করোনা পরিস্থিতি : শনাক্ত কমলেও প্রাণহানি কিছুটা বেড়েছে

আগের সংবাদ

আতঙ্কিত চট্টগ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা : বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর

পরের সংবাদ

মুক্তিযোদ্ধা-সাহিত্যিক রমা চৌধুরীর ৮২তম জন্মদিন আজ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : একাত্তরের জননীখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা-সাহিত্যিক রমা চৌধুরীর ৮২তম জন্মদিন আজ বৃহস্পতিবার। রমা চৌধুরী ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের দ্বারা নির্যাতিত হন এবং তার দুই শিশু সন্তান যুদ্ধের কারণে মারা যায়। যুদ্ধের পরে এই মহীয়সী রমণী সন্তান শোকে খালি পায়ে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নিজের লেখা বই ফেরি করে বিক্রি করেছেন কারো সহযোগিতা না নিয়ে। দীর্ঘ রোগ ভোগের পর ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। রমা চৌধুরীর ৮২তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে রমা চৌধুরী স্মৃতি সংসদ এবং তারুণ্যের উচ্ছ¡াস যৌথ উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ফেসবুক লাইভে এক আলোচনা ও রমা চৌধুরীর স্মৃতি কথন এবং তার কবিতা ও একাত্তরের জননী থেকে পাঠের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও রমা চৌধুরীর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। ‘একাত্তরের জননী’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৮টি। বীর মুক্তিযোদ্ধা রমা চৌধুরী একজন সর্বহারা, সন্তানহারা, যুদ্ধের তাণ্ডবে ভিটেমাটি পুড়ে নিশ্চিহ্ন হওয়া একাত্তরের জননী হয়েও দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘ ৫০ বছরেও এখনো বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের বা গেজেটে কিংবা কোন নথিতে অনুল্লেখিত রয়ে গেছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে রমা চৌধুরী স্মৃতি সংসদ।
উল্লেখ্য, ১৯৪১ সালের ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জন্মগ্রহণ করেন রমা চৌধুরী। ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্যাতনের শিকার সাহিত্যিক রমা চৌধুরী যুদ্ধের লেলিহান শিখায় দুই সন্তানও হারান। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর করা রমা চৌধুরী সারাজীবন এক কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গেছেন। সেই লড়াই-সংগ্রামের অস্ত্র হিসেবে তিনি হাতে নিয়েছিলেন কলম। তিনি নিজের লেখা গ্রন্থ নিজে প্রকাশ করে এবং নিজেই দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিক্রি করে এক অনন্য ইতিহাস রচনা করে গেছেন। ১৯৯৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর তার সর্বকনিষ্ঠ সন্তান সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করলে তিনি তিন সন্তানের শোকে আমৃত্যু খালি পায়ে ছিলেন। তিনি নিজের প্রচেষ্টায় ১৮টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন।
রমা চৌধুরীর এই জীবনসংগ্রাম দেশে-বিদেশে অনেকের কাছেই গবেষণার বিষয় হয়ে ওঠে। অদম্য মানসিক প্রজ্ঞায় তিনি সব লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে এক স্বকীয় ইতিহাস রচনা করে গেছেন। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে তার সঙ্গে দেখা করতে যান রমা চৌধুরী। অস্বচ্ছল জীবনযাপনকারী রমা চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহযোগিতার প্রস্তাব বিনয়ের সঙ্গে ফিরিয়ে দেন। রমা চৌধুরী মরণোত্তর ‘বেগম রোকেয়া পদক’সহ বেশ কিছু সম্মাননা ও পদক পেয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়