২৩ অক্টোবর ভোট গ্রহণ : বিএফইউজের নির্বাচনে আর বাধা নেই

আগের সংবাদ

বাঙালির মাতৃপূজা দেশমাতৃকার পূজা থেকে আলাদা নয়

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপে এবার রেকর্ডের হাতছানি মাহমুদউল্লাহর

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কখনো পেরোতে পারেনি গ্রুপ পর্বের বাধা। তার চেয়ে বড় কথা গত কয়েক আসর বাংলাদেশ দল মূল পর্বে খেলার টিকেট সংগ্রহ করতে খেলতে হচ্ছে বাছাইপর্বের ম্যাচ। অথচ বাংলাদেশের তুলনায় তরুণ দল আফগানিস্তান সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর খেলছে সরাসরি। তবে বাংলাদেশ এবার স্বপ্ন দেখছে নতুন কিছু করার। টি-টোয়েন্টিতে ইতোমধ্য বাংলাদেশ বেশ কিছু নতুন সাফল্য অর্জন করেছে। মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হারিয়েছে ক্রিকেট পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়াকে। শুধু ম্যাচ জয় নয়, অজিদের টাইগাররা ৫ ম্যাচ সিরিজে প্রায় হোয়াট ওয়াশই করে ফেলছিল। সিরিজটি বাংলাদেশ দল জিতে নেয় ৪-১ ব্যবধানে। এরপর রিয়াদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয়ের স্বাদ পায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। একইসঙ্গে ৫ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতে নেয় টাইগাররা। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও তিন ম্যাচের সিরিজ রিয়াদবাহিনী জিতে নেয় ২-১ ব্যবধানে। মাহমুদ উল্লাহর নেতৃত্ব গুণের ওপর কতটা বিশ্বাস রাখা যায় তার একটি উদাহরণ হতে পারে ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার নিদাহাস ট্রফির ষষ্ঠ ম্যাচটি। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজটির ওই ম্যাচে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্য যারা জয় পেত তারাই ফাইনালে পৌঁছে যেত। ওই ম্যাচে আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলো বাংলাদেশকে হারের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। সেবার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ব্যাটিংয়ে থাকা রিয়াদ ও মোস্তাফিজকে প্রতিবাদ হিসেবে মাঠ ছেড়ে আসার আহ্বান জানান। কিন্তু রিয়াদ মাঠের সব সিদ্ধান্ত নিজের কাঁধে নিয়ে প্রায় হারতে বসা ম্যাচটিতে টাইগারদের জয় এনে দেন। এবার জাতীয় দলের অধিনায়ক রিয়াদ। ভক্তদের প্রত্যাশা নিদাহাস ট্রফির মতোই বাংলাদেশকে গাইড করে সাফল্যের উচ্চ শিখরে নিয়ে যাবেন রিয়াদ।
এর আগে গত ছয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন চার টাইগার। কিন্তু মোহাম্মদ আশরাফুল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাশরাফি বিন মোর্তজার নেতৃত্বে আসরগুলোতে রূপকথার গল্প লিখতে পারেনি টাইগাররা। এর মধ্য আশরাফুল বাংলাদেশকে ২০০৭ ও ২০০৯ দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। প্রথম বিশ্বকাপ আসরে ৫ ম্যাচের মধ্য একটি জয় এসেছিল অ্যাশের নেতৃত্বে। পরের আসর ২০০৯ সালে ৩ ম্যাচের সব আশ্রাফুলের নেতৃত্বে হারে বাংলাদেশ। পরবর্তী আসরে ২০১০ সালে নেতৃত্ব কাঁধে নিয়ে দলের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেননি সাকিব। ওই আসরে বাংলাদেশ ৩ ম্যাচের সব হারে। এরপর ২০১২ সালে নেতৃত্ব কাঁধে নেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ ওই আসরে ২ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেও জয় পায়নি একটিতেও। মুশফিক আরেকবার সুযোগ পান দেশের মাটিতে ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পঞ্চম আসরে। বাছাইপর্বে ৩ ম্যাচের দুই ম্যাচে জিতলেও মূল পর্বে ৪ ম্যাচের সব হারে বাংলাদেশ। এরপর ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ষষ্ঠ আসরে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেয় মাশরাফি। ২০১৫ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ প্রথমবার কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে ম্যাশের নেতৃত্বে। ফলে সবার প্রত্যাশা ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভালো কিছু করবে। কিন্তু আসরে বাছাইপর্বের দুই ম্যাচ ছাড়া মূল পর্বে চারটির সবকটি হারে বাংলাদেশ।
তবে এবার মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভালো কিছুর প্রত্যাশা দেখাচ্ছে। তাছাড়া দলে বেশ কিছু তরুণ হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান যোগ হয়েছে বাংলাদেশ দলে। আফিফ, শামীম, সৌম্য, লিটন, নাইম; যাদেরকে বলা যায় টি-টোয়েন্টির আদর্শ ব্যাটসম্যান। পেস বোলিংয়ে দুই টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট সাইফুদ্দিন ও মোস্তাফিজ বাড়তি অনুপ্রেরণা অধিনায়ক রিয়াদের জন্য। মরুর বুকে গতির জন্য রিয়াদের হাতে অপশন হিসেবে আছে তাসকিন ও রুবেল। আর স্পিন বিভাগে মাহেদী, নাসুমরা তো রয়েছেই। তাছাড়া তিন সিনিয়র সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ বাংলাদেশকে তাদের ৬টি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা দিয়ে ম্যাচে সাফল্য এনে দেবে। ফলে দেখা যাচ্ছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কাছে যেসব অস্ত্র মজুত আছে তা যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় তাহলে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতাও অসম্ভব কিছু না বাংলাদেশের জন্য।
য় জুনায়েদ হোসেন

এদিকে এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল সেমিফাইনাল খেলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন। একটু বেশিই আত্মবিশ্বাসী সুজন বলেন, ‘আমার প্রত্যাশা সবসময়ই ভালো। আমি চিন্তা করি, বাংলাদেশ নিজেদের সেরাটা খেলবে। বাংলাদেশ সেমিফাইনাল খেলবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করতে পারে, নিউজিল্যান্ড ভারত শ্রীলঙ্কা পাকিস্তানের মতো বড় বড় দল থাকতে আমরা কীভাবে সেমিফাইনাল খেলব। আমি বলব, এই সংস্করণটা এমন একটা সংস্করণ যে কেউ এখানে যে কাউকে হারাতে পারেন।’ গত বিশ্বকাপে ভারতকে প্রায় হারিয়েই দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই উদাহরণ টেনে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা কিন্তু এর আগেও ভারতের সঙ্গে এ সংস্করণে জিততে জিততে হেরেছি। জেতা ম্যাচ আমরা হেরেছি। বারবার তো আমরা এক ভুল করব না। আমার দলে মুশফিক, সাকিব, রিয়াদ, মোস্তাফিজ আছে। যারা সিনিয়র প্লেয়ার আছে, যদি জ্বলে ওঠে। আমি বলব লিটন এখন অনেক অভিজ্ঞ, নাইম শেখ আছে। তারা যদি টপঅর্ডারে জ্বলে ওঠে, আমাদের আটকানো মনে হয় মুশকিল হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়