শাহজালাল বিমানবন্দর : পাকস্থলীতে করে ইয়াবা পাচারের সময় গ্রেপ্তার ১

আগের সংবাদ

নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে বাড়ছে সহিংসতা

পরের সংবাদ

গল্প > ধাক্কালা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নাজু। বয়স ১৪ বা ১৫ হবে। বিশ্বরোড ও বিমানবন্দর সড়ক যেখানে এসে মিলেছে, সেখানে যে ফ্লাইওভার; নাজু ওই ফ্লাইওভারের নিচে থাকে। দিন-রাত সারাক্ষণ। রাতে ঘুমায় ওখানেই।
নাজুর বাবা কে বা কোথায় আছে, সে বিষয়ে নাজু কিছুই জানে না। ওর মায়ের কথা মনে আছে। মা-সহ নাজু থাকতো ফ্লাইওভারের উল্টোদিকে রেললাইনের কাছে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত ওয়াগনের ভেতর। ছোটবেলা থেকে ওখানেই মার সঙ্গে থেকেছে।
ওর মায়ের কাজ কি নাজু আগে বুঝতো না। দেখতো সন্ধ্যা হলেই ওর মা সুন্দর করে সেজে রাস্তার পাশে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকতো। তারপর একসময় কোনো না কোনো লোকের সঙ্গে চলে যেতো। যাওয়ার সময় বলে যেতোজ্জ নাজু খাইয়া ঘুমাইস।
নাজু খেয়েই ঘুমাতো। সকালবেলা মা এসে গোসল করে শুয়ে ঘুমাতো। প্রায় সারাদিনই ঘুমিয়ে থাকতো। তারপর বিকেল হলে ঘুম থেকে উঠে দোকান থেকে খাবার এনে খেয়ে সেজে রাস্তার পাশে গিয়ে দাঁড়াতো।
নাজুর খুব জানতে ইচ্ছে করতো প্রতিরাতে মা কোথায় যায়। নাজুর খুব ইচ্ছে করতো মায়ের গলা ধরে ঘুমাতে। কিন্তু সে মাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেনি বা গলা ধরে ঘুমানোর কথা বলতে পারেনি।
একদিন নাজু সাহস করে মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলজ্জ মা আমাগো এইহানের সুমন, লতা ওগো বাপ আছে। আমার বাপ কই? নাজুর কথা শুনে মা বলেজ্জ মরছে। তোর জন্মের আগে মরছে।
নাজু জিজ্ঞাসা করেজ্জ কেমনে মরলো?
মা বলেজ্জ সর লাত্থি মারমু। বাপের সাধ হইলে ওই যে দ্যাখ রাস্তার ওপর খাড়ানো যে কোনো ব্যাডারে বাপ মনে কইরা কোলে উইঠা বস।
মার কথা নাজুর ভালো লাগে না। সে চুপ করে থাকে। সে ভাবে তার বাপ কীভাবে মরলো।
উত্তর পায় না। একদিন সে সুমনকে জিজ্ঞাসা করলো। বললোজ্জ সুমন তোর বাপ আছে। ওই যে স্টেশনের গেটে পান-সিগারেট বেচে। আমার বাপ কই? হেয় কী করতো?
