রাশিয়ার একাতেরিনবার্গে ভেজাল মদপানে মৃত্যু ১৮

আগের সংবাদ

মরুর বুকে গতির ঝড় অব্যাহত

পরের সংবাদ

শেখ রাসেল দিবসে সংস্কৃতি অঙ্গনে নানা আয়োজন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। ’৭৫-এর ট্র্যাজেডিতে ঘাতকদের বুলেটে জর্জরিত হয় শিশু রাসেলও। খুনিদের কালো থাবা থেকে রক্ষা পায়নি সে দিনের ছোট্ট শিশু রাসেলও। বেঁচে থাকলে ৫৭ পেরিয়ে ৫৮ তে পা রাখতো শেখ রাসেল। গতকাল ছিল শেখ রাসেল দিবস। প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া মাহফিল, আলোচনা, তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে দিবসটি উদযাপন করেছে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন।
শিল্পকলা একাডেমি : প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা, পদক প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা বর্ণাঢ্য আয়োজনে দিনব্যাপী শেখ রাসেল দিবস উদযাপন করেছে শিল্পকলা একাডেমি। ‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই প্রথমবারের মতো দিবসটি উদযাপিত হয়। সকাল ৯টায় একাডেমিতে স্থাপিত শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধন হয়। এরপর বেলা ১১টায় জাতীয় চিত্রশালার ভাস্কর্য গ্যালারিতে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার ঢাকা মহানগর অঞ্চলের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিকালে আলোচনা পর্ব শেষে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে সনদপত্র, বই ও কালার বক্স প্রদান করা হয়। ‘ক’ গ্রুপে বিজয়ী হয়েছেন সুয়াইদ তাজওয়ার, আরিফা রহমান আকাশী ও মো. সাইফুল্লাহ সিয়াম। ‘খ’ গ্রুপে বিজয়ী হয়েছেন আনিশা সান্তনি, নূর তাজ চেতনা, উজ্জয়িনী দাস। ‘গ’ গ্রুপে বিজয়ী হয়েছেন জায়না আলম পিয়া, মুনতাকা ইসলাম, সানজিদা তাবাচ্ছুম।
এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুরুতেই প্রদর্শিত হয় শেখ রাসেলের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র। এরপর আলোচনা পর্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। আরো বক্তৃতা করেন শিশুবক্তা পুষ্পিতা বেপারী, তৃদীব সরকার, তাহফীম যুনাইরা আনশি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর ও শেখ রাসেল জাতীয় শিশু- কিশোর পরিষদ এর যৌথ উদ্যোগে এবারই প্রথম বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শেখ রাসেল পদক প্রদান করা হয়। তাদের মধ্য থেকে ২ জন শিশু শিল্পী যারা শিল্পকলা, সাহিত্যে ও সংস্কৃতি বিভাগে শেখ রাসেল পদকপ্রাপ্ত হয়েছে তাদের বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়। আলোচনা ও পদক প্রদান শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে অনুষ্ঠান। শিল্পকলা একাডেমি শিশুসংগীত দল ও নৃত্য দলের দলীয়সংগীত ও দলীয়নৃত্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব।
গীতিকার রনক রায়হানের কথায় এবং ইবনে রাজনের সুরে ‘শুভ জন্মদিন শুভ জন্মদিন’ গানের সঙ্গে অনুষ্ঠানে দলীয়নৃত্য পরিবেশ করেন স্পন্দন। অ্যাক্রোবেটিক পরিবেশনায় ক্যাপ ডান্স, দিয়াবো ব্যালেন্স, সাইকেল ব্যালেন্স, রিংডান্স, হাঁড়ি ও লাঠি ব্যালেন্স, ল্যাডার ব্যালেন্সসহ নানা কসরত পরিবেশন করে শিল্পকলা একাডেমি অ্যাক্রোবেটিক দল।
অনুষ্ঠানে ‘শুভ শুভ জন্মদিন শেখ রাসেলের জন্মদিন’ গানটি পরিবেশন করেন শিশুশিল্পী বিপ্রজিৎ সরকার। ‘শেখ রাসেলকে নিয়ে তোমরা গাইছো গান’ পরিবেশন করেন বাউল শিল্পী আবির, ‘রাসেল আমাদের বাংলাদেশ’ গানটি শোনান লিউনা তাসনিম সাম্য, ‘আমি এখনো দেখি শেখ রাসেলের কান্না’ গান পরিবেশন করেন তৌকি ইয়াসির আয়মান, ‘বঙ্গমাতার কোলে ছোট্ট শিশু’ গেয়ে শোনান তানজীম বিন তাজ প্রত্যায়। আবৃত্তি করেন নুসাইবা হাসিন অংকন ও তামিম আহমেদ বৃন্ত।
জাতীয় জাদুঘর : আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে শেখ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন পালন করেছে জাতীয় জাদুঘর। সকাল সাড়ে ১০টায় জাদুঘরের লবিতে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করেন জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাদুঘরের মহাপরিচালক বলেন, মন্ত্রিপরিষদ প্রতি বছর ১৮ অক্টোবর ‘শেখ রাসেল দিবস’ ঘোষণা করেছে এবং ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসাবে অন্তর্ভুক্তকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

এখন থেকে প্রতি বছর অন্যান্য জাতীয় দিবসের ন্যায় এই দিবসটিও জাতীয় দিবস হিসেবে পালিত হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাদুঘরের বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এরপর জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিল।

বাংলা একাডেমি : শ্রদ্ধাঞ্জলী, আলোচনা, দোয়া ও বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে রাসেল দিবস-২০২১ উদযাপন করেছে বাংলা একাডেমি। সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলা একাডেমিতে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। এরপর একাডেমির সভাকক্ষে শেখ রাসেলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া শেখ রাসেল দিবস স্মরণে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘রাসেলের জন্য ভালোবাসা’ শীর্ষক গ্রন্থের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়