সারাদেশে পূজামণ্ডপে হামলা : চাঁদপুরে সংঘর্ষে নিহত ৩

আগের সংবাদ

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের টার্গেট কী? প্রথম ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ-সাকিবের মাঠে নামা নিয়ে দোটানা

পরের সংবাদ

বদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : কোভিড-১৯ বিশেষ বরাদ্দের ১৭ লাখ টাকা হরিলুট

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফেরদৌস আহম্মাদ, রংপুর থেকে : জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র প্রতিষ্ঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বরাদ্দকৃত ১৭ লাখ টাকা ভুয়া ভাউচার দিয়ে লুট করে নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, গত ২০২০-২১ এবং চলমান ২০২১-২২ অর্থবছরে বদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বরাদ্দ আসে প্রায় ১৭ লাখ টাকা। বদরগঞ্জ কোভিড হাসপাতাল না হওয়া সত্ত্বেও কোভিড-১৯ হাসপাতাল ও জনবল খাতে সমুদয় অর্থ খরচ দেখানো হয়েছে। বাস্তবে কোভিড-১৯ অতিমারি চলাকালে কোভিড আক্রান্ত রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সেবা গ্রহণ করেছেন মাত্র ৪৯ জন। ওই রোগীদের সাধারণ ওয়ার্ডের রোগীর খাবারই খাওয়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বদরগঞ্জ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বদরগঞ্জ হাসপাতালে বরাদ্দ আসে প্রায় ১৭ লাখ টাকা। এই টাকা ডাক্তার, নার্স ও অন্য সেবাদানকারীদের হোটেল ভাড়া, যাতায়াত, খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও অন্যান্য বাবদে খরচ দেখানো হয়েছে। বদরগঞ্জের শাহপুর হোটেল, রুপম হোটেল, ঢাকা আবাসিক হোটেল নামে কয়েকটি হোটেলে অবস্থান করার তথ্য দিয়েছেন। বাস্তবে এসব হোটেলের অস্তিত্ব বদরগঞ্জে নেই। বদরগঞ্জে কোনো আবাসিক হোটেল নেই বলেও এলাকাবাসী জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নার্সসহ অন্য সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, সবেতনে প্রেষণে নিয়োজিত অফিস সহকারী আলী আহসান অদৃশ্য ক্ষমতা বলে কোভিড-১৯ এর সব কাজ করেন। তিনি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন, ভাউচার তৈরিসহ যাবতীয় অনিয়মের হোতা। তিনি থ্রি ইন ওয়ান। তিনি অফিস সহকারী, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও ল্যাব সহকারীর (স্যাম্পল কালেকশন) দায়িত্বে আছেন। এছাড়া একজন স্বাস্থ্য সহকারীর সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্কের কথাও জানা যায়। প্রধান অফিস সহকারী ফজলুল হক ডাক্তার, নার্স, মাঠপর্যায়ের কর্মচারীসহ মাতৃত্বকালীন ছুটি ও যোগদান, বদলি ফরোয়ার্ডিং, টাইম স্কেল বিলে অফিসিয়াল কাজে গেলে তাকে ২-৫ হাজার টাকা দিতে হয়।
গত ৬ অক্টোবর বদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, আউটডোরে রোগী দেখছেন ২ জন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট। উপরে দো তালায় আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল হোসাইন ওয়ার্ডে রাউন্ড দিচ্ছেন।
দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারের কক্ষে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে আর কোনো ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন না। ফলে সাধারণ রোগীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। খিয়ারপাড়ার লতিফুর রহমান বলেন, শুধু আজ নয় প্রতিদিনই কোনো ডাক্তার থাকেন না। আমাদের সহকারী ডাক্তারদের কাছেই সেবা নিতে হয়। পৌর শহরের রতন কুণ্ডুু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কয়েক দিন আগে আমি বদরগঞ্জ হাসপাতালে গিয়ে কোনো ডাক্তার না পেয়ে ফিরে এসেছি।
প্রধান অফিস সহকারী ফজলুল হক সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অফিস সহকারী আলী আহসান সব কাজ করেন, আমি কিছুই জানি না। অফিস সহকারী আলী আহসান বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাক্তার আরশাদ হোসেন জানান, যথাযথ নিয়মে টাকা খরচ করা হয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম নেই।
রংপুর জেলা সিভিল সার্জন হিরম্ব কুমারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব আমি জানি না, তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়