২৩ অক্টোবর ভোট গ্রহণ : বিএফইউজের নির্বাচনে আর বাধা নেই

আগের সংবাদ

বাঙালির মাতৃপূজা দেশমাতৃকার পূজা থেকে আলাদা নয়

পরের সংবাদ

চলনবিলে নির্বিচারে চলছে পাখি শিকার

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. মাজেম আলী মলিন, গুরুদাসপুর (নাটোর) থেকে : বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বানানো ডাংয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে শিকারি বক। ডাংয়ের সেই বক-ই মূলত শিকারির পাখি শিকারের প্রধান অস্ত্র। বেতের আর কলাপাতা দিয়ে বানানো হয়েছে পাখি শিকারের ঘর। শিকারি বকের ডানা ঝাপটানো দেখে আশপাশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বক এসে পড়ছে সেই ঘরে। ঘরে লুকিয়ে থাকা শিকারিরা এসব বক ধরে ধরে খাঁচায় ভরছেন। প্রতিদিন ভোর বেলায় এভাবেই চলনবিলজুড়ে অভিনব কায়দায় নির্বিচারে পাখি শিকার করছেন এক শ্রেণির অসাধু শিকারিরা।
পাখি শিকারের এই দৃশ্যটি গত রবিবার সকালে ধরা পড়ে গুরুদাসপুর পৌর সদরের দুখাফকিরের মোড় এলাকার একটি ফসলের খেতে।
স্থানীয়রা বলেন, বানের পানি নেমে যাচ্ছে। কাদা-জলে ছোট বড় নানা প্রজাতির মাছ দেখা যাচ্ছে। সেসব মাছ খেতেই চলনবিল এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে বকসহ নানা অতিথি পাখি। বিল জলাশয়ে পাখির এমন অবাদ বিচরণে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন এসব অসাধু শিকারি।
বিষটোপ, জাল পেতে এবং কলাপাতার ঘর ও বিশেষ ফাঁদ পেতে নির্বিচারে বক, কাদাখোঁচা, রাতচোরা, শালিকসহ নানা প্রজাতির পাখি শিকার করা হচ্ছে। রাতে এবং ভোরে শিকার করা এসব পাখি প্রকাশ্যে স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে পাখি শিকার করা হলেও বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন পাখি নিধন রোধে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
তবে ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে পাখি শিকারিদের জন্য ১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গুরুদাসপুরের পাঁচশিশা বিলে, কাছিকাটা, মশিন্দা, ধারবারিষা, চাঁচকৈড় মধ্যম পাড়া বিলসহ সিংড়া, তাড়াশ, চাটমোহর, পাবনা ও বগুড়ার বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে পরিযায়ী এসব পাখি শিকার করা হচ্ছে। গুরুদাসপুরের শাহীন আলম, শফিক, রাকিব হোসেন ও আব্দুল হান্নান প্রতিদিন ফাঁদ পেতে বক শিকার করছেন। শিকার করা এসব পাখি এক জোড়া ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এসব পাখি শিকারি জানান, পাখি শিকার করা যে, অপরাধ তা তারা জানেন না।
গুরুদাসপুর রোজি মোজাম্মেল মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক সায়মা চৌধুরী বলেন, বকসহ অন্য পাখি ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এভাবে পাখি ধরা বন্ধ করতে হবে।
উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, শিকার বন্ধে গত বছর নানা সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। কিন্তু এ বছর জনবলসংকটের কারণে সেই প্রচারণা বন্ধ রয়েছে।
রাজশাহী বিভাগীয় বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির জানান, ১৬টি জেলা নিয়ে তারা কাজ করেন। এ কারণে সব এলাকায় দায়িত্ব পালন করা কঠিন। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়