সুমন হো হো করে হেসে ওঠে। বলেজ্জ তোর বাপ থাকবো কেমনে? তুইতো জাউরা। তোর মা তো খানকি।
রেগে যায় নাজু। সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চড় মারে সুমনকে। বলেজ্জ আমার মারে নিয়া কুনো কথা কইলে খুন করমু।
সুমনকে খুন করতে হয় না। কারণ মা’র খেয়ে সুমন তার বাবার কাছে গিয়ে বিচার দেয়। তার বাবা, মা, খালা, লতার বাবাসহ অনেকে এসে নাজুকে ধরে। তারপর লাঠি দিয়ে পিটায়। নাজু চিৎকার করে কাঁদে।
তার কান্না শুনে মা আসে। মা সুমনের বাবার পায়ে ধরে অনুরোধ করে মাফ করে দেয়ার জন্যে। কিন্তু সুমনের বাবাসহ সকলে ক্ষমা করতে রাজি হয় না। শেষে সকলে একমত হয়ে নাজু ও তার মাকে তাড়িয়ে দেয় ওয়াগনের ভেতর থেকে।
মা ও নাজু বিতারিত হয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর মা নাজুকে স্যান্ডেল দিয়ে পিটায়। বলেজ্জ হারামজাদা যেই দিকে মন চায়- যা।
নাজু দাঁড়িয়ে থাকে। তার মা একটা বাসে উঠে চলে যায়। নাজু অনেক সময় দাঁড়িয়ে থেকে ভাবেজ্জ কোথায় যাবে? শেষে কোনো যাওয়ার জায়গা খুঁজে না পেয়ে নাজু রাস্তা পার হয়ে এই ফ্লাইওভারের নিচে এসে স্থায়ী হয়। তাও বছর দুই আগে। নাজু জানে না ওর মা কোথায় আছে? তবে এখন সে বোঝে তার বাবা নেই। সে বোঝে প্রতিরাতে সেজে মা কোথায় যেতো। সে বুঝলেও এ নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। শুধু মায়ের জন্যে মায়া হয়। মাকে দেখতে ইচ্ছে করে। রাতে ফ্লাইওভারের নিচে শুয়ে থেকে চোখ বন্ধ করলে মায়ের মুখটা ভেসে ওঠে। ক্লান্তি ও কষ্টমাখা মুখটা নিয়ে মা বলছেজ্জ খাইছিস?
মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখে মাকে। নাজু আশ্চর্য হয়। সে কখনো মায়ের পাউডার মাখা ফর্সা মুখ, লাল লিপিস্টিক দেয়া ঠোঁট দেখে না। সবসময় দেখে সারাদেহে ক্লান্তিভরা বিষণ্ন মুখ। যে মুখে পাউডার নাই। ঠোঁটে লিপিস্টিক নাই।
নাজু ফ্লাইওভারের নিচে থেকে একটা নতুন ধরনের কাজে পারদর্শী হয়েছে। এ কাজটা এখানের আর কেউ করে না। ফ্লাইওভারের নিচে যারা থাকে, তাদের মধ্যে আলী রিকশা চালায়। মালিকের গ্যারেজ থেকে সকালে রিকশা নিয়ে বের হয়। রাতে গ্যারেজে ফিরিয়ে দেয়। মাসে একবার গ্রামের বাড়ি যায়। সেখানে তার বউ-বাচ্চারা থাকে। সারা মাসের রোজগার জমিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়ি যাওয়ার আগে আলী বলেজ্জ নাজু, ভাতিজা কাইল বাড়ি যামু। তোমার চাচিরা আমার পথ চাইয়া বইসা আছে। বাড়ি যাওয়ার আগে আলী খুব খুশি থাকে।
