এ মাসের ১৫ দিনে ডেঙ্গু রোগী ছাড়ালো ৩ হাজার

আগের সংবাদ

ভস্মীভূত হিন্দুপল্লীজুড়ে আতঙ্ক : মূল হোতাসহ ৪৬ জন গ্রেপ্তার, থানায় দুই মামলার প্রস্তুতি, প্রতিবাদে রংপুরে বিক্ষোভ > সাম্প্রদায়িক হামলা

পরের সংবাদ

রাজকীয় অনুষ্ঠানে পর্দা উঠল বিশ্বকাপের

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে গতকাল পর্দা উঠেছে সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। ওমানের মাসকাটের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে উদ্বোধনী ম্যাচে খেলতে নামে স্বাগতিক ওমান ও পাপুয়া নিউগিনি। ওয়ানডে বিশ্বকাপে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বড় কোনো আয়োজন রাখে না তারা।
ফলে গতকাল সপ্তম বিশ্বকাপেও ছিল না চোখ ধাঁধানো কোনো অনুষ্ঠান। তবে হঠাৎ করে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পাওয়া ওমান ক্রিকেট এসোসিয়েশন নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়েই ছোট পরিসরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
উদ্বোধনী ম্যাচে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনি মাঠে নামার আগে মাঠে আসে নারীদের একটি ব্যান্ড দল। মনোমুগ্ধকর ব্যান্ডের শব্দের তালে তালে তারা মাতান দর্শকদের। অন্যদিকে মাঠের বাইরে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ১৬টি দেশের পতাকা হাতে উপস্থিত ছিল ওমানের রাজ পরিবারের নারী অশ্বারোহী দল। যেহেতু মাঠের মধ্যে একটু পর ম্যাচ আয়োজন হবে তাই অশ্বারোহী দলটি পতাকা হাতে বাউন্ডারির বাইরে দাঁড়িয়েছিল। ব্যান্ড দল ও অশ্বারোহী দল উভয়ের মধ্যেই ছিল ওমানের সংস্কৃতির ছাপ। দেশটির মেয়েরা সাধারণত যেসব পোশাক পরেন সেই পোশাকে তারা নিজেদের ডিসপ্লে প্রদর্শন করেন।
ওমানে গতকাল পালিত হয়েছে নারী দিবস। আর নারী দিবসকে সামনে রেখে শুধু নারীদের নিয়েই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সাজানো হয়। সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষেই শুরু হয় মাঠের আসল লড়াই। গতকাল উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক ওমান পাপুয়া নিউগিনিকে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায়। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপের সহ আয়োজক ওমান শুভ সূচনা করল। বাছাইয়ে বাংলাদেশ তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে ওমানের বিপক্ষে। এর আগে বাংলাদেশকে তারা বুঝিয়ে দিল যেন তারাও বেশ ভালোই টেক্কা দিবে।
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটিতে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান সৌরভ গাঙ্গুলী ও সেক্রেটারি জয় শাহ। ওমানে ও আরব আমিরাতে বিশ্বকাপ হলেও এর মূল আয়োজক হলো ভারত। ফলে বিসিসিআইয়ের সভাপতি সৌরভ এখানে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ ম্যাচ হতে যাচ্ছে আগামী ২৪ অক্টোবর। এদিন দুবাইয়ে খেলতে নামবে দুই চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। ম্যাচটি মাঠে গড়াতে আরো এক সপ্তাহ সময় বাকি থাকলেও এটি নিয়ে এখনই ক্রিকেট বিশ্বে চলছে উত্তেজনা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত মোট পাঁচবার খেলেছে ভারত ও পাকিস্তান। এর মধ্যে প্রত্যেকটি ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছে ভারত। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে দুইবার খেলেছিল ভারত ও পাকিস্তান। একবার গ্রুপ পর্বে। আরেকবার ফাইনালে। গ্রুপ পর্বে ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচটি টাই হয়। পরে বল আউটে ভারত ম্যাচটি জিতে নেয়। অন্যদিকে ফাইনালে শেষ ওভারে গিয়ে চরম উত্তেজনাকর ম্যাচ জয় পেয়ে প্রথম বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে ভারত। ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা এখন এ ম্যাচটির আলোচনায় মুখর। তারা বিভিন্ন সময় বলছেন তাদের ভাবনার কথা। গতকাল নতুন করে দুই দেশের এ মহারণ নিয়ে কথা বলেছেন ভারতের দুই সাবেক ক্রিকেটার অজিত আগারকার ও সুরেশ রায়না। এর আগে পাকিস্তানের বিষয়ে কথা বলেছেন শহীদ আফ্রিদিসহ অন্য সাবেকরা।
