তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন : পূর্ণ প্যানেলে জয়ী কাজিম-আয়েজ পরিষদ

আগের সংবাদ

যুদ্ধাপরাধ বিচারে স্থবিরতা ; বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এগিয়ে নিতে সরকারের আগ্রহ নিয়ে সংশয়! ট্রাইব্যুনালেও জনবল সংকট

পরের সংবাদ

পূজায় শৈশবের সেকাল-একাল

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১:০০ পূর্বাহ্ণ

শারদীয় দুর্গাপূজা বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ যেন আমাদের শাশ্বত মিলনের উৎসব। আবহমান বাঙালির অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। বাঙালির ঐতিহ্যের উৎসবও বটে। শৈশবে দুর্গাপূজার আনন্দ উৎসবে উদ্বেলিত হননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। দুর্গাপূজা সব বয়সি মানুষের আনন্দ আর সকলের মঙ্গল কামনায় একত্রিত হবার দিন। সমাজের দুর্গতি নাশের প্রার্থনায় মগ্ন থেকে মানুষে মানুষে সম্প্রীতি গড়ার দিন। শৈশবের দুর্গাপূজার স্মৃতি অনেকের মনে এখনো অমলিন। দুর্গাপূজা এলেই আমরা নস্টালজিয়ায় ফিরে যাই কেউ কেউ, বিশেষ করে যাদের সাথে পূজার সম্পৃক্ততা যে কোনো কারণে সবসময় একটু বেশিই ছিল। যারা হয়তো সময় বা ব্যস্ততার কারণে এখন অনেকটাই দূরে, কিন্তু তারা সেই দিনগুলো দারুণভাবে মিস করেন। আমাদের পাড়ায় এক সময় দারুণ জমজমাট পূজা হতো। শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে এগিয়ে থাকা আমাদের এলাকার পূজা ছিল সেই অঞ্চলের সেরা। সেরা ছিল সেই অর্থে প্রতিদিন ধর্মীয় নাটক, ধর্মীয় যাত্রাপালা, ধর্মীয় সংগীতানুষ্ঠান ও নানা ধরনের অনুষ্ঠানে সমৃদ্ধ ছিল প্রতিটি দিন। অনেক আগে থেকেই এগুলোর রিহার্সেল হতো। এখন সেই সব দিনের পরিবর্তন ঘটেছে। পূজার সেই রীতি, আচার, আনন্দতেও এসেছে এক ধরনের পরিবর্তন। সেই শৈশবের দুর্গাপূজার সাথে বর্তমান সময়ের দুর্গাপূজার আনন্দের মধ্যে বিস্তর ফারাক। ফারাকটা হয়েছে চিন্তা-চেতনায় আর সময়ের বিবর্তনে। সেই পরিবর্তনের ছোঁয়ায় পূজা তার সাত্ত্বিক তত্ত্ব হারিয়ে হয়ে উঠেছে এক ধরনের শুধুই বিনোদনের মাধ্যম। সেই বিনোদনের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়টি অনেকটাই ¤øান। চারদিকের পূজা দেখলেই তা সহজেই দৃশ্যমান হবে। দুর্গাপূজাতো হিন্দু সমাজে প্রচলিত একটি অন্যতম বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। আশ্বিন এবং চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে দুর্গাপূজা করা হয়। আশ্বিন মাসের দুর্গাপূজা অর্থাৎ শরৎকালে অনুষ্ঠিত হয় বলে শারদীয় দুর্গাপূজা এবং চৈত্র মাসের দুর্গাপূজা অর্থাৎ বসন্তকালে অনুষ্ঠিত হয় বলে বাসন্তী দুর্গাপূজা নামে পরিচিত। শারদীয় দুর্গাপূজার জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি এবং এটিই প্রধান ধর্মীয় উৎসব হিসেবে বিবেচিত। বাসন্তী দুর্গাপূজা খুবই কম অনুষ্ঠিত হয়। দুর্গাপূজা এলেই জীবনের অতল গর্ভে তলিয়ে যাওয়া নানা স্মৃতি মনে উঁকি দেয়। মন যেন জাদুছোঁয়া আকর্ষণে ফিরে যেতে চায় শৈশবের দুরন্ত দিনগুলোতে। গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় দুর্গাপূজার দুর্নিবার আকর্ষণ এখনো মনে দাগ কাটে। শরতের সাদা কাশফুলের শুভ্র ছোঁয়ায় আর শিউলি ফুলের সুবাসিত গন্ধে মাতোয়ারা করে শারদীয় দুর্গোৎসব আমাদের সামনে এক অনাবিল অপার সৌন্দর্য ও স¤প্রীতির বার্তা নিয়ে হাজির হয়। প্রকৃতপক্ষে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি শুরু হয় প্রায় মাসখানেক আগে থেকে। এ পূজার সাথে জড়িত থাকে পাড়ার বা গ্রামের যুবক স¤প্রদায়। পূজার জন্য মিটিং হয় এবং কমিটিও গঠিত হয়। কোনো কোনো জায়গায় ব্যক্তিগত উদ্যোগেও দুর্গাপূজা হয়। ব্যক্তিগত উদ্যোগে হলেও সেখানে যুব স¤প্রদায়ের প্রাধান্য থাকেই। দুর্গাপূজা মানে একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। সপ্তাহব্যাপী এর মূল অনুষ্ঠান হলেও প্রকৃতপক্ষে মহালয়ার মাধ্যমেই দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। শৈশবে মহালয়ার সেই প্রভাতে ভারতের বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠান শোনার জন্য মন উদগ্রীব থাকত। বেতার থেকে প্রচারিত সেই অনুষ্ঠান শুনতে আগের দিন থেকে চলতো প্রস্তুতি। ভোর চারটার দিকে অনুষ্ঠান শুরু হতো বলে ঘুম থেকে জেগে ওঠার জন্য রাতে ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখা হতো। কোনো সময় অ্যালার্ম দিতে ভুলে গেলে ভোরে ঘুম থেকে জাগতে না পারার কারণে কোনো কোনো বছর সে মহালয়া আর ভোরে শোনা হতো না। এ নিয়ে আফসোসের অন্ত থাকত না। সে সময় পাড়াতে তখন সকলের ঘরে রেডিও ছিল না। মুষ্টিমেয় কয়েজনের ঘরে রেডিও ছিল। আগ্রহী অনেকেই ভোরে সেই ঘরে এসে রেডিওতে মহালয়ার অনুষ্ঠান শুনত। সবাই বিবিসির খবর শোনার মতো রেডিও ঘিরে বসে থাকত। কী এক মোহনীয় চৌম্বক শক্তি ছিল সেই মহালয়া অনুষ্ঠানের। মহালয়ার সেই আবেদন এখনও সমানভাবে মানুষকে টানে। কিন্তু শোনার ধরন ও প্রকৃতি পাল্টে গেছে। এখনো রেডিওতে এটি মহালয়ার দিন ভোরে এটি প্রচারিত হয়, কিন্তু মানুষরা সেটি শোনার জন্য গ্রামাঞ্চলে এখন বাড়িতে বাড়িতে ভিড় করেন না। আমাদের ঘরে সেই সময়ে একটি ‘ন্যাশনাল প্যানাসনিক’ রেডিও ছিল। সেই রেডিওতে মহালয়ার অনুষ্ঠান শোনার জন্য ছিল আগে থেকে থাকত মহাপরিকল্পনা। রেডিওটি এখনো পরিত্যক্ত যন্ত্র হিসেবেই বাড়িতে আছে। সেই রেডিওতে গান শুনতে শুনতেই আমার গান লেখার প্রতি আগ্রহ। সুতরাং সেই রেডিও আমাকে অনেক প্রভাবিত করেছে সেই সময়। এখন সেই মহালয়া সিডিতে, ইউটিউবে, মোবাইলে রেখে, কিংবা মোবাইল রেডিওতে প্রতিনিয়ত শোনা যায়। প্রযুক্তির কাছে সেই সোনালি দিন আজ শুধুই অতীত। এখনো সেই মহালয়া অনুষ্ঠানের শিল্পীদের কণ্ঠ শুনলেই মন কী অনির্বচনীয় আনন্দে ভরে ওঠে। মনে হয় দুর্গাপূজা দ্বারে সমাগত। আর মহালয়ার সাথে একটি নাম অনিবার্যভাবে উঠে আসে সেই নামটি হলো বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। তার দরাজ কণ্ঠের গলাতে যখন চণ্ডীপাঠের মন্ত্র উচ্চারিত হয় তখন থমকে দাঁড়াতে হয়, কানকে করতে হয় সজাগ, মন হয়ে ওঠে শারদীয় উৎসবের আনন্দে উদ্বেলিত। মহালয়ার সেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠ শুনে গায়ে শিহরণ জাগে, ভাবতে হয় মানুষের কণ্ঠ কীভাবে এত সুন্দর হয়! এখনো মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমীর দিনে মহালয়ার সেই গান সম্বলিত অনুষ্ঠান মন্দিরে মন্দিরে বেজে ওঠে। পৌরাণিক পটভূমিতে বৈদিক মন্ত্র সমন্বিত এই মহালয়া অনুষ্ঠানটি অদ্বিতীয় ও অবিস্মরণীয় এক সৃষ্টি। এটি রচনা করেছেন বাণীকুমার আর গ্রন্থনা ও এতে শ্লোকপাঠ করেছেন অপূর্ব কণ্ঠের মায়াজাল ছড়ানো সেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। এই মহালয়া অনুষ্ঠানের কিছু গান ও সে গানের সুর যেন চিরকালীন আবেদনই ছড়িয়ে যাচ্ছে। পঙ্কজ কুমার মল্লিকের সংগীত পরিচালনায় দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘জাগো দুর্গা দশপ্রহরণধারিণী’, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘তব অচিন্ত্য’, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের, আরতি মুখোপাধ্যায় ও উৎপলা সেনের কণ্ঠে ‘শান্তি দিলে ভরি’ এবং সুপ্রীতি ঘোষের কণ্ঠে উচ্চারিত ‘বাজলো তোমার আলোর বেণু’ গানগুলো সেই শৈশব থেকে আজো আমাদের সবার মনকে পূজার আনন্দে ভরিয়ে তোলে। গানগুলো যেন চির যৌবনের গান। তার কোনো বার্ধক্য নেই। এই মহালয়ার অনুষ্ঠানে আরো কিছু গানের কথা এখানে বলা যায় যেমন সমবেত কণ্ঠে ‘চণ্ডী মধুকৈটভাদি’, ‘জয়ন্তী মঙ্গলা কালী’, কৃষ্ণা দাশগুপ্তের গাওয়া ‘অখিল বিমানে তব জয়-গানে’, শিপ্রা বসুর গাওয়া ‘ওগো আমার আগমনী আলো’, বিমল ভূষণের গাওয়া ‘নমো চণ্ডী- নমো চণ্ডী’, উৎপলা সেনের গাওয়া ‘শান্তি দিলে ভরি’, শ্যামল মিত্র, অসীমা ভট্টাচার্য, আরতি মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্যদের গাওয়া ‘শুভ্র শঙ্খ-রবে’সহ আরো কিছু গান কার না হৃদয় ছুঁয়ে যায়? শাঁখে তিন বার ফুঁ দেয়ার পর সমবেত কণ্ঠে গীত যা ‘চণ্ডী মধুকৈটভাদি’ গানের মাধ্যমে মহালয়া অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। মহালয়ার সেই রেকর্ডকৃত অনুষ্ঠান প্রতিবছর দুর্গাপূজার আগে মহালয়ার প্রভাতে এখনো প্রচারিত হয়। শৈশবে শোনার ঐ উন্মাদনা না থাকলেও সেই মহালয়ার রেকর্ডকৃত অনুষ্ঠানটির আবেদন তো চিরকালীনই রয়ে গেছে। ছোটবেলায় কখন দুর্গাপূজা আসবে সেই সময়ে একটা কাউন্টডাউন সময় গণনা শুরু হয়ে যেত মনে মনে। নতুন পঞ্জিকার পাতা উল্টালেই প্রথমেই চোখ বুলিয়ে নেয়া হতো কখন দুর্গাপূজা পড়েছে, সে সংবাদটা জেনে নেয়ার জন্য। আমাদের মন্দাকিনী মেলাতে তখন প্রথম বের হওয়া পঞ্জিকা পাওয়া যেত। মেলাতে গেলে অন্যান্য জিনিসের পাশাপাশি নতুন পঞ্জিকা কেনার পর্বটিও বাধ্যতামূলক ছিল। পঞ্জিকা কিনেই দুর্গাপূজার সময়টা আগেই জেনে নেয়া হতো। এ যেন এক বিমুগ্ধ আকর্ষণ। তারপর শুরু হতো দিনক্ষণ গণনা। মাসখানেক আগে থেকে চলতো নাটক, কৌতুক, যাত্রাপালা কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি। দিনক্ষণ ঠিক করে সময়ে সময়ে রিহার্সেল হতো পূজার আগে। পূজার দিনে সারা পাড়ার মানুষকে নিরামিষ তরকারিতে আপ্যায়ন করা হতো। বিজয়া দশমীর দিনে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান ও পরস্পরের কোলাকুলি যেন সৃষ্টি করত এক মায়াবী বন্ধন। পূজার পরও পূজার রেশ রয়ে যেত। বিজয়া পুনর্মিলনীর নামেও পরে পাড়ায় পাড়ায় নানা অনুষ্ঠান হতো। শহরে বসবাসকারীরা প্রাণের টানে গ্রামের বাড়িতে ছুটে যেতেন। প্রতিমা বানাতে আসলেই চারদিকে আনন্দের হিল্লোল বয়ে যেত। পাড়ার ছেলেরা প্রতিমা বানানোর খড় ও মাটি আনার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ত। আমাদের গ্রামের পাশেই হালদা নদী, হালদা নদী থেকে পলিমাটি তুলে আনা হতো, বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিমা তৈরির খড় আনা হতো। পূজার আগে এ ঘটনাগুলো পূজার আনন্দকেই ছড়িয়ে দিতো আগে থেকেই। প্রতিমা তৈরি করার সময় সবাই দল বেঁধে দেখতে আসতো। পাশের মুসলিম স¤প্রদায়ের বন্ধুবান্ধবরাও দেখতে আসত। এ যেন এক স¤প্রীতির আনন্দমেলা। পূজার সময় পূজার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, যাত্রাপালার নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বিধানে মুসলিম সস্প্রদায়ের বন্ধুবান্ধবদের সহযোগিতা ছিল উল্লেখ করার মতো। আজ থেকে কয়েক দশক আগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দুর্গাপূজার এসব চিত্র ছিল একটি অতি বাস্তবতা। সে জন্যই বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের গানটি যেন প্রাণের কথাই বলে, ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু-মুসলমান, মিলিয়া বাউলা গান আর মুর্শিদী গাইতাম।’ কিংবা তিনি যখন গানে বলেন, ‘হিন্দু বাড়িতে যাত্রাগান হইতো-নিমন্ত্রণ দিতো,আমরা যাইতাম।’ কী সুন্দর সহজ সরল উচ্চারণ, অথচ কতই বাস্তবতা। সেই দিনের সেই স¤প্রীতির দিনে ফিরে না গেলে তা অনুভব করা যাবে না, কেমন ছিল সেই সব দিন। সে গান শুনলেই তো আমাদের সেই চিরচেনা দিনেই ফিরে যাওয়া হয়। এখন গ্রামে সেই সব আবহমান বাংলার ঐতিহ্য সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আর তেমন চোখে পড়ে না। সবখানে যেন এক কৃত্রিমতার ছোঁয়া। পরস্পরের আন্তরিকতার সেই দিনগুলো যেন সদূর অতীত। সাউন্ড সিস্টেমের বেড়াজালে আবদ্ধ পূজা মণ্ডপ এখন গ্রামবাংলার সেই ঐতিহ্যকে ধারণ করছে না। উন্মাতাল নৃত্য, আর এক ধরনের ভিনদেশী জৌলুস পূজাকে ঘিরে ধরেছে। অনেক যুব সমাজ এ সস্তা বিনোদনকে পুঁজি করে পূজাকে তামসিক পূজায় পরিণত করেছে, যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পূজা মানে বিশ্বাস ও ঈশ্বরের আরাধনা। শারদীয় দুর্গোৎসব আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরই অংশ। বিগত কয়েক দশক আগের পূজাকে কল্পনা করলেই সে পূজাতে আমাদের গ্রামবাংলার অনেক ঐতিহ্যের দেখা মেলত। আজ যেন সেগুলো ধীরে ধীরে ইতিহাসের অংশ হয়ে যাচ্ছে। তবুও কোনো কোনো জায়গায় এখনো এসব অপসংস্কৃতির ঢেউ আঁচড়ে পড়েনি। কিছু জায়গায় এখনো ঐসব ঐতিহ্যের কিছু কিছু দেখা মেলে। তা দেখে ভালোই লাগে। কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানভিত্তিক পূজা এখনো সেই সাত্ত্বিক পূজার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। আমরা চাই পূজার নামে কোনো সস্তা বিনোদন নয়, পূজা হয়ে উঠুক রীতি আচার সমৃদ্ধ সত্যিকারের সাত্ত্বিক পূজা। আর অনেক গ্রাম ও শহরাঞ্চলে পূজার নামে বেড়েছে প্রতিযোগিতা, চলে এক ধরনের ¯œায়ুযুদ্ধ। সেই প্রতিযোগিতায় নেমে বেড়ে গেছে ঝগড়া বিবাদ। যার কারণে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিযোগিতার পূজাও বেড়ে গেছে। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিযোগিতার ঢেউ। স¤প্রীতি ও অসহিষ্ণুর জায়গাটা ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সবার শুভ বুদ্ধির উদয় হবে- এ প্রত্যাশা সকলের। সমাজ থেকে সকল অপশক্তি, অসুর শক্তি ও দুর্গতি বিনাশ করে সম্প্রীতি এবং মানব জাতির কল্যাণই বয়ে আনুক শারদীয় দুর্গাপূজা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়