এখানে থাকে তাহের। নাজুর থেকে বয়সে বড় হলেও নাজুর সঙ্গে খুব অন্তরঙ্গ। তাহের সারাদিন বাসে বাসে ঘুরে পকেট মারে। যা আয় করে তার প্রায় সবটা ব্যয় করে সিগারেট-গাঁজা খেয়ে। সে নাজুকে সিগারেট-গাঁজা খাওয়াতে চেষ্টা করে। নাজু রাজি হয় না। তাকে পকেটমারের কাজে যুক্ত করতে চেষ্টা করে। কিন্তু নাজুকে কোনোভাবেই যুক্ত করতে পারে না। এখানে থাকে বেশ্যার দালাল লোকমান, নেশাখোর সাদেক, ছিচকে চোর মকবুলসহ আরো অনেকে। এদের সবার থেকে আলাদা নাজুর কাজ।
এই ফ্লাইওভারের কাছাকাছি কোনো সিএনজি বা প্রাইভেট কার নষ্ট হয়ে গেলে, নাজু সেটিকে ঠেলে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। কাজটা কষ্টকর হলেও তার ভালো লাগে। কারণ একাজ প্রতিদিন সারাক্ষণ করতে হয় না। সপ্তাহে এক-দুটি পেলেই হয়। তাতে যে টাকা পাওয়া যায় তাতেই নাজুর এক সপ্তাহ চলে যায়। এখানে সবাই তাকে ধাক্কালা বলে ডাকে।
ধাক্কালা নাজু সারাদিন ফ্লাইওভারের নিচে বসে থাকে। দোকান থেকে খাবার কিনে এনে খায়। তাহের, লোকমান, সাদেক, মকবুল যখন যাকে পায় তার সঙ্গে গল্প করে।
কিন্তু গল্পের মধ্যে যদি নোংরা কথা ওঠে তখন নাজু সে গল্পকে সুকৌশলে এড়িয়ে যায়। তার ওসব কথা শুনতে ভালো লাগে না। ওরা নাজুকে সিগারেট খাওয়াতে চেষ্টা করেছে। নাজু রাজি হয়নি। ওর সিগারেট, মদ, গাঁজা এসব খেতে কখনোই ইচ্ছে হয় না। এ নিয়ে কখনো কখনো বন্ধুরা বিদ্রুপ করে। নাজু তা আমলে নেয় না। তবে সে একাকী থাকলে তার মায়ের কথা মনে হয়। মায়ের মুখটা ভেসে ওঠে। কখনো সে নিজের অজান্তে খুব নিম্নস্বরেজ্জ মা, মাগো বলে ডেকে ওঠে।
প্রতিদিনের মতো আজো সে ফ্লাইওভারের নিচে একাকী বসে মায়ের কথা ভাবছিল। তখন দুপুরবেলা। বৈশাখ মাসের প্রচণ্ড গরম। সে সময় একজন মহিলা তার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলোজ্জ এই ছেলে এখানে কাউকে কি পাওয়া যাবে, যে আমার বন্ধ গাড়িটা ঠেলে কাছের গ্যারেজ পর্যন্ত নিয়ে যাবে?
মহিলার কথা শুনে তার দিকে তাকায় নাজু। মুহূর্তে নাজুর অবাক লাগে। চোখ দুটো বড় হয়ে ওঠে। কী সুন্দর! প্রতিমার মতো। ওই যে দেয়ালে লাগানো সিনেমার পোস্টার, ওইজ্জপোস্টারের নায়িকার চেয়েও সুন্দর।
নাজু উঠে দাঁড়ায়। বলেজ্জ ম্যাডাম, আমি ঠেলবো।
মহিলা বলেজ্জ পারবে তো?
নাজু দৃঢ়তার সঙ্গে বলেজ্জ বন্ধ গাড়ি ঠেলাই তো আমার কাজ। সবাই আমারে ধাক্কালা কয়। কিন্তু আমার নাম নাজু। আমি এইহানেই থাহি।
মহিলা বলেজ্জ বেশ চলো। ওই যে আমার গাড়ি। আচ্ছা দাঁড়াও, ভীষণ গরম। মুখটা একটু ধুয়ে নেই।
মহিলা দু’কদম এগিয়ে ফ্লাইওভারের পিলারের কাছে গিয়ে তার হাতের ব্যাগটা রাখলো। তারপর আরেকটু এগিয়ে হাতের বোতল থেকে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে বললোজ্জচলো।
