করোনা পরিস্থিতি : শনাক্ত কমলেও প্রাণহানি কিছুটা বেড়েছে

আগের সংবাদ

আতঙ্কিত চট্টগ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা : বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর

পরের সংবাদ

স্ত্রীকে গরম তেল ঢেলে হত্যা : যৌতুক-পরকীয়ায় বাধা দেয়াই কাল হয় স্বর্ণার

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : যৌতুকের জন্য নিয়মিত চলত নির্যাতন। সেই সঙ্গে স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক ও ভরণপোষণের টাকা না দেয়ায় পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান স্বর্ণা। একপর্যায়ে সাভারের জিরানীতে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। কিন্তু স্বামী সজনু মিয়ার তৎপরতা থামেনি। ঠিকানা জোগাড় করে স্বর্ণার কাছে গিয়ে আবার যৌতুক দাবি করে। কিন্তু টাকা দিতে অপারগতা জানালে ঘুমন্ত স্বর্ণার ওপর গরম তেল ঢেলে পালিয়ে যায় সজনু মিয়া।
ঘাতক স্বামী সজনু মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত মঙ্গলবার রাতে জামালপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, ২০০৭ সালে পারিবারিকভাবে সজনু মিয়া এবং স্বর্ণার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা সজনু মিয়ার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ীর পিংনা গ্রামে বসবাস করত। সজনু মিয়া স্থানীয় বাজারে রেডিমেড গার্মেন্টসের দোকানদারি করত। ওমর ফারুখ সিফাত নামে তাদের ১১ বছরের একটি ছেলে ও খাদিজা নামের দুই বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
মুক্তাধর জানান, স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে বাধা দেয়ায় এবং যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই স্বর্ণাকে নির্যাতন করা হতো। এমনকি সজনু মিয়া সংসারের ভরণপোষণও সঠিকভাবে করত না। এর আগেও যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে গুরুতর জখম করায় স্বর্ণার দুলাভাই মো. ময়নুল ইসলাম বাদী হয়ে আসামি সজনু মিয়ার বিরুদ্ধে সরিষাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় সজনু মিয়া দুই মাস ১৯ দিন জেলহাজতে থাকে। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় বাদী তার মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।
কিন্তু কিছু দিন পরে আবারো স্বর্ণার উপরে নির্যাতন শুরু হয়। সজনু মিয়ার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে স্বর্ণা ছয় মাস আগে তার সন্তান নিয়ে বাবা-মায়ের বাড়িতে সিরাজগঞ্জে চলে যান। কিন্তু অভাব-অনটনের কারণে তার ছেলেমেয়েকে মায়ের কাছে রেখে ঢাকার আশুলিয়ায় এসে ডরিন গার্মেন্টেসে পোশাক শ্রমিকের কাজ নেন। কিন্তু সজনু কৌশলে তার স্ত্রীর ঠিকানা জোগাড় করে ঢাকায় এসে অশান্তি শুরু করে।

যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করা হলে গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে স্বর্ণার শরীরে গরম তেল ঢেলে পালিয়ে যায় সজনু মিয়া।
রাতেই সহকর্মীরা তাকে সাভার থেকে জামালপুরের সজনু মিয়ার নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন সকালে তাকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ফেলে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসার পর মৃত্যু হয় ৫২ শতাংশ দগ্ধ হওয়া স্বর্ণার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়