ই-কমার্স নিয়ে অভিযোগের পাহাড় ভোক্তা অধিদপ্তরে : বর্তমানে ভোক্তায় অভিযোগ ২২ হাজার, ৩ মাসে অভিযোগ বেড়েছে ৯ হাজার

আগের সংবাদ

মিলছে টিকা, করোনায় স্বস্তি : তবুও মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি, নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত

পরের সংবাদ

গঙ্গা-যমুনা উৎসবের ৯ম দিন : অনুষ্ঠানমালায় গীতি আলেখ্য সংগীত আবৃত্তি পথনাটক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় উৎসবের আলোয় ঝলমল করছিল বৃষ্টিস্নাত বিকালটি। গতকাল শনিবার নবম দিনে নৃত্য, সংগীত, পথনাটক, আবৃত্তি ও শিশু-কিশোর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে উন্মুক্ত মঞ্চের অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়।
এদিন জাতীয় সংগীত, নৃত্যকলা ও আবৃত্তি মিলনায়তনে সন্ধ্যায় সত্যেন সেন শিল্পী গোষ্ঠীর আয়োজনে পরিবেশিত হয় গীতি আলেখ্য ‘ইতিহাস কথা কও’, স্রোত আবৃত্তি সংসদ পরিবেশন করেছে ‘সুবর্ণবাংলা’।
জাতীয় নাট্যশালায় সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় লোক নাট্যদলের আমরা তিনজন। বুদ্ধদেব বসুর গল্প অবলম্বনে এই নাটকে উঠে এসেছে ১৯২৭ সালের পল্টন এলাকা, একটি মেয়েকে ঘিরে তিন বন্ধুর প্রেম।
এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটারে প্রদর্শিত হয় নাট্যচক্রের ‘একা এক নারী’। এক বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে তালাবদ্ধ নিঃসঙ্গ এক নারী মারিয়ার সংলাপের মাধ্যমে এ নাটকের মূল রূপরেখা বিধৃত। নিত্যদিনের গৃহস্থালি কাজ, অশ্লীল ভীতিপ্রদ ফোন, বিপরীত ফ্ল্যাটের যৌন বিষয়ে অতি উৎসাহী তরুণের সংগোপন বাইনোকুলারের দৃষ্টি, কামাতুর দেবর, আর সদাক্রন্দনরত শিশুসন্তানের মোকাবিলা করতে করতে এ নারী তার জীবনের আশা-নিরাশা, ভালোবাসার কথা ভাগাভাগি করে, যার ভেতর তার স্বামীর এবং নিজের পরকীয়া প্রেমের কথাও স্থান পায়। স্বামীর পরকীয়ায় তার কোনো প্রতিবাদের স্থান ছিল না, অথচ তার পরকীয়ার অপরাধে তাকে এই তালাবদ্ধ জীবনযাপনে বাধ্য করে তার ঈর্ষাকাতর অক্ষম স্বামী। ‘একা এক নারী’, যাতে একক অভিনয় করেছেন তনিমা হামিদ। ইতালির নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক, নাট্যকার ও অভিনেতা দারিও ফো ও ফ্রাঙ্কা রামের ‘এ ওমেন অ্যালোন’ নাটকের অনুবাদ করেছেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম এবং নির্দেশনা দিয়েছেন দেবপ্রসাদ দেবনাথ।
স্টুডিও থিয়েটারে সন্ধ্যায় নাটক পরিবেশিত হয় বাতিঘরের নাটক

‘র‌্যাড ক্লিফ লাইন’। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন তরুণ মুক্তনীল।
জানা যায়, ভারতবর্ষ ভাগ করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন ব্রিটিশ কর্মকর্তা র‌্যাডক্লিফ। তিনি একই ভূখণ্ডে মানুষের মাঝে সীমান্ত দেয়ালের দাগ কেটে দিয়েছিলেন। ‘র‌্যাডক্লিফ লাইন’ মূলত ভারতবর্ষের কাঁটাতারের দেয়ালকে ঘিরে গল্প। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নো-ম্যান্সল্যান্ডই এই নাটকের পটভূমি। নাটকের শুরুতেই দেখা যায় উঁচু একটি স্থানে দুজন সীমান্তরক্ষী কথা বলছে, তাদের ভাষা শুনে বোঝা গেল তারা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী। এদেরই একজন সীমান্তে হঠাৎ একটা গরুকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। অন্যজন বলছে, যে করেই হোক সেই গরুটিকে ফিরিয়ে আনতে হবে। হুকুম পালন করার জন্য ভারতীয় সৈন্যটি গরু খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে। হাঁটতে হাঁটতে ভারতীয় সৈন্যটি নো-ম্যান্সল্যান্ডে চলে আসে। সেখানে এসে দেখে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীর পোশাক পরিহিত একজন তারই মতো গরুটিকে খুঁজছে। নো-ম্যান্সল্যান্ড এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী ও বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী একে অপরকে দেখে লুকিয়ে পড়ে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশিকে দেখে গুপ্তচর ভেবে বসে। তারপর শুরু হয় দুজনের আড়ালে থেকে তর্ক এবং নানা রকম বাকবিতণ্ডা। তাদের তর্কের মধ্য উঠে আসে বাংলাদেশ-ভারতের ইতিহাসের নানা অধ্যায় এবং সাম্প্রতিক নানা বিষয়। দুদেশের দুই সীমান্ত প্রহরীর তর্কের মধ্য দিয়ে উঠে আসে তারা আসলে একই ভূ-খণ্ডে বাস করা মানুষ।
যাদের আবেগ-অনুভূতি-ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি মূলত এক। কিন্তু কাঁটাতারের সীমান্ত রেখা তাদের ভাগ করে দিয়েছে। দুই সীমান্তরক্ষী যখন নাটকের শেষপ্রান্তে এসে বন্ধুত্বের আলিঙ্গন করতে চায়, তখনই বুলেটে বিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে তাদের দেহ। এমনই বিয়োগান্তক এক দৃশ্যে শেষ হয় নাটকটি।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন শিশির সরকার, ফয়সাল মাহমুদ, সঞ্জয় হালদার, মনিরুজ্জামান ফিরোজ, সাফিন আহমেদ অশ্রæ, খালিদ হাসান রুমি, স্মরণ বিশ্বাস ও মুক্তনীল। নাটকের জন্য আলোক পরিকল্পনা করেছেন তানজিল আহমেদ, মঞ্চ পরিকল্পনা খালিদ হাসান রুমি, পোশাক পরিকল্পনায় সায়মা করিম। এছাড়াও বিকালে স্টুডিও থিয়েটার হলে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও আমাদের সংস্কৃতি’ শিরোনামে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়