তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন : পূর্ণ প্যানেলে জয়ী কাজিম-আয়েজ পরিষদ

আগের সংবাদ

যুদ্ধাপরাধ বিচারে স্থবিরতা ; বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এগিয়ে নিতে সরকারের আগ্রহ নিয়ে সংশয়! ট্রাইব্যুনালেও জনবল সংকট

পরের সংবাদ

বার্সার ভঙ্গুর দশার যত কারণ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : গত এক দশকে ইউরোপিয়ান ফুটবলে আধিপত্য ছিল স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগায় সব জায়গায় শুধু সাফল্য আর সাফল্য পেয়েছে তারা। এ ক্লাবটির হয়ে খেলার জন্য মুখিয়ে থাকেন বিশ্বের সব খেলোয়াড়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ খারাপ সময় যাচ্ছে বার্সার। মাঠের খেলায় ও মাঠের বাইরের ব্যাপার, কোনো দিক দিয়েই ভালো নেই কাতালানরা।
বর্তমানে আর্থিক সমস্যা ও ঋণে জর্জরিত তারা। এ নিয়ে চিন্তার কোনো শেষ নেই ক্লাবটির কর্তাদের। সেই একই সময় লা লিগায় তাদের অবস্থা করুণ। এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাউন্ড ষোল থেকে বাদ পড়ার দ্বারপ্রান্তে আছে তারা।
বার্সার এ আর্থিক সমস্যাটি একদিনে বা হঠাৎ করে তৈরি হয়নি। দীর্ঘদিন আগেই আজকের এ পরিণতির বীজ বপণ করেছিল তারা। আর এ সমস্যার সূত্রপাত হয় মূলত পরিকল্পনা ছাড়া অনেক টাকা খরচ করে খেলোয়াড় কেনার কারণে।
বার্সেলোনা গত কয়েক বছর মিলিয়ে ওসমান দেম্বেলে, কুতিনহো ও আন্তোনিও গ্রিজম্যানকে কেনে প্রত্যেকের পেছনে ১০০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি খরচ করে। ওই সময় তাদের পেছনে শুধু টাকাই খরচ করে বার্সা। কিন্তু পরবর্তীতে এর প্রভাব কেমন পড়তে পারে তা ভাবেনি ক্লাবটি। দ্বিতীয়তো বার্সা দল বদলে তো পরিকল্পনা ছাড়া টাকা খরচ করেছেই, তার ওপর তারা ক্লাবে থাকা অন্য খেলোয়াড়দেরও বেতন বাড়িয়েছে। একটি রিপোর্টে উঠে এসেছে পুরো ইউরোপের ফুটবলে বার্সা বেতন দেয়ার দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি টাকা ঢেলেছে। তাদের ধারে কাছেও ছিল না অন্য কোনো ক্লাব। এমনকি অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে তাদের আয়ের তুলনায় বেতনই ছিল বেশি।
বার্সেলোনার আর্থিক অবস্থা যে খারাপ হয়ে যাবে তা ক্লাবের কোনো কর্তা ভাবেননি। বিষয়টি ভাবার কোনো দরকারও তাদের ছিল না। কারণ একে তো তারা ইউরোপের সেরা ক্লাব ছিল তার ওপর সমানতালে সাফল্যও পাচ্ছিল। ফলে বার্সার আয়ের উৎসের অভাব ছিল না। সবকিছু বেশ ভালোভাবেই চলছিল। কিন্তু সবকিছু উলট পালট করে দেয় করোনা ভাইরাস। ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনে করোনা নামে নতুন একটি ভাইরাসের উদ্ভদ হয়।
যার কারণে থমকে যায় বিশ্বের সব স্বাভাবিক কার্যক্রম। এটির প্রভাবে ২০১৯ সালের শেষ দিক থেকে শুরু করে ২০২০ সালের প্রায় পুরোটা সময় থমকে ছিল পৃথিবীর সব কার্যক্রম। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খেলাধুলাও বন্ধ হয়ে যায়। আর এই করোনার প্রভাবে ইউরোপিয়ান বা পুরো বিশ্বের যে কোনো ক্লাবের চেয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বার্সেলোনা।
করোনার কারণে খেলা বন্ধ হওয়ায় ম্যাচের দিন যে আয় হতো সেটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বার্সার। জার্সি বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। বার্সার আয়ের আরেকটি বড় উৎস ছিল তাদের স্টেডিয়াম। টিকেট কেটে ম্যাচের দিন ছাড়াও স্টেডিয়ামটিতে প্রবেশ করে ঘুরতে পারত দর্শকরা। বার্সার বিভিন্ন সময় অর্জিত ট্রফিগুলো দেখতে পারত। যেহেতু করোনার প্রথম ধাক্কায় স্পেনে কঠোর লকডাউন দেয়া হয়েছিল ফলে এ খাতটি থেকেও তাদের আয় বন্ধ হয়ে যায়। বার্সার প্রত্যেকটি ম্যাচের অনেক বেশি দাম ছিল। এই ম্যাচগুলোর সম্প্রচার স্বত্ব কিনে নেয়ার জন্য ও ম্যাচগুলোতে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য অনেক টাকা বার্সাকে দিত প্রতিষ্ঠানগুলো। এটিও বন্ধ হয়ে যায়।
আর হঠাৎ করে সব ধরনের আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বার্সার অবস্থাও খারাপ হয়ে যায়। তারা ধীরে ধীরে বুঝতে পারে পরিকল্পনা না করে কাজ করে কত বড় বিপদ ডেকে এনেছে। বর্তমানে বার্সার অবস্থা খুবই শোচনীয়।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে বার্সা যখন ভাবছিল ঘুরে দাঁড়াবে তখন আরেকটি বড় ধাক্কা খায় তারা। আর সেটি মেসি চলে যাওয়ার মাধ্যমে। মেসিকে ধরে রাখতে না পেরে বার্সা বলতে গেলে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছে। কারণ মেসি বার্সা ছাড়ার পর অনেক স্পন্সরকারী প্রতিষ্ঠান সরে যায়। এতে করে বার্সা আরো বেকায়দায় পরে যায়।
বার্সা এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে নতুন করে। এজন্য নিজেদের জার্সির স্বত্ব বিক্রি করার জন্য নতুন স্পন্সরকারী প্রতিষ্ঠান খুঁজছে বার্সা। বর্তমানে তাদের জার্সির স্পন্সরকারী প্রতিষ্ঠান হলো নাইকি।
বার্সার এ অবস্থার আরো উন্নতি হবে যদি তারা তাদের পারফরম্যান্সের উন্নতি ঘটাতে পারে। এখন বার্সাকে নতুন করে দল ঢেলে সাজাতে হবে। এতে করে ফের চাঙ্গা হবে তাদের দল। তবে মেসি বার্সা ছাড়ার পর তার জায়গায় কে হাল ধরবেন এটি এখনো নিশ্চিত না। এখন পর্যন্ত নতুন মৌসুমের অনেকটা সময় পার হয়ে গেলেও তারা তেমনভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়