তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন : পূর্ণ প্যানেলে জয়ী কাজিম-আয়েজ পরিষদ

আগের সংবাদ

যুদ্ধাপরাধ বিচারে স্থবিরতা ; বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এগিয়ে নিতে সরকারের আগ্রহ নিয়ে সংশয়! ট্রাইব্যুনালেও জনবল সংকট

পরের সংবাদ

শিমুলের ছোট কারখানায় বড় স্বপ্নের হাতছানি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : মোস্তাফিজুর রহমান শিমুল জেলা শহরের হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে তিন বছর চাকরির পেছনে ছুটেছেন। সফল হননি। পাড়ি জমান প্রবাসে। কাজ করেছেন টাইলসের মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে। দেশে ফিরে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলেছেন টাইলসের কারখানা। এখন তিনি সফলদের একজন।
তিনি বলেন, লেখাপড়া করে শুধু চাকরির পেছনে ছুটলে চাকরিই সফলতা এনে দেবে, এমন ভাবাটা ভুল।
লেখাপড়া শেষ করে নিজের মেধা আর পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে চাইলে অন্যভাবেও সফল হওয়া যায়। তৈরি করা যায় কর্মসংস্থান। ঠাকুরগাঁও শহরের শান্তিনগর এলাকায় গড়ে তুলেছেন ব্লক পার্কিং টাইলসের কারখানা। ছোট পরিসরে হলেও কারখানায় উঁকি দিচ্ছে বিরাট সম্ভাবনা। বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়াটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার।
শিমুলের তৈরি টাইলস এখন নিজ জেলার গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ব্যবসা শুরুর ৮ মাসেই পাওয়া ব্যাপক সাফল্য আজ হাসি ফুটিয়েছে অনেকের মুখে। আর চাকরির পেছনে ছোটেন না শিমুল। তিনি চাকরি দিচ্ছেন।
শিমুল বলেন, ২০১১ সালে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে ৩ বছর চাকরির পেছনে ছুটেও লাভ হয়নি। এমন শিক্ষিত বেকার থাকাটাই নিজের কাছে নিজেকে বোঝা বলে মনে হচ্ছিল। তাই শেষে হতাশ হয়ে ২০১৫ সালে প্রবাসে চলে যাই। কাতারের একটি মাল্টিন্যাশনাল পার্কিং টাইলসের কোম্পানিতে চাকরি করতাম।
তিনি আরো বলেন, আমি সেই টাইলসের কোম্পানিতে প্রায় ৩ বছর কাজ করেছি। খেয়াল করি যে, কারখানায় তৈরি পার্কিং টাইলসে ব্যবহৃত প্রধান কাঁচামাল সিমেন্ট, বালু ও নুড়ি পাথর। আমাদের দেশে তথা নিজ এলাকাতেই বেশ সহজলভ্য এই কাঁচামাল। ছোট আকারে শুরু করতে পুঁজিও তেমন লাগছে না। তখনই দেশে ফিরে এমন একটি কারখানা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেই।
২০১৯ সালে দেশে ফিরেই এই কারখানা দেয়ার পরিবেশ যাচাই করতে থাকেন শিমুল। দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা পার্কিং টাইলসের কারখানা ঘুরে দেখেন। বাজারে চাহিদা বোঝার চেষ্টা করেন। এতে কাতারভিত্তিক প্রযুক্তি দেশের জন্য সঠিক বলে মনে হয় তার।
শিমুল বলেন, ২০২০ সাল থেকে কারখানা দেয়ার প্রস্তুতি শুরু করে ৩ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ২০২১ এর ১ জানুয়ারিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করি পার্কিং টাইলস। নিজ জেলায় ব্যাপক সাড়া পাই। ধীরে পার্শ্ববর্তী জেলায় যাওয়া শুরু করে আমার পণ্য। তবে এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্ডার পাচ্ছি। প্রথমে একজন শ্রমিককে কাজ শিখিয়ে তাকে নিয়ে পথচলা শুরু শিমুলের। এখন এই কারখানায় ১৭ জন শ্রমিক কাজ করছেন। ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে কাজ শুরু করবেন।
পার্কিং টাইলসের কারখানায় কর্মরত শ্রমিক চান মিয়া শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ায় তার আগের পেশা রিকশা চালাতে বেশ কষ্ট হতো। তিনি বলেন, এক বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পেরে আমি শিমুল ভাইয়ের কারখানায় কাজ নিয়েছি। হালকা কাজে ভালো পারিশ্রমিক পেয়ে আমার মতো বাকিরাও বেশ খুশি।
শিমুলকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করে তার কাজে উৎসাহ দেয়া প্রয়োজন বলে জানান ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, শিমুলের মাধ্যমে বৃহত্তম কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে। তার সফলতা অন্য তরুণদের উদ্যোক্তা হতে উৎসাহী করবে।
ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক মো. নুড়েল হক বলেন, আমরা চাই ভালো ভালো উদ্যোক্তা সৃষ্টি হোক। শিমুলের উদ্যোগ বেশ সম্ভাবনাময়। তার যে কোনো সহযোগিতায় আমরা পাশে আছি। উদ্যাক্তা শিমুলের তৈরিকৃত টাইলস যাচ্ছে সারাদেশে। সহযোগিতায় আমরা পাশে আছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়