নাজু ও মহিলা এগিয়ে গেল গাড়ির কাছে। নাজু বললোজ্জ ম্যাডাম আপনের ড্রাইভার নাই।
মহিলা বললোজ্জ না।
নাজু বললোজ্জ ঠিক আছে। আপনে গাড়িতে ওঠেন। স্টেয়ারিং ধরেন। আমি ঠ্যালতাছি।
মহিলা গাড়ির ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসলো। নাজু একা ঠেলতে লাগলো গাড়ি।
গাড়ি ঠেলার কৌশল আছে। নাজু তা জানে। বন্ধ দাঁড়ানো গাড়ি প্রথমে কৌশল করে ঠেলে গতি এনে তারপর স্বাভাবিকভাবে ঠেললেই চলে।
নাজু ঠেলে একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে গাড়িটা। প্রচণ্ড গরম বলে সে ঘামছে। তবে ছোট গাড়ি বলে কষ্ট কম হচ্ছে।
নাজু গাড়ি ঠেলছে আর ভাবছেজ্জকী সুন্দর ম্যাডাম! লম্বা, ফর্সা। লম্বা চুল। টানা টানা চোখ।
ম্যাডামকে দেখে নাজুর অন্যরকম ভালো লাগে। ম্যাডামের শরীর থেকে ভেসে আসছিল সুগন্ধ। দাঁড়িয়ে যখন কথা বলছিল তখন এতো কাছে ছিল যে নাজু লজ্জায় তার মুখের দিকে তাকাতে পারেনি। কিন্তু যখন মুখ ধুয়ে এলো তখন নাজু সরাসরি তাকে দেখেছে। তখনই তার ভালো লেগে গেল। নাজু মনে মনে বলছেজ্জ মাইয়া মানুষ এমনেই সুন্দর। হেরপর ম্যাডাম আলাদা সুন্দর। আল্লা হেরে স্পেশালি বানাইছে। আহ্ মন ভইরা যায়। চোখ ঝলসাইয়া যায়।
নাজু ভাবে গতমাসে সিনেমা হলে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে যে সিনেমা দেখেছে, সেই সিনেমার নায়িকা কি ম্যাডামের চেয়ে সুন্দর?
নাজু গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে ভাবেজ্জ কে সুন্দর বেশি? নায়িকা না ম্যাডাম, নাজু শেষে সিদ্ধান্ত নেয়জ্জনা ম্যাডামই সুন্দর। ম্যাডামের কাছে নায়িকা পাত্তাই পাবে না।
নায়িকার চেয়ে ম্যাডাম অনেক বেশি সুন্দর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে খুব আনন্দ পায় নাজু। তার খুব ভালো লাগে ম্যাডামের কথা ভাবতে।
নাজু ভাবতে ভাবতে গাড়ি ঠেলে নিয়ে আসে গ্যারেজের কাছে। ম্যাডাম গাড়ির ভেতর থেকে বলেজ্জ দাঁড়াও। আর লাগবে না।
গাড়ি দাঁড় করিয়ে গ্যারেজের লোক ডেকে কথা বললো ম্যাডাম। তারপর ব্যাগ থেকে একটা ৫০০ টাকার নোট বের করে দিয়ে বললোজ্জ ধাক্কালা নাজু, নাও।
নাজু হাত বাড়িয়ে টাকাটা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো সেখানে। ম্যাডাম গ্যারেজের লোকটার সঙ্গে কথা বলতে লাগলো। কিছু সময় পর ম্যাডাম নাজুকে দেখে বললোজ্জ ৫০০ টাকা দিলাম। তাতেও হয় না। আরো চাও। ছোটলোক।
ম্যাডামের কথায় নাজুর খুব লজ্জা লাগলো। সে সোজা হেঁটে ফ্লাইওভারের দিকে এগোলো। আসার সময় সে বারবার নিজেকে ধিক্কার দিলো। কেনো সে দাঁড়িয়ে থাকলো?
