তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন : পূর্ণ প্যানেলে জয়ী কাজিম-আয়েজ পরিষদ

আগের সংবাদ

যুদ্ধাপরাধ বিচারে স্থবিরতা ; বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এগিয়ে নিতে সরকারের আগ্রহ নিয়ে সংশয়! ট্রাইব্যুনালেও জনবল সংকট

পরের সংবাদ

ধনকুবের প্রিন্স মুসার সবই কি ফাঁকা বুলি! কাদেরকে তিনি ‘বাবাসোনা’ বলে ডাকতেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আলোচিত ধনকুবের প্রিন্স মুসা-বিন শমসেরের তেমন কিছুই নেই, বাস্তবে তিনি অন্তঃসারশূন্য! গতকাল মঙ্গলবার মুসা-বিন শমসেরকে প্রায় ৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গণমাধ্যমের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) হারুন-অর রশিদ আরো বলেন, নিজের আইন উপদেষ্টা কাদেরকে বাবা-সোনা বলে ডাকতেন মুসা। কাদেরও মুসাকে বাবা বলে ডাকত। তাদের মধ্যে হৃদ্যতার সম্পর্ক ছিল। ফলে কাদেরের প্রতারণার দায় মুসা-বিন শমসের এড়াতে পারেন না। তাকে রহস্যজনক মানুষ মনে হয়েছে।
এর আগে, গতকাল বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে স্ত্রী ও ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন প্রিন্স মুসা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার আবদুল কাদেরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের তিনটি বিষয়ে স্পষ্ট হতে মুসা-বিন শমসেরকে সাড়ে ৩ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। হারুন-অর রশিদ বলেন, মুখরোচক গল্প বলতে পছন্দ করেন মুসা। এরই অংশ হিসেবে, সুইস ব্যাংকে ৮২ মিলিয়ন ডলার আটকা রয়েছে, ব্যবহৃত কলমের দাম ১০ কোটি, ঘড়ির দাম ৮ কোটি, জুতার দাম ১০ কোটি, গাজীপুরে এক হাজার একর জমিসহ বিভিন্ন মনগড়া কথা বলতেন। অথচ থাকার মধ্যে শুধু গুলশানে তার একটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়াও কোথাও তার কোনো সম্পদ নেই। যুগ্ম কমিশনার আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে মুসা বলেছেন, সুইস ব্যাংকে থাকা তার ৮২ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার করতে পারলে ২য় পদ্মা সেতু করে দেবেন, পুলিশকে ৫০০ কোটি ও পাবনা মানসিক হাসপাতালে ৫০০ কোটি টাকা দেবেন। দুদকের ভবন করে দেবেন। গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, তার এসব কথাই খামখেয়ালি কথাবার্তা। প্রতারক আবদুল কাদের মুসার এই খামখেয়ালি কথাবার্তা বিক্রি করেই শত শত কোটি টাকা

হাতিয়ে নিয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে মুসা-বিন শমসের আরো দাবি করেন, তিনি কাদেরের প্রতারণার বিষয়ে কিছু জানেন না। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তার কাছে জানতে চান, কীভাবে তিনি একজন ‘নাইন পাস’ লোককে না বুঝে নিয়োগ দিলেন? তার থেকে ১০ কোটি টাকা নিয়ে কীভাবে লাভসহ ২০ কোটি টাকার চেক দিলেন? জিজ্ঞাসাবাদে মুসা তার পুত্রবৎ কাদেরের সম্পর্কে বেশি জানেন না বললেও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তার সঙ্গে কাদেরের অজস্র কথোপকথন উদ্ধার করেছেন।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, মুসা-বিন শমসের জানিয়েছেন, তিনি কাদেরের বিরুদ্ধে প্রতারণা আইনে মামলা দায়ের করবেন। মামলাটি দায়েরের পর আমরা তদন্ত করে দেখব। পাশাপাশি কাদেরের প্রতারণার সঙ্গে মুসার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হবে। প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারো ডাকা হতে পারে বলে জানান হারুন-অর রশীদ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুসা-বিন শমসের গণমাধ্যমের সামনে এসে বলেন, আমিও প্রতারণার শিকার হয়েছি। এ ভুয়া অতিরিক্ত সচিবের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। কাদেরের সঙ্গে ছবি তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ আমার কাছে গিয়ে ছবি তুলতে চাইলে আমি তো না করতে পারি না। সেই ছবি ব্যবহার করে যদি কেউ প্রতারণা করে থাকে, তার দায় আমি নেব না। প্রতারক আবদুল কাদেরের সঙ্গে ২০ কোটি টাকার চেকের লেনদেনের তথ্য পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওটা আমি ফেরত দিয়ে দিয়েছি।
এদিকে ডিবি সূত্র জানায়, মুসা-বিন শমসেরের কিছু টাকার প্রয়োজন ছিল। এজন্য কাদেরের কাছে একটি ফ্ল্যাট বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। বায়না হিসেবে কাদের তাকে টাকার চেক দিয়েছিল। পরে যখন বুঝতে পারেন কাদের প্রতারক, তখন ওই চেক ফেরত দিয়ে দেন। প্রসঙ্গত, প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার মিরপুর ৬ নম্বরে বাসা থেকে বাইরে যাওয়ার সময় স্ত্রী ও দুই সহকারীসহ গ্রেপ্তার হন মুসা-বিন শমসেরের আইন উপদেষ্টা কাদের। এরপরই ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয় মুসাকে। কিন্তু অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্রথম দিন ডিবি কার্যালয়ে গরহাজির থাকেন কথিত এই ধনকুবের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়