২৩ অক্টোবর ভোট গ্রহণ : বিএফইউজের নির্বাচনে আর বাধা নেই

আগের সংবাদ

বাঙালির মাতৃপূজা দেশমাতৃকার পূজা থেকে আলাদা নয়

পরের সংবাদ

ফুটবলে ধনকুবেরদের লড়াই

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফুটবলের পাওয়ার হাউস বলা হয় ইউরোপকে। গতি, ক্ষিপ্রতা, শৈল্পিকতা কি নেই ইউরোপিয়ান ফুটবলে। বিশ্বের প্রায় সব ফুটবল ভক্ত ইউরোপের খেলা দেখেন ও খোঁজ খবর রাখেন। বিশ্বের সব সেরা ফুটবলাররা এখানে খেলে থাকেন।
আর ইউরোপিয়ান ফুটবলে এ কারণে অনেক আগে থেকেই ধনকুবেরদের নজর পড়েছে। তারা এখন ওই অঞ্চলের ফুটবলের প্রতি বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে। ইউরোপিয়ান ফুটবলে ধনকুবেরদের মধ্যে সর্বশেষ ইংলিশ ক্লাব নিউক্যাসল ইউনাইটেড কিনে নিয়েছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
ইংলিশ ফুটবলের মধ্যম সারির এ দলটি এখন আমূল বদলে যাবে। নতুন কোচ আসবে। নতুন খেলোয়াড় আসবে। ক্লাবের চেহারাই বলতে গেলে পরিবর্তন হয়ে যাবে। কারণ নিউক্যাসলের নতুন মালিক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান হলেন বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম।
ইউরোপিয়ান ফুটবলে ধনকুবেরে ক্লাব কিনে নেয়ার ঘটনা নতুন না। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের ধনকুবেররা এ ক্ষেত্রে বেশি এগিয়ে। যেমন কাতারের আমীর তামিম বিন হামাদ আল থানির প্রত্যক্ষ সমর্থনে ২০১১ সালে পিএসজির মালিকানা কিনে নেয় কাতার। এ ক্লাবটির দেখভালের দায়িত্ব তিনি দিয়েছেন তার বন্ধু নাসের আল খেলাইফিকে। অপরদিকে ২০০৮ সালে ম্যানচেস্টার সিটির মালিকানা কিনে নেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এ দুটি ক্লাবের অবস্থা এখন অন্য যে কোনো ক্লাবের চেয়ে ভালো। কারণ ক্লাবগুলোর পেছনে অঢেল টাকা ঢালা হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দুই ধনী ক্লাব হলো ম্যানসিটি ও পিএসজি।
পিএসজির তো ধারে কাছেও কেউ নেই। কাতারের টাকায় চলা ক্লাবটি মেসি, নেইমার ও এমবাপ্পের মতো খেলোয়াড়দের দলে ভিড়িয়েছে তারা। ২০১৭ সালে নেইমারকে ২০০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে বার্সা থেকে নিয়ে এসেছিল তারা। যা বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি দল বদলের ঘটনা।
অপরদিকে ম্যানসিটি তো এবার ইংলিশ ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ করে অ্যাস্টন ভিলা থেকে জ্যাক গ্রিলিশকে এনেছে। গ্রিলিশকে কিনতে ম্যানসিটি খরচ করেছে ১০০ মিলিয়ন ইউরো।
এবার টাকার ঝংকার দেখানোর তালিকায় যোগ দিতে যাচ্ছে নিউক্যাসল ইউনাইটেড। ইতোমধ্যেই শোনা গেছে খরচের দিক দিয়ে পিএসজিকে ছাড়িয়ে যাবে নিউক্যাসল। আর টাকা খরচ করতে পারলে বিশ্বের সব সেরা খেলোয়াড়কে একত্রিত করতে পারবে তারা।
পৃথিবীর পুরনো ক্লাবগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এই নিউক্যাসল। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯২ সালে। সে সময় নিউক্যাসল ইস্ট ও নিউক্যাসল ওয়েস্ট নামে দুটি ক্লাব ছিল। আর এই দুটি ক্লাব এক হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় নিউক্যাসল ইউনাইটেড।
নিউক্যাসল ১৮৯৩ সাল থেকেই ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ লিগে খেলছে। আর একশ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে ৮৮ বার সর্বোচ্চ লিগেই খেলেছে। কখনো কোনো মৌসুমে তৃতীয় সারির লিগে খেলতে হয়নি তাদের। ইংল্যান্ডের ফুটবলের ইতিহাসে এমন কীর্তি গড়তে পেরেছে হাতেগোনা কয়েকটি ক্লাব। আর নিউক্যাসল হলো তাদের মধ্যে অন্যতম একটি।
তবে সারাজীবন সর্বোচ্চ লিগে খেললেও তাদের সাফল্যটা খুব বেশি না। তারা এখন পর্যন্ত মাত্র চারবার লিগের শিরোপা জয় করেছে। এছাড়া ছয়বার এফ এ কাপের শিরোপা ও একবার করে চ্যারিটি শিল্ডের, ইন্টার সিটি ফেয়ার্স কাপ ও উয়েফা ইন্টার টোটোর শিরোপা জয় করেছে। নিউক্যাসল তাদের সেরা সময় কাটিয়েছে ১৯০৪ থেকে ১৯১০ সাল পর্যন্ত। এই সাত বছরে তারা তিনবার এফ এ কাপের শিরোপা জয় করেছিল। কিন্তু এখন কয়েক মৌসুম পর ইংলিশ ফুটবলে তারা টক্কর দেবে ম্যানসিটি ও লিভারপুলের বিপক্ষে। ইউরোপিয়ান ফুটবলে টক্কর দেবে বার্সেলোনা, পিএসজি ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবগুলোর সঙ্গে। ঐতিহ্যে ভরপুর দেখেই নিউক্যাসলের দিকে নজর দিয়েছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান। এ ক্লাবটি তিনি অবশ্য কিনতে চেয়েছিলেন আরো দুই বছর আগে। কিন্তু তখন তিনি কাতারের সঙ্গে কিছুটা ঝামেলার কারণে ক্লাবটি কিনতে পারেনি। কাতারের সঙ্গে ঝামেলা কেটে যাওয়ার পর এখন তিনি ক্লাবটি কিনে নিয়েছেন।
কাতারের সঙ্গে সৌদি আরবের একটি বৈরিতা আছে। এই দুদেশের মধ্যে যে কোন বিষয় নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা চলে। এখন ফুটবল ক্লাবের মাধ্যমেও এই দুই দেশ একটি মজার প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নামবে। সেটি হবে কে কার চেয়ে বেশি শক্তিশালী ক্লাব বানাতে পারে আর ইউরোপিয়ান ফুটবলে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়