ই-কমার্স নিয়ে অভিযোগের পাহাড় ভোক্তা অধিদপ্তরে : বর্তমানে ভোক্তায় অভিযোগ ২২ হাজার, ৩ মাসে অভিযোগ বেড়েছে ৯ হাজার

আগের সংবাদ

মিলছে টিকা, করোনায় স্বস্তি : তবুও মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি, নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত

পরের সংবাদ

রাজনৈতিক নেতৃত্বকে তোয়াক্কা না করার মনোভাব

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পরাধীন ব্রিটিশ-ভারত থেকে পাকিস্তানের কালো অধ্যায় পেরিয়ে জন্ম হয় বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের। এই মহান অর্জনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের মোড় ঘোরানো নানা ঘটনা, যার কারিগর হিসেবে কেউ আখ্যায়িত হয়েছেন নায়কের অভিধায়; কেউবা আবির্ভূত হয়েছেন খলনায়কের চরিত্রে। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে সেসব ঘটনা ও তার নায়ক-খলনায়কদের কার কী ভূমিকা, তাই নিয়েই অধ্যাপক আবু সাইয়িদের গ্রন্থ ‘যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম’। স¤প্রতি ভোরের কাগজ প্রকাশন থেকে বের হয়েছে বইটি। এ বই থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিদিন কিছু অংশ তুলে ধরা হচ্ছে ভোরের কাগজের পাঠকদের জন্য।
বাঙালি সামরিক নেতৃত্বের বেশ কিছু অংশই ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। অস্ত্র ও রসদ পাওয়ার ফলে তারা মনে করেছিলেন, তারা স্বাধীনভাবেই যুদ্ধ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। বাস্তব অবস্থায় যখন সামঞ্জস্য খুঁজে পাচ্ছিলেন না তখন তারা হতাশ হন। এমনও ধারণা করা হয়- ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায় কিনা- অন্যদিকে ভারতীয় বাহিনীর তদরকিতে অরাজনৈতিকভাবে গেরিলাবাহিনী গঠনকে স্বভাবতই সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেন।
রাজনৈতিক নেতৃত্বকে তোয়াক্কা না করার মনোভাব : রাজনীতিবিদরা নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য নিরসন

করে বলতে গেলে অত্যন্ত ত্বরিত গতিতে প্রবাসী স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠনে সমর্থ হন।
১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশ্য আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন হয়। জাতীয় পরিষদ সদস্য কর্নেল ওসমানীকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ হতে প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়। প্রধান সেনাপতি হিসেবে কর্নেল ওসমানীকে নিযুক্ত করার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সামনে তেমন কোনো বিকল্প ছিল না।
কর্নেল ওসমানী সামরিক বাহিনীর লোক হলেও তিনি ছিলেন একজন নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য। সেজন্য সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বে সঙ্গে তার সমন্বয় ও কার্যক্রম অত্যন্ত সহজ ও স্বাভাবিক হবে বলেই ধরে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাকেও এই অগোছানো, অসংগঠিত, বিশৃঙ্খলা এবং ভীত সন্ত্রস্ত্র সেনাবাহিনীকে ক্ষিপ্রগতিতে সংগঠিত করতে বিশেষ বেগ পেতে হয়। সামরিক নেতৃত্বের একটি অংশ অত্যন্ত সতর্ক ও সচেতনভাবে মুজিবনগর সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত সেনাকাঠামোর আওতায় আসার বিষয়টি এড়িয়ে চলছিলেন।
বাঙালি সামরিক নেতৃত্বের বেশ কিছু অংশই ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও সীমান্ত বাহিনীর অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রথম দিকে কিছু অস্ত্র ও রসদ সরবরাহ পাওয়ার ফলে তাদের মনে এমন একটি ধারণা হয়েছিল, তারা যার যার ‘সাম্রাজ্যে’ স্বাধীনভাবেই যুদ্ধ কার্যক্রম পরিচালনা করতে সমর্থ হবেন। এই মনোভাব ও বাস্তব অবস্থায় যখন সামঞ্জস্য খুঁজে পাচ্ছিলেন না তখন তাদের মধ্যে ব্যাপক হতাশার উদ্ভব ঘটে।
তাদের মনে এমন একটি ধারণাও জন্ম লাভ করতে শুরু করে, আসলে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায় কিনা- কিংবা ভারত আদৌ স্বাধীনতা যুদ্ধে বস্তুগত সাহায্য প্রদান করবে কিনা? অন্যদিকে সামরিক বাহিনীকে ডিঙিয়ে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর তদারকিতে রাজনৈতিকভাবে গেরিলাবাহিনী গঠনকে স্বভাবতই সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেন। মুজিব বাহিনী গঠন, এর স্ট্রাকচার, নেতৃত্ব, প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ এবং তাদের সেনা-নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কমান্ড স্ট্রাকচার, সামরিক বাহিনীর রীতিসিদ্ধ অফিসার ও সেনাসদস্য তাদের গণ্ডীবদ্ধ সামরিক কর্তৃত্বের একচ্ছত্র আধিপত্যের ওপর বাড়তি উপদ্রব হিসেবেই বিবেচনা করতে থাকেন।
এপ্রিল হতে দেখা যায় বাঙালি সেনাবাহিনীর বয়ে আনা অস্ত্রশস্ত্র গোলা-বারুদের পরিমাণ হ্রাস পায়- সে তুলনায় ভারত কর্তৃক সরবরাহের আনুপাতিক হার ছিল আশঙ্কাজনক।
এমতবস্থায় বাধ্য হয়ে স্বদেশভূমি ছেড়ে আসা প্রায় ‘রাজনৈতিক চেতনা বিবর্জিত’ (মেজর শওকত আলির উক্তি) নিয়মিত বাহিনীতে হতাশা সঞ্চারিত হওয়া স্বাভাবিক ছিল।

আগামীকাল প্রকাশিত হবে
‘মুজিবনগর সরকারের পদক্ষেপ’
‘যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম’- বইটি পাওয়া যাচ্ছে ভোরের কাগজ প্রকাশনে (ভোরের কাগজ কার্যালয়, ৭০ শহীদ সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা)। এছাড়া সংগ্রহ করা যাবে bhorerkagojprokashan.com থেকেও।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়