ঢাকা সেনানিবাসে এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন

আগের সংবাদ

যশোর বোর্ডের হিসাব থেকে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন : জালিয়াতির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

পরের সংবাদ

রহস্য উদ্ঘাটন : চান্দিনায় সম্পত্তির লোভে নিজ মেয়েকে হত্যা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জানে আলম মজুমদার, (কুমিল্লা) থেকে : জেলার চান্দিনায় সম্পত্তির লোভে ভাতিজাকে ফাঁসাতে নিজ মেয়েকে খুন করেছেন বাবা ও অন্যান্য স্বজনরা। গত ২ অক্টোবর মধ্য রাতে চান্দিনা উপজেলাধীন গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুর ভুঁইয়াপাড়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকা সাতজনের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমিল্লা এম তানভীর আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডের শিকার কিশোরী মেয়েটির নাম সালমা আক্তার (১৪)। সে একই গ্রামের ঘাতক সোলেমান মিয়ার মেয়ে। হত্যাকাণ্ডের পর এ ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করতে মরদেহটি ক্ষত-বিক্ষত করে পুকুরে ফেলে দেয়। মামলা করা হয় প্রতিপক্ষ ভাতিজার বিরুদ্ধে। এরপর ঘটনাটিকে আরো নাটকীয় মোড় দিতে পরবর্তী সময় নিজের গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ঘাতক সোলেমান হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে রহস্য উদ্ঘাটনে নিয়োজিত ছিল পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকা সাতজনের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বছরখানেক আগে চান্দিনা উপজেলাধীন বসন্তপুর গ্রামের সোলেমান মিয়ার সঙ্গে ৭ শতক জমি নিয়ে তার ভাইয়ের ছেলেদের সঙ্গে দ্ব›েদ্বর সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে একাধিকবার সালিশি বৈঠক হয়। সুরাহা না হওয়ায় উভয়পক্ষ মামলা করেন। ৭ শতক জমির লোভে ভাতিজাদের হত্যা মামলা দিয়ে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে খুনের পরিকল্পনা করে সোলেমান।
এ নিয়ে তার ভাই লোকমান হোসেন, আব্দুল বাতেন, সোলেমানের উকিল শ্বশুর আব্দুর রহমান, প্রতিবেশী আবুল হোসেন, শফীