তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন : পূর্ণ প্যানেলে জয়ী কাজিম-আয়েজ পরিষদ

আগের সংবাদ

যুদ্ধাপরাধ বিচারে স্থবিরতা ; বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এগিয়ে নিতে সরকারের আগ্রহ নিয়ে সংশয়! ট্রাইব্যুনালেও জনবল সংকট

পরের সংবাদ

গ্রামজুড়ে জলাবদ্ধতা : ভবদহ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা স্কুলে যায় নৌকা চালিয়ে

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এস এম রফিকুল আলম, নওয়াপাড়া (যশোর) থেকে : জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন নৌকা চালিয়ে উপজেলার ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়। বিদ্যালয়সহ গ্রামটি ভবদহ এলাকার অন্তর্গত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমের ভারি বর্ষণে গ্রামজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক জলাবদ্ধতা। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও ক্ষেতের ফসল। ভেসে গেছে শত শত মৎস্য ঘের।
সরজমিন ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে পানি আর পানি। সেই পানির মধ্যে ডুমুরতলা সরকারি বিদ্যালয়ের ভবনগুলো দাঁড়িয়ে আছে। স্কুলের পুরনো ভবনের শ্রেণিকক্ষের ভেতরেও পানি। যে কারণে সেখানে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে পাশের নতুন ভবনে পাঠদান চলছে। এ সময় স্কুলের খেলার মাঠে জমে থাকা পানির বুকচিরে একটি নৌকা আসতে দেখা যায়। নৌকা চালাচ্ছে কয়েকজন শিশু। তাদের পরনে সাদা রংয়ের টিশার্ট ও নীল রংয়ের প্যান্ট। ওদের নৌকা স্কুলের নতুন ভবনের বারান্দায় এসে দাঁড়ায়।
নৌকা থেকে নেমে ওরা প্রবেশ করে শ্রেণিকক্ষে। শুধু এ তিন শিক্ষার্থীই নয়, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদেরও যাতায়াত করতে হয় নৌকায়।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র দেব কুমারের সঙ্গে কথা হলে সে জানায়, প্রথম শ্রেণি থেকে সে এ স্কুলে পড়ালেখা করছে। বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার রাস্তায় কোমর পানি। আগে বাইসাইকেলে করে স্কুলে এলেও এখন নৌকায় করে আসতে হয়। বাড়িতে দুটি নৌকা থাকায় একটি নৌকায় সে কয়েক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। নৌকা ডুবে গেলে কী হবে এমন প্রশ্নে দেব কুমারসহ অন্য শিক্ষার্থীরা হাসতে শুরু করে। সবাই জানায়, তারা সাঁতার জানে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পলাশ মল্লিক জানান, স্কুলের পুরনো ভবনের সব শ্রেণিকক্ষের মধ্যে হাঁটু পানি জমে আছে। নতুন ভবন না থাকলে স্কুল বন্ধ রেখে অন্যত্র ক্লাস করাতে হত। বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে ভবদহ এলাকায় পানি বাড়তে শুরু করায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে স্কুলসংলগ্ন পাকা সড়কে প্রায় তিন ফুট পানি। স্কুল মাঠে ছয় থেকে সাত ফুট পানি জমে আছে। গত ৩ মাস ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে।
তিনি আরো জানান, স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬০ জন, শিক্ষক পাঁচজন। হাঁটু পানিতে ডুবে থাকা পাকা রাস্তা থেকে স্কুলে যাতায়াতে নৌকার প্রয়োজন হয়। যে কারণে গ্রামবাসী ও ম্যানেজিং কমিটি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য স্থায়ীভাবে দুটি নৌকা দিয়েছে, যা স্কুলের সবাই

ব্যবহার করেন।
তবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর সরজমিন আমাদের স্কুলে এসেছিলেন। জলাবদ্ধতা দেখে তিনি একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সাঁকো হলে স্কুলে যাতায়াতের জন্য নৌকার প্রয়োজন হবে না।
তিনি আরো জানান, ভবদহ এলাকার কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেছি। সব থেকে ঝুঁকি ও জলাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নৌকায় করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। যতো দ্রুত সম্ভব ওই স্কুলে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়