কাগজ ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবার যে দলগুলোকে শিরোপার ফেবারিট মানা হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম হলো ভারত। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে এবারই শেষবারের মতো ২০ ওভারের বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছে ম্যান ইন ব্লুরা। বিশ্বকাপের জন্য ভারত যে দল গঠন করেছে তা বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। বোলিং, ব্যাটিং ও ফিল্ডিং কোনোদিকে তাদের কোনো কমতি নেই। ভারতীয় দলে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা তো আছেই, সঙ্গে দলে তরুণ খেলোয়াড়দের ছড়াছড়ি। এমনকি তরুণ খেলোয়াড়দের কারণে তারকা ব্যাটসম্যান ও ওপেনার শিখর ধাওয়ানেরও বিশ্বকাপ দলে জায়গা মেলেনি। সব মিলিয়ে এবার ভারত যে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে শিরোপা নিয়ে বড় রকমের টেক্কা দিবে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বিশ্বকাপের আগে ভারতের শক্তি আরো বেড়েছে কারণ বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়া সব খেলোয়াড় আইপিএলে খেলেছেন। ফলে তারা বড় রকমের প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচের মধ্যে ছিলেন। আর এ বিষয়টিই বিশ্বকাপে এখন তাদের জন্য বেশ কাজে দিবে।
গতকাল নতুন বিশ্বকাপের জন্য জার্সি নতুন জার্সি উন্মোচন করেছে ভারত। গতকাল দুপুর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের টুইটার অ্যাকাউন্টে জার্সি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয়। টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে নতুন জার্সি প্রকাশ করে। বিশ্বকাপের নতুন জার্সি পরে দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি, সহঅধিনায়ক রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা ও জাসপ্রীত বুমরাহর ছবি পোস্ট করে জার্সি প্রকাশ করা হয়েছে। ভারতের নতুন এ জার্সির নাম দেয়া হয়েছে বিলিয়ন চিয়ার্স জার্সি। ১৩০ কোটি জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখেই ভারতীয় জার্সির নতুন ডিজাইন তৈরি করা হয়েছে। আর এই ১৩০ কোটি লোকই যে ভারতকে সমর্থন করবে সে কারণে জার্সির নাম দেয়া হয়েছে বিলিয়ন চিয়ার্স জার্সি। ভারতীয় দলের নতুন এ জার্জিসর স্পন্সর হিসেবে থাকছে এমপিএল স্পোর্টস। ২০২০ সালের আগে ভারতের জার্সির স্পন্সর ছিল নাইকি। আমেরিকান এ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পর এমপিএল জার্সি স্বত্ব কিনে নেয়। নাইকি যখন তাদের জার্সির স্পন্সর ছিল তখন দীর্ঘদিন প্রায় একই ডিজাইনের জার্সি পরে খেলেছে ভারত। এরপর এমপিএল স্বত্ব কিনে নেয়ার পরই ১৯৯২ সালে ব্যবহার করা জার্সির মতো রেট্রো জার্সি তৈরি করে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে গত বছরের অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে বিরাট কোহলিরা সেই রেট্রো জার্সি পরে খেলতে থাকে। নেভি ব্লæ রংয়ের জার্সির কাঁধের কাছে চারটি রং, নীল, সবুজ, লাল ও সাদা দিয়ে ডিজাইন করা। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে যে জার্সি পরে ভারত খেলেছিল সেই জার্সির মতোই জার্সিকে রেট্রো নামকরণ করা হয়েছে।
তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যে ভারতের জার্সিতে বদল আসছে তা কয়েক দিন আগেই জানা গিয়েছিল। এর আগে, নীল জার্সি পরে বিভিন্ন সীমিত ওভারের সিরিজ ও আইসিসি বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছে ভারত। সেই নীল এখন বদলে হয়েছে নেভি ব্লæ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জার্সিতে ক্রিকেটারদের নাম ও নম্বর লেখা রয়েছে গেরুয়া রঙে। সেই সঙ্গে জার্সিতে নেভি ব্লæর সঙ্গে আগের জার্সির নীল রঙও রয়েছে ডিজাইনে। বিশ্বকাপের জন্য তৈরি করা ভারতের নতুন এ জার্সি ইতোমধ্যেই পছন্দ হয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের।
এদিকে বিশ্বকাপের মূল পর্বে নামার আগে ১৮ অক্টোবর ইংল্যান্ড ও ২০ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ভারত। তারপর পাকিস্তান ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে বিরাট কোহলির দল। এবারই শেষবারের জন্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিরাট কোহলি। আগামী বিশ ওভারের একটি বিশ্বকাপ রয়েছে। এটি হবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। সেই বিশ্বকাপে ভারতকে নেতৃত্ব দেয়ার দৌড়ে এগিয়ে রোহিত শর্মা। এবারের বিশ্বকাপের পর হেড কোচসহ ভারতের সাপোর্ট স্টাফের তালিকাতেও অনেক বড় রদবদল হতে চলেছে। বর্তমান কোচ রবি শাস্ত্রীসহ সবাই বিশ্বকাপের পর দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন।
বিরাট কোহলির নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত আইসিসির কোনো শিরোপা জিততে পারেনি ভারত। এবারের বিশ্বকাপ তার জন্য শেষ আশা। যদিও তিনি এখনো ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব ছাড়েননি। তবে তাকে সরিয়ে দেয়া হবে বলে গুঞ্জন রয়েছে। ফলে যদি ভারতের অধিনায়ক হিসেবে কোহলি সবার মনে থাকতে চান তাহলে তাকে এবারই শিরোপা জয় করতে হবে। এখন ভারতীয় দল বেশ শক্তিশালী। কোহলি এখন যদি দলের যে রশদ আছে সেগুলো কাজে লাগাতে পারেন তাহলেই তিনি সফল হবেন। যদিও কোহলি নিজে ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে অনেক অবদান রেখেছেন কিন্তু এখন অধিনায়ক হিসেবে তার জায়গা পাওয়াটাই হবে আসল বিষয়।
ভারত এবার তাদের বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড চূড়ান্ত করেছে। গতকাল আগের ১৫ সদস্যের দলে জায়গা পাওয়া আক্সার প্যাটেলকে বাদ দিয়ে নেয়া হয়েছে পেসার শার্দুল ঠাকুরকে। মূলত আরব আমিরাতের পিচের কথা চিন্তা করেই তারা স্পিনারের বদলে এখন একজন মিডিয়াম পেসারকে দলে নিয়েছে। ভারতের ১৫ সদস্যের দলে অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও সহঅধিনায়ক রোহিত শর্মা ছাড়াও রয়েছেন লুকেশ রাহুল, সূর্যকুমার যাদব, ঋসভ পন্ত, ইষাণ কিষাণ, হার্দিক পান্ডিয়া, রবিন্দ্র জাদেজা, রাহুল চাহার, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, শার্দুল ঠাকুর, ভরুণ চক্রবর্তী, জাসপ্রিত বুমরাহ, ভুবনেশ্বর কুমার ও মোহাম্মদ শামি।