২৩ অক্টোবর ভোট গ্রহণ : বিএফইউজের নির্বাচনে আর বাধা নেই

আগের সংবাদ

বাঙালির মাতৃপূজা দেশমাতৃকার পূজা থেকে আলাদা নয়

পরের সংবাদ

ই-কমার্স প্রতারণায় ৬০ প্রতিষ্ঠান : ৩০ মামলার তদন্ত চলছে, রিং আইডির মালিককে ফেরাতে ইন্টারপোলের শরণ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের ৬০টির বেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী অনেকে ইতোমধ্যে মামলা করেছেন, কেউ বা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে ৩০টি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিভিন্ন ইউনিট। এরই অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়ে রিং আইডির প্রায় ২০০ কোটি টাকা জব্দের ব্যবস্থা করেছে সংস্থাটি। এছাড়া রিং আইডিরি মালিক কানাডা প্রবাসী শরিফ ইসলাম ও তার স্ত্রী আইরিন ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহযোগিতাও চাইবেন সিআইডি কর্মকর্তারা।
গতকাল সোমবার অনলাইন টিকেটিং এজেন্সি টুয়েন্টিফোর টিকেট ডটকমের দুই পরিচালক এবং ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রিং আইডির এক এজেন্টকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন এন্ড অপারেশন বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান। তিনি আরো জানান, রিং আইডির অন্যতম এজেন্ট মো. রেদোয়ান রহমানকে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানাধীন বড়গ্রাম এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গত ২০১৮ সাল থেকে রিং আইডিতে ইউজার হিসেবে কাজ শুরু করে রেদোয়ান। ৭-৮ মাস আগে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ পায়। তখন থেকেই ছয় শতাধিক আইডি বিক্রি করে ১ কোটির বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে সে। প্রতিটি সিলভার আইডি বাবদ ১২ হাজার টাকা, গোল্ড আইডি বাবদ ২২ হাজার, প্রবাসী গোল্ড আইডি ২৫ হাজার, প্রবাসী প্ল্যাটিনাম আইডি ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছে রেদোয়ান।
অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, সিআইডির অনুরোধে রিং আইডির প্রায় ২০০ কোটি টাকা জব্দ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে রিং আইডির হাতিয়ে নেয়া টাকার পরিমাণ আরো বেশি বলে জানা গেছে। যদিও সেই অর্থ কোথায় জমা আছে তা এখনো জানা যায়নি। এই প্রেক্ষাপটে রিং আইডির মালিক কানাডা প্রবাসী শরিফ ইসলাম ও আইরিন ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের শরণাপন্ন হবো আমরা।
সাইবার ইনভেস্টিগেশন এন্ড অপারেশন বিভাগের এই কর্মকর্তা আরো জানান, গত রবিবার বিকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনলাইন টিকেটিং এজেন্সি টুয়েন্টিফোর টিকেট উটকমের বোর্ড অফ ডিরেক্টরের সদস্য এম মিজানুর রহমান সোহেলকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের একটি টিম। এর আগে, গত ৪ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গা সদর থানা এলাকা থেকে মো. রাকিবুল হাসান নামে টুয়েন্টিফোর টিকেট ডটকমের অন্য একজন পরিচালককে গ্রেপ্তার করে সাইবার পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা ফেসবুক ও ওয়েবসাইটে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে অর্থ আত্মসাৎ ও ডিজিটাল প্রতারণা করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গত ২০১৯ সালের মে মাসে যাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা।
একই মালিকানাধীন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থলেডটকম ও উইকমডটকম-এর ছয়জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়েও গতকাল সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমান হোসেন জানান, ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থলেডটকম ও উইকমডটকমের হেড অব অপারেশন মো. নজরুল ইসলামসহ প্রতিষ্ঠানের ৬ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- একাউন্ট অফিসার মো. সোহেল হোসেন, ডিজিটাল কমিউনিকেশন অফিসার মো. তারেক মাহমুদ অনিক, সেলস এক্সিকিউটিভ অফিসার সাজ্জাদ হোসেন ওরফে পিয়াস, কল সেন্টার এক্সিকিউটিভ অফিসার মুন্না পারভেজ ও সুপারভাইজার মো. মাসুম হাসান। কম মূল্যে টিভি, ফ্রিজ, মোটরসাইকেল ও ইলেট্রিক পণ্য বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক হাজার ক্রেতার কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ইমান

হোসেন আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, সেনাবাহিনী ও সিআইডিতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে পৃথক আরেকটি অভিযানে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. আবদুস সাত্তার, মো. আলি হোসেন ও শাহাদত হোসেন। ভুয়া নিয়োগপত্র নিয়ে দুই ব্যক্তি সেনাসদর দপ্তরে চাকরিতে যোগ দিতে গেলে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পায়। গত ১০-১২ বছর ধরে তারা এই প্রতারণার কাজে যুক্ত থাকলেও এর আগে গ্রেপ্তার হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়