ঢাকা সেনানিবাসে এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন

আগের সংবাদ

যশোর বোর্ডের হিসাব থেকে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন : জালিয়াতির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

পরের সংবাদ

শ্রীপুরে টুনটুনিকে দেখতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নাসির উদ্দিন জর্জ, শ্রীপুর (গাজীপুর) থেকে : বিস্ময়কর ছোট এক গরুর বাছুর জন্ম হয়েছে। দেশি জাতের এ গরুটির বয়স বছর পার হলেও খর্বাকৃতিই (বামন) রয়ে গেছে। সম্প্রতি গড়া গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে সাভারের রানী ছোট গরুর স্বীকৃতির রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে টুনটুনি নামে এই গরুটি।
এমন একটি ছোট্ট (খর্বাকৃতি) গরুর সন্ধান পাওয়া গেছে শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের হায়াতখার চালা আড়ালিয়া ভিটা গ্রামে। ওই গ্রামের মৃত আহাম্মদ আলীর ছেলে কৃষক আবুল কাশেমের পালিত একটি গাভীর গর্ভে কাজলা সাদা রঙের খর্বাকৃতির এ বাছুরের জন্ম। বছর ঘুরে গেলেও গরুটির ওজন ও উচ্চতা সে হারে বাড়েনি। দেশীয় জাতের গরুর একটি খর্বাকৃতির বাছুর দেখতে বাড়িতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছে। ১৩ মাস আগে জন্ম নেয়া বাছুরটির ওজন ছিল দেড় থেকে দুই কেজি। বর্তমানে এর ওজন ২৩ কেজি এবং উচ্চতা ২২ ইঞ্চি।
কৃষক আবুল কাশেম জানান, কৃষির মাধ্যমেই তার জীবিকা শুরু হয়। গত প্রায় ২০ বছর যাবৎ তিনি কৃষির পাশাপাশি দেশি জাতের গরু লালন-পালন করে আসছেন। বাছুরটির মা গাভী তার ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। মা গাভীটি তার গরুর পালে আনার পর অন্য তিনটি গাভীও প্রতি বছর একটি করে বাছুর জন্ম দেয়। মা গাভীটির পেটে এখন আরেকটি বাচ্চা রয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে এটি বাচ্চা দিবে।
বাছুরটির জন্মের পর খরগোশের বাচ্চার মতো দেখা যায়। গাভীর দুধ স্পর্শ করতে পারত না। জন্মের পর থেকে বাছুরটি বাঁচবে কিনা তা নিয়ে তারা হতাশায় ছিলেন। পাড়া-প্রতিবেশী খরগোশ আকৃতির বাছুরটি দেখতে আসা শুরু করে। এক মাসের মতো কোলে তুলে ধরে গাভীর দুধ খাওয়াতে হতো। কোলে তুলে খাওয়াতে গিয়ে বেশ কয়েকবার আমরা বিরক্ত হয়েছি। এক মাস পর বাছুরটি লাফিয়ে লাফিয়ে গাভীর দুধ খাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করে। ৬ মাস পর থেকে বাছুরটির বৃদ্ধি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
গৃহিণী জরিনা বেগম বলেন, বাছুরটি সারাদিন ঘাস, ভূসি, কুঁড়া, লবণ খায়। আগে তেমন যতœ করেননি। এখন যতটুকু এবং যা দেন ততটুকুই খেয়ে শেষ করে ফেলে। এটি জন্মের পর লালন-পালন করতে অনেক কষ্ট হয়েছে। কিছুদিন যাওয়ার পর বাছুরটির প্রতি মায়া লেগে গেছে। একমাত্র ছেলে সজীব বাছুরটি সঙ্গে নিয়ে ঘোরে। গত এক মাস যাবৎ প্রতিদিন গড়ে দুই আড়াইশ নারী-পুরুষ দর্শনার্থী বাছুরটি দেখতে আসে।
দর্শনার্থী স্থানীয় বাউনী গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এরকম একটা ছোট বাছুর দেখার জন্য অনেকের মতো তিনিও এসেছেন। এরকম বাছুর তিনি কখনো দেখেননি। প্রকৃতির মধ্যে আল্লাহর এমন সৃষ্টি সত্যিই দেখার মতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুকুনুজ্জামান বলেন, দেশি জাতের একটি বাছুর সাধারণত জন্মের পরই ১৫/২০ কেজি ওজন হয়। এক বছর বয়সে ৮০ থেকে ১০০ কেজি হতে পারে। কিন্তু এ বাছুরটির ক্ষেত্রে ওজন বাড়েনি এবং উচ্চতাও বাড়েনি। এটি একটি খর্বাকৃতির গরু। ছোট গরু হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করতে পারে।
উল্লেখ্য, ১ বছর ২ মাস বয়সি দেশি জাতের বাছুর টুনটুনির ওজন মাত্র ২৩ কেজি। যদিও গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখানো রানির চেয়ে দেশি জাতের এই বাছুরের উচ্চতা বেশি। রানির উচ্চতা ছিল ২০ ইঞ্চি। আর টুনটুনির উচ্চতা ২২ ইঞ্চি। রানির আগে ২০১৪ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে নাম লিখিয়েছিল ভারতের কেরালা রাজ্যের মানিকিয়াম নামের একটি গরু। এটির উচ্চতা ছিল ২৪ দশমিক শূন্য ৭ ইঞ্চি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়