তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন : পূর্ণ প্যানেলে জয়ী কাজিম-আয়েজ পরিষদ

আগের সংবাদ

যুদ্ধাপরাধ বিচারে স্থবিরতা ; বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এগিয়ে নিতে সরকারের আগ্রহ নিয়ে সংশয়! ট্রাইব্যুনালেও জনবল সংকট

পরের সংবাদ

‘বিব্রতকর ও লজ্জাজনক’ : চট্টগ্রামে প্রতিমা ভাঙচুরে গ্রেপ্তার ৩, আজ শুনানি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : নগরীর কোতোয়ালি থানার কাছেই ফিরিঙ্গিবাজার এলাকায় দুর্গা প্রতিমা বহনকারী গাড়িতে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সনাতন ধর্মাবলম্বী নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের পর ন্যক্কারজনক এ হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার

করা হলেও তাদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত রিমান্ডে নেয়া হয়নি। কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন এ ব্যাপারে ভোরের কাগজকে জানান, তাদের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হলেও গতকাল মঙ্গলবার রিমান্ডের শুনানি হয়নি, আজ বুধবার এ বিষয়ে শুনানি হবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার শুরুতেই এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী ঘটনা অসাম্প্রদায়িক একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বিব্রতকর ও লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। গত রোববার (১০ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে একটি মিনি ট্রাকে করে ফিরিঙ্গিবাজার এলাকার ঐতিহ্যবাহী শিববাড়ী দুর্গাপূজার মণ্ডপে প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সময় জাম্বুরা বোঝাই অপর একটি ট্রাক থেকে জাম্বুরা ছুড়ে মেরে প্রতিমা ভেঙে দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢোলবাদ্য সহকারে প্রতিমা নেয়ার সময় দামুয়াপুকুর পাড় এলাকায় আড়তের সামনে থেকে জাম্বুরা ছুড়ে মারা হয়। জাম্বুরার আঘাতে দুর্গা ও সরস্বতী প্রতিমার একটি করে হাত এবং সরস্বতীর বাহন হাঁসের মাথা ভেঙে যায়। ঘটনার পর ফিরিঙ্গিবাজার ও আশপাশের পূজামণ্ডপ থেকে কয়েকশ পূজার্থী কোতোয়ালি থানা ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভের মধ্যেই পুলিশ অভিযান শুরু করে ফলের আড়তে গিয়ে জাম্বুরাবোঝাই ট্রাকের চালক ও সহকারীকে গ্রেপ্তার করে। পরে আরো একজন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে দুলাল (৩৫), কবির (৪২) ও ইকবাল (৩২)।
খবর পেয়ে নগর পুলিশের উপকমিশনার বিজয় বসাক, মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক হিলোল সেন উজ্জ্বল, ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিনসহ অন্যান্য নেতা ঘটনাস্থলে যান। পরে তারা ঘটনাস্থলের অদূরে শিববাড়ী পূজামণ্ডপেও যান। শিববাড়ী পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অমিত কুমার হোড় বলেন, ‘এমন একটি স্পর্শকাতর ঘটনার পেছনে কে বা কারা রয়েছে তা নিশ্চিত করাসহ প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের রিমান্ড এবং সুষ্ঠু তদন্ত অত্যন্ত জরুরি। আমরা প্রশাসনের কাছে সে দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে উপকমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাক ভোরের কাগজকে বলেন, প্রতিমা ভাঙার ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুইজনকে পরবর্তী সময়ে আরো একজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে একজন ট্রাকের চালক, শ্রমিক এবং পরে আরেক শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছি, তদন্ত চলছে। ট্রাকটিও আটক করা হয়েছে। যারাই ঘটনায় জড়িত, সবাইকে ধরা হবে। কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন বলেন, ‘পূজামণ্ডপের সভাপতি অমিত কুমার হোড় বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ঘটনায় আরো কারা জড়িত সে বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।’ স্থানীয় চসিক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বলেন, ‘ফিরিঙ্গিবাজারে অর্ধশতাধিক ফলের আড়ত আছে। সেখানে প্রতিদিন ট্রাকে করে ফল আসে। পরিবহনের ও আড়তের মিলিয়ে সেখানে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে। বাইরের জেলা থেকেও অনেক শ্রমিক আসে। তাদের মধ্যে কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়