তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন : পূর্ণ প্যানেলে জয়ী কাজিম-আয়েজ পরিষদ

আগের সংবাদ

যুদ্ধাপরাধ বিচারে স্থবিরতা ; বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এগিয়ে নিতে সরকারের আগ্রহ নিয়ে সংশয়! ট্রাইব্যুনালেও জনবল সংকট

পরের সংবাদ

রাজনৈতিক দলের ভোট ভাবনা : বিদ্যমান পদ্ধতির বাইরে যাবেই না আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে বিদ্যমান পদ্ধতির বাইরে যাবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠনকেই সবচেয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া হিসেবে দেখছে দলটি। রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে সব দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমেই আগামী ইসি গঠন করা হবে- এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। সম্প্রতি জাতিসংঘ সফর শেষে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি খোলাসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য নতুন ইসি গঠন নিয়ে দেশে চলমান আলোচনায় ক্ষমতাসীন দলের অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে।
বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হবে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে নতুন ইসির অধীনে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইসি গঠন নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দাবি জানিয়েছে। আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে সুশীল সমাজ। তাদের দাবি, সংবিধানেও নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ দেয়ার জন্য আইন করার কথা বলা আছে। কিন্তু স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পেরুতে চললেও দেশে এখনো এই আইনটি করা হয়নি। গত দুই দফা রাষ্ট্রপতি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন করেছেন। সাংবিধানিকভাবে ইসি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। কমিশন গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলি-সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগদান করিবেন।’ সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রপতি সব সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) নিয়োগ দিলেও ২০১২ সালে কমিশন গঠিত হয়েছিল একটি সার্চ কমিটির মাধ্যমে। ওই সময় প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি। গত বারের মতো এবারো সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন ইসি গঠনের কথা বলেছেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠন করবেন। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।
শীর্ষনেতারা বলছেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে সব দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন করা হয়েছে। এর আগে অন্য কোনো সরকার এটি করেনি। এমনকি বিএনপিও এটি করেনি। তারা বিতর্কিত বিচারপতি আজিজকে নিয়োগ দিয়েছিল। নিরপেক্ষ ইসি গঠনে বিএনপিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচনকালে নির্বাচনসংক্রান্ত সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের অধীন চলে যায়। নির্বাচন আয়োজনে ইসিই সর্বেসর্বা। সরকার তখন শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করে থাকে। আর ইসিকে একটি স্বাধীন, কর্তৃত্বপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে

সহযোগিতা করে থাকে।
সূত্রমতে, নতুন ইসি গঠনে আগামী বছরের জানুয়ারিতে সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ওই সার্চ কমিটি গঠন করবেন। চার সদস্যের, না ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। আগের মতো সার্চ কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন

করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, করোনা মহামারি পরিস্থিতি এবং ইসির মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হয়ে যাবে, সব কিছু মিলিয়ে এখন আইন করে ইসি গঠন করা সম্ভব নয়। সার্চ কমিটির মাধ্যমেই আগামী ইসি গঠিত হবে। যদিও সার্চ কমিটির গেজেট আইন নয়, কিন্তু যেহেতু সবার কনসেন্স নিয়ে করা হয় ও রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তে হয়েছিল, তাই সেটা আইনের কাছাকাছি।
এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সব নির্বাচনের জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের নাম চূড়ান্ত করতে হবে। সূত্রমতে, এজন্য সার্চ কমিটিতে নাম দিতে উপযুক্ত, দক্ষ এবং যোগ্যদের নিয়ে চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ করছে ক্ষমতাসীনরা। জানতে চাইলে দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ভোরের কাগজকে বলেন, ইসি গঠন নিয়ে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। আগে রাষ্ট্রপতি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সার্চ কমিটি গঠন করেন। সেই সার্চ কমিটির মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবিত নামগুলো থেকে বাছাই করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এবারো তাই হবে। সার্চ কমিটিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
সাংগঠনিক সম্পদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ভোরের কাগজকে বলেন, আগামী নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য আওয়ামী লীগ আন্তরিক। নির্বাচনে জনরায় যা হবে তা মেনে নেয়ার জন্যও আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নিলে আমরা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তার উদ্যোগে অংশ নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনের দ্বারা সীমাবদ্ধ যথাযথ দায়িত্ব পালন করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়