রাশিয়ার একাতেরিনবার্গে ভেজাল মদপানে মৃত্যু ১৮

আগের সংবাদ

মরুর বুকে গতির ঝড় অব্যাহত

পরের সংবাদ

শেখ রাসেল দিবস : খুনিরা মানবতাকে হত্যা করেছিল

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নানা আয়োজনে গতকাল সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন এবং ‘শেখ রাসেল দিবস-২০২১’ পালিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথমবারের মতো পালিত দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল- ‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’।
সকালে গণভবন থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে শিক্ষা, ক্রীড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিল্পকলা-সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু- এ ৫টি ক্যাটাগরিতে প্রতিটি ১ ভরি করে ১০টি ‘শেখ রাসেল স্বর্ণ পদক’, ১০টি ল্যাপটপ ও সার্টিফিকেট দেয়া হয়। এ ছাড়া শেখ রাসেল অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের ১০টি ল্যাপটপ এবং লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলমেন্ট প্রকল্পের (এলইডিপি) আওতায় প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ উপার্জনকারীদের মাঝে ৪ হাজার ল্যাপটপ দেয়া হয়। এর আগে সকালে দিবসটি উপলক্ষে গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্মারক ডাক টিকেট, উদ্বোধনী খাম এবং সিলমোহর অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সকালে বনানী কবরস্থানে শেখ রাসেলের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এর পর আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটি এবং সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম-হানিফ, ডা. দীপু মনি, তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
এছাড়া তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ বিকাল ৩টায় ‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে এবং সন্ধ্যা ৬টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘কনসার্ট ফর পিস এন্ড জাস্টিসে’র আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
দিবসটি উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ রাসেল বাঙালির শৈশবের প্রতীক : শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, শহিদ শেখ রাসেল বাঙালির শৈশবের প্রতীক। প্রতিভাময় শেখ রাসেল ঝরে না পড়লে আজ তার ৫৮ বছর পূর্ণ হতো। দেশ ও জাতিকে দেয়ার এটাই হতো সেরা সময়। জাতি তার সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শেখ রাসেলের জীবনকাল খুব সংক্ষিপ্ত হলেও তিনি বাঙালি জাতির ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা, শেখ রাসেলকে নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক মো. জহুরুল ইসলাম রোহেল, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার, অতিরিক্ত সচিব রঞ্জিত কুমার দাসসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ রাসেলকে নয়, খুনিরা মানবতাকে হত্যা করেছে : শেখ রাসেল দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, শেখ রাসেলকে হত্যা করে খুনিরা মানবতাকে হত্যা করেছে। আত্মস্বীকৃত খুনিরা শিশু রাসেলকে হত্যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু খুনিরা তা পারেনি। বাংলাদেশ ও বিশ্বের কোটি কোটি শিশু, কিশোর ও তরুণ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করে বিকশিত হচ্ছে। স্বাধীনতাবিরোধী ও ষড়যন্ত্রকারীদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।
গতকাল বিকালে ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন শিশু একাডেমির মহাপরিচালক জ্যোতি লাল কুরী। সকালে শিশু একাডেমি আর্ট গ্যালারিতে ছিল শিশুদের আঁকা ছবি এবং বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ছবির প্রদর্শনী। দুপুরে শিশু একাডেমির অডিটোরিয়ামে প্রদর্শিত হয় ‘একাত্তরের মিছিল’, ‘খুকু ও কাঠ বিড়ালি’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধ ও জীবন’ শিশুতোষ চলচ্চিত্র। শিশু একাডেমির মৃত্যুঞ্জয়ী শেখ রাসেল গ্যালারিতে প্রদর্শিত হয় শেখ রাসেলের আলোকচিত্র। আলোচনা পর্ব শেষে কেক কাটা হয় ও শিশুদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের এই দিনে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্ম নেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রæ ঘৃণ্য ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি তিনি। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নরপিশাচরা নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়