আসলে নাজু দাঁড়িয়ে ছিল ম্যাডামকে আরেকটু সময় দেখার লোভে। অথচ ম্যাডাম ভাবলো আরো টাকার জন্যে।
লজ্জা, গøানি ও ম্যাডামের সৌন্দর্যের কথা ভাবতে ভাবতে নাজু সন্ধ্যার পরপরই ফ্লাইওভারের নিচে চলে আসে। এসে নিজের শোবার জায়গায় দেখে ম্যাডামের ব্যাগটা। যেটা রেখে ম্যাডাম মুখ ধুয়েছিল। ভুলে ওটা নিয়ে যায়নি।
নাজু ব্যাগটা ধরলো। দেখলো খুব ভার। ওজন চার-পাঁচ কেজিতো হবেই। সে ব্যাগটা খুলে দেখলো একটা কম্পিউটার। যা বড়লোকরা কোলের ওপর রেখে কী যেন করে।
নাজু ব্যাগটা নিয়ে পিলারের কোনায় তার ছেড়া কাঁথা-কম্বলের নিচে রাখলো। সযতেœ লুকিয়ে রেখে সে ভাবতে লাগলো। তার মনে হলো, ম্যাডাম ব্যাগের খোঁজে নিশ্চয়ই আসবে। নাজু ভাবলো ম্যাডাম আসা মাত্রই বলবেজ্জ ম্যাডাম আপনের ব্যাগ। দেহেন সব ঠিক আছে কিনা? আমি পাহারা দিয়া রাখছি।
ম্যাডাম খুশি হয়ে ব্যাগটা নিয়ে বলবেজ্জ বখশিস নাও নাজু।
নাজু বলবেজ্জ না। বখশিস নেবো না।
ম্যাডাম বলবেজ্জ তাহলে কী চাও।
নাজু বলবেজ্জ আপনে এই পথ দিয়া যাওনের সময় একবার আমারে দেইখা যাবেন।
একথা ভেবে নাজুর লজ্জা লাগতে লাগলো। ছিঃ, এমন কথা কি ম্যাডামরে কওয়া যায়।
নাজু ভাবলো বলবেজ্জ ম্যাডাম বখশিস লাগবে না। আমারে আপনার বাসার কাজের লোক কইরা নেন। আমি আপনের বাসায় থাকমু আর আপনেরে দেখমু।
নাজুর আবার লজ্জা লাগতে লাগলো। কী ভাবছে সে? এসব কেন ভাবছে।
নাজুর শরীরটা ক্লান্ত লাগছে। অনেকটা পথ গাড়ি ঠেলেছে। তার ঘুম পাচ্ছে। রাস্তার সরকারি আলো জ্বলছে। কিন্তু সে আলো এই পিলারে বাধা পায় বলে নাজু যেখানে শুয়েছে সেখানে অন্ধকার। নাজু অন্ধকারের মধ্যে ম্যাডামের ব্যাগটা বুকে জড়িয়ে শুয়ে থাকলো। ব্যাগটা বুকে নেয়ার পর নাজু অনুভব করলো সেটা ব্যাগ নয়। ম্যাডামের সুন্দর নরম শরীর। নাজু বিভিন্নভাবে হাতের স্পর্শে ম্যাডামকে স্পর্শ করতে করতে ঘুমিয়ে গেলো। হঠাৎ একটি শক্ত হাত তার দেহকে টেনে তুললো। ব্যাগটা তার বুকে ধরা। ঘুমন্ত নাজুকে ওই শক্ত হাত দাঁড় করালো। নাজু ব্যাগটা বুকে ধরে রাখলো। এবার ওই শক্ত হাত ব্যাগটাকে টান দিলো। নাজু চিৎকার করে বললোজ্জ না দেবো না।
ঠিক সে সময় তার মাথায় কে যেন শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করলো। নাজুর মাথাটা ঘুরে উঠলো। বমি বমি লাগলো। নাজু শুনতে পেলো কে যেন অস্পষ্ট স্বরে বলছেজ্জ গাড়ির ভেতর থেকে চুরি করেছে। সে শুনতে পেলো নারী কণ্ঠ। বলছেজ্জ চোর।
নাজু বলতে চেষ্টা করলো, না আমি চোর না। বলতে পারলো না। এসময় নাজু অস্পষ্টভাবে দেখলো, তার মা এসেছে। সে আস্তে করে বললোজ্জ মা। মাগো।
তার মুখ দিয়ে কোনো কথা বেরুলো না। নাজু একটু একটু করে এগিয়ে মায়ের হাতটা ধরলো। তারপর বললোজ্জচলো মা যাই।
নাজু ও তার মা হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে গেলো সেই পুরনো পরিত্যক্ত ওয়াগনের দিকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়