রাশিয়ার একাতেরিনবার্গে ভেজাল মদপানে মৃত্যু ১৮

আগের সংবাদ

মরুর বুকে গতির ঝড় অব্যাহত

পরের সংবাদ

মরুর বুকে ক্যাম্পার ঝড়

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে উত্তেজনা। গতকাল বাছাইপর্বের ম্যাচে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে খেলতে নামে আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস। গ্রুপ ‘এ’তে খেলছে এ দুটি দেশ। ম্যাচে গতকাল ইতিহাস গড়েছেন আয়ারল্যান্ডের পেস বোলার কুর্তিস ক্যাম্পার। তিনি বিশ্বকাপের ইতিহাসে একমাত্র বোলার হিসেবে টানা চার বলে চারটি উইকেট তুলে নেয়ার অনন্য নজির গড়েছেন। তাছাড়া বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে তিনি হ্যাটট্রিক করেছেন। তার আগে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি পেসার ব্রেট লি।
কুর্তিস ক্যাম্পার তৃতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে চার বলে চারটি উইকেট শিকার করেছেন। এর আগে আফগানিস্তানের স্পিনার রশিদ খান ও শ্রীলঙ্কার পেসার লাসিথ মালিঙ্গা চার বলে চারটি উইকেট শিকার করেছিলেন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৪ বছর পর দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকের দেখা মেলে কুর্তিস ক্যাম্পারের সৌজন্যে। কিন্তু এতেই ক্ষান্ত থাকেননি। বিশ্বকাপে নতুন করে ইতিহাস লিখেছেন তিনি।
ক্যাম্পার ম্যাচে চার ওভার বল করে ২৬ রান দিয়ে চারটি উইকেট তুলে নেন। এই এক ওভারেই যা করার নিজের করে নেন তিনি। ক্যাম্পার প্রথমে তার শিকারে পরিণত করেন কলিন অ্যাকারম্যানকে। এরপর অভিজ্ঞ রায়ান টেন ডেসকাটকে সাজঘরের পথে পাঠান তিনি। হ্যাটট্রিক করার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর সেটি করতে আর ভুল করেননি ক্যাম্পার। তিনি তার হ্যাটট্রিকটি তুলে নেন স্কট এডোয়ার্ডকে আউট করে। হ্যাটট্রিক করেই ক্ষান্ত হননি এই আইরিশ পেসার। নিজের অসাধারণ দক্ষতায় রিউলফ ভেন ডার মারউইকে সরাসরি বোল্ড আউট করে চার বলে চার উইকেট পূর্ণ করেন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চার বলে চার উইকেট নেয়ার ঘটনা ঘটে সর্বপ্রথম ২০১৯ সালে। সেবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চার বলে চারটি উইকেট তুলে নিয়ে ইতিহাস গড়েন আফগান স্পিনার রশিদ খান। এবার আয়ারল্যান্ডের বোলার ইতিহাস গড়লেও সেবার আয়ারল্যান্ড হয়েছিল অঘটনের শিকার।
এরপর দ্বিতীয়বার এমন কীর্তি গড়েন শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা। সেই ২০১৯ সালেই। সেবার শ্রীলঙ্কার মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে আসে নিউজিল্যান্ড। সে ম্যাচে চার বলে চারটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের মোড়ই ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন মালিঙ্গা।
সেবার টি-টোয়েন্টিতে চার উইকেট তুলে নিয়ে ক্রিকেটের ইতিহাসে অনন্য এক রেকর্ডের মালিক হয়ে যান তিনি। সেটি হলো ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই ফরমেটেই একমাত্র বোলার হিসেবে চার বলে চারটি উইকেট নেয়া।
কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গা ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার বলে চারটি উইকেট নিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন। এর আগে অনেক বোলার হ্যাটট্রিক করলেও চার বলে যে চারটি উইকেট তুলে নেয়া যায়, সেটি বুঝিয়েছিলেন মালিঙ্গা। লঙ্কান এ পেসার ওয়ানডেতে প্রায় ১৪ বছর আগে এমন কীর্তি গড়ার পর এখন পর্যন্ত কেউ তার রেকর্ডে ভাগ বসাতে পারেনি।
তবে টি-টোয়েন্টিতে এমন ঘটনা এরই মধ্যেই তিনবার ঘটে গেল। রশিদ খান যখন ২০১৯ সালে প্রথম এমন কীর্তি গড়েন, তখন মনে করা হয়েছিল তার এ রেকর্ড অক্ষুণ্ন থাকবে দীর্ঘদিন। তবে সে বছরই তার রেকর্ডে ভাগ বসিয়ে দেন মালিঙ্গা। আর দুই বছর পর আয়ারল্যান্ডের ক্যাম্পার এখন বিশ্বের দুই সেরা বোলারের সঙ্গে যৌথভাবে রেকর্ডের মালিক হলেন।
তবে মালিঙ্গা রশিদ খান ও ক্যাম্পারের চেয়ে একটি দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছেন। সেটি হলো তিনি বাকি দুজনের চেয়ে অনেক কম রান দিয়েছেন।
রশিদ খান আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচে চার ওভার বল করে ২৭ রান দিয়ে মোট পাঁচটি উইকেট তুলে নেন। চার বলে চারটি উইকেট নিলেও তার বলে আইরিশ বোলাররা রান তুলে নিতে সমর্থ হয়। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ক্যাম্পার মোট ২৬ রান দিয়ে চারটি উইকেট তুলে নেন। কিন্তু মালিঙ্গা যেমন উইকেট তুলে নিয়েছিলেন, রানের চাকা সমানভাবে আটকে রাখতে সমর্থ হন। তিনি সেবার চারটি উইকেট তুলে নেন মাত্র ছয় রান দিয়ে।
তবে এ তিনজনের মধ্যে একটি মিল রয়েছে, সেটি হলো তারা যেদিন রেকর্ড গড়েছেন, সেদিন তাদের প্রত্যেকের দল জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। মানে তাদের এমন অসাধারণ বোলিং বেশ কাজে দিয়েছে।
এদিকে বিশ্বকাপে এবার বাছাইপর্বে এ ও বি গ্রুপে ভাগ হয়ে মোট আটটি দেশ খেলছে। এর মধ্যে চারটি দেশ যোগ দিবে সুপার টুয়েলভে। গতকাল আয়ারল্যান্ড নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে এগিয়ে গেল সুপার টুয়েলভের পথে। এর আগে গ্রুপ ‘বি’তে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে যায় বাংলাদেশ। ফলে এখন সুপার টুয়েলভে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পথটা একটু কঠিন হয়ে গেল। আজ বাংলাদেশ তাদের ডু অর ডাই ম্যাচে খেলতে নামবে স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে। এ ম্যাচে জয় না পেলে বাংলাদেশের সব আশা শেষ হয়ে যাবে।
কুর্তিস ক্যাম্পারের আয়ারল্যান্ডের হয়ে অভিষেক হয় ২০২০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে। অন্যদিকে টি-টোয়েন্টিতে তার অভিষেক হয় গত আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এখন পর্যন্ত পাঁচটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে সাত উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে জন্ম নেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
আয়ারল্যান্ড এবারের বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করেছে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে। তারা গ্রুপ ‘এ’ থেকে বিশ্বকাপের মূলপর্বে জায়গা করে নেয়ার ক্ষেত্রে এবার বেশ বড় প্রতিদ্ব›দ্বী। র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকার কারণে আয়ারল্যান্ড সরাসরি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে জায়গা করে নিতে পারেনি। তবে তাদের শক্তির বিচারটি বিবেচনা করলে বলা যায় পরবর্তী রাউন্ডে খুব সহজেই যাবে তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়