গতকাল আগারকার পাক-ভারত দ্বৈরথ নিয়ে বলেন, বর্তমানে ভারত যে রকম ক্রিকেট খেলছে তাতে করে পাকিস্তান খুব বড় ধরনের হুমকি হতে পারবে না। আগারকার বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান যখন একসঙ্গে খেলে তখন প্রত্যাশা থাকে অনেক বেশি। কিন্তু ভারতের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দেখে যা বলতে পারি তা হলো পাকিস্তান বড় ধরনের কোনো হুমকি হবে না।’
তবে আগারকার সঙ্গে সঙ্গে আবার কোহলিদের সতর্কও করে দিয়েছেন এ বলে যে পাকিস্তানকে আবার হালকাভাবেও নেয়া যাবে না। কারণ ক্রিকেটে যে কোনো সময় যে কোনো কিছু হতে পারে।
অন্যদিকে সুরেশ রায়না বলেছেন ভারতের এবার উচিত হবে বিশ্বকাপ জেতা এবং বিশ্বকাপটি কোহলিকে উৎসর্গ করা। আগারকারের মতো রায়নাও বলেছেন পাকিস্তানকে ভারত সহজেই হারাবে।
স্পিন গ্রেট হারভজন সিং সব সময় নিজ দেশের পক্ষে কথা বলেন। এবারো এর ব্যতিক্রম হয়নি। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন নিজের পাক বন্ধু শোয়েব আখতারকে তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের উচিত ভারতের বিপক্ষে না খেলেই ওয়াক ওভার দেয়া উচিত। কারণ ভারতের সঙ্গে তারা কোনোভাবেই জিততে পারবে না। ম্যাচ খেলতে নামবে মানে হারবে। হারভজনের কথায় যুক্তি আছে। কারণ পাকিস্তান ভারতকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই বিশ্বকাপের কোথাও হারাতে পারেনি। তবে ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তান ভারতকে হারিয়ে দিয়েছিল।
অন্যদিকে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি বলেছেন ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তান জিতবে। তবে তিনি আবার এও বলেছেন ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচ মানেই হলো চাপ। যে দল চাপকে সামাল দিতে পারবে সে দলই জিততে পারবে। এ ব্যাপারে আফ্রিদি বলেন, ‘পাকিস্তানের জেতার সম্ভাবনা বেশি। দেখুন ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচ সব সময় চরম উত্তেজনাকর ও চাপের ম্যাচ। যে দল সবচেয়ে কম ভুল করবে সে দলই জিতবে।’
তবে পাকিস্তানের আরেক সাবেক ক্রিকেটার আজহার মাহমুদ বলছেন পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে থাকবে ভারত। কারণ তারা আরব আমিরাতে আইপিএলে খেলেছে।
এ ব্যাপারে আজহার মাহমুদ বলেছিলেন, ‘যে কেউ ম্যাচে জিততে পারে। তবে সত্যি বলতে কি ভারত এগিয়ে থাকবে। কারণ তারা আমিরাতেই আইপিএল খেলেছে। তাদের প্রস্তুতিটা ভালো হয়েছে।’
এদিকে নিজ নিজ দেশের হয়ে সাফাই গাওয়ার মাঝে আবার নিজেদের মধ্যে খুনসুটিতেও মেতেছেন পাকিস্তান ও ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা। রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস খ্যাত পাক পেসার শোয়েব আখতার নিজের টুইটারে দুটি ছবি প্রকাশ করেছেন। সেখানে দেখা যায় দুবাইয়ের একটি রেস্তোরাঁয় নিজেদের মধ্যে মজা করছেন ভারতের সুনীল গাভাস্কার, কপিল দেব। পাকিস্তানের জহির আব্বাস ও শোয়েব আখতার। নিজের টুইটারে শোয়েব যে ছবিগুলো প্রকাশ করেছেন সেখানে দেখা যাচ্ছে সুনীল গাভাস্কার ও কপিল দেবের ঘাড় ম্যাসাজ করে দিচ্ছেন তিনি। ছবিগুলোতে প্রত্যেককে বেশ হাসিখুশি দেখা যায়। ছবিগুলো দেখে বোঝার উপায় নেই তারা একে অপরের কত বড় প্রতিদ্ব›দ্বী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়