখা মাসুমকে নিয়ে চিন্তিত। ফলে দুজনের সম্পর্কে চিড় ধরে। রেখা তীব্র মানসিক সংকটে ভোগে। আবার সাবলেট তুলে দেবার শক্তিও তার নেই। কিছুদিন পরে মালার স্বামী মতুর্জা বিদেশ চলে যায়। সেসময় বিদেশ যাওয়ার হিড়িক পড়েছে। কে কখন কোন দেশে চলে যাচ্ছে, টেরও পাওয়া যায় না। মতুর্জা সাহেবও আগে কিছুই না জানিয়ে হুট করে বিদেশ চলে যাওয়ার আগে দুমাসের খরচের টাকা মালার হাতে দিয়ে তাকে হেফাজতে রাখার দায়িত্ব মাসুমের ওপরই দিয়ে যায়। রেখার মানসিক সংকট আরো বাড়ে। মতুর্জা সাহেব যাওয়ার পর থেকে আর কোন যোগাযোগ না রাখায় মালা ছোট একটা চাকারি জুটিয়ে নেয়। সারাদিন সে বাইরে থাকায় রেখা খানিকটা স্বস্তি পায়। তবে একদিন দুর্ঘটনা ঘটেই যায়। মালা আর মাসুমের শারীরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এবং নিয়মিত হতে থাকে।
একদিন হঠাৎ মালা চলে যায় বাসা ছেড়ে। মাসুম গোপনে গোপনে খোঁজ করে কিন্তু পায় না। রেখা আনন্দিত হয়। কিন্তু মানসিক কষ্ট তাকে কুরে কুরে খেয়ে ফেলেছিল এর আগেই। কিছুদিন পর রেখার মৃত্যু হলে মাসুম একাকী হয়ে পড়ে। অনেকদিন পরে মালার সাথে আবার দেখা হয় মাসুমের। তখন জানতে পারে মালার গর্ভে তার একটি সন্তান জন্ম নিয়েছে। কিন্তু মালা তাকে স্বামীর সন্তান পরিচয়ে পরিচিত করিয়েছে। মালা আর মাসুমের পথ দুদিকে এগোয়।
‘সিঙ্গেল মাদার’ শব্দবন্ধটি এখন অনেকটাই পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। সমাজকাঠামো সদা পরিবর্তনশীল। নতুন নতুন সমস্যা আসে মানুষের জীবনে। স্বভাবজাতভাবেই মানুষ তার সাথে সমন্বয় ঘটিয়ে ফেলে। একান্নবতী পরিবার ভেঙে একক পরিবার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেই একক পরিবারের আয়ুও অনেকক্ষেত্রেই হচ্ছে খুবই কম। বিবাহবিচ্ছেদ বেড়েছে। নারীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠায় জোড়াতালির দাম্পত্য টেনে বেড়াতে ইচ্ছুক নয়। তবে নারী সততই মাতৃত্বকাক্সক্ষী। বিচ্ছেদের পর নারীরা সন্তান লালন পালনের দায়িত্ব একাই বহন করছে। এ গল্পে লিসা তেমনই এক ‘সিঙ্গেল মাদার’। চলনে বলনে সাবলীল। অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। একমাত্র সন্তানকে সেই লালন-পালন করছে। কিন্তু তার এই বাইরের দৃঢ়তার ভেতরে বেদনার অন্তস্রোত বয়ে চলে। ফাদার্স ডে উপলক্ষে মেয়ের জন্য গিফট কিনতে এসে আপ্লুত হয়ে পড়ে নিজের বাবা না থাকার বেদনায়।
এই গল্পে লেখকের নিজস্ব সংবেদনশীলতার উপস্থিতি প্রকট। যা গল্পে ‘সিঙ্গেল মাদার’ ভাবনাকে নেতিবাচক করে তুলেছে। বিষয়টা নিয়ে খানিকটা ভিন্নমত থাকতে পারে। কিন্তু এর প্রয়োজনীয়তা এখন সমাজবাস্তবতা।
‘কাগজে কলমে’ এটিও একটি সময়কে ধারণ করা কাহিনী। একটা সময় ছিল, যখন আমেরিকা নামের সোনার দেশে যাওয়ার জন্য এদেশের মানুষ যেমন ক্ষেপে উঠেছিল, তেমনি ছিল ভিসা নামের সোনার হরিণের দুষ্প্রাপ্যতা। তবু যেতেই হবে। তাই নানা অবৈধপন্থা গ্রহণেও পিছপা হয়নি। ‘কাগজে কলমে’ বিয়ে তেমনই একটি পন্থা। সরকারি নিয়ম মেনে বিয়ে করে এমনকি অন্যের স্ত্রীকেও নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অবৈধ উপায় আরো অবৈধ কাজে উৎসাহ জোগাবে সেটা তো জানাই। যেমন ঘটে এ গল্পে- যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়ার নামে উন্মত্ত সুরাইয়া ‘কাগজে কলমে’ বোনের স্বামীর স্ত্রী হয়ে উড়াল দেয়। এবং কাগজে কলমে স্ত্রী এই পরিচয় প্রকাশ করতে অক্ষম হওয়ার বোনের স্বামী কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়।
গল্পটির নির্মিতি ভালো। সমাজ সচেতনামূলক কাহিনী। ভালো গল্প লেখা হয়েছে আবার লেখকের সামাজিক দায়িত্ব পালনও হয়েছে।
গ্রন্থের সর্বশেষ গল্প ‘গুম’। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে মিতালীর সুখের সংসার। আকাশে তারা দেখতে ভালো লাগে, ছাদে বাগান করতে ভালোবাসে সে। এমন সুখের দিনের ঘনিয়ে আসে অমানিশা। একদিন অফিস যায় মিতালীর স্বামী মাহতাব। অফিস থেকে সে হারিয়ে যায়। কেউই কোনো সন্ধান দিতে পারে না তার। থানা পুলিশ করা হয়। কিন্তু দিনদুপুরে অফিস থেকে একা বেরিয়ে মাহতাব কোথায় কার কাছে গেছে, তার কিছ্রুই হদিস পাওয়া যায় না।
গল্পটির বুনন এই পর্যন্ত চমৎকার। আমরা ঘটমান বর্তমানের একটি ছবি পরিষ্কার ফুটে উঠতে দেখি। প্রিয়জন নিখোঁজ হওয়া মানুষের অসহায়ত্ব, বেদনা, ক্ষোভ পাঠককে স্পর্শ করে। আতঙ্কিত করে।
দশ বছর পরও একাকী জ্যোৎস্নাস্নাত হতে হতে মিতালী অপেক্ষা করে মাহতাবের প্রত্যাবর্তনের। সব নিখোঁজ মানুষের স্বজনের প্রতিনিধি হয়ে।
এই ছয়টি গল্প রচনায় তাহমিনা কোরাইশী নিজেকে গল্পকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বেশ দৃঢ়ভাবে। তিনি আরো লিখবেন। ‘সবচেয়ে প্রিয়’ নামে আরো একটি গল্পগ্রন্থ আমরা তার কাছে আশা করতেই পারি।
গল্প প্রিয় ৫০ গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে বেহুলাবাংলা। মানসম্পন্ন বাঁধাই। নান্দনিক প্রচ্ছদ। ঝরঝরে ছাপা।
৩১৩ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য বেশ কম, মাত্র ৫৫০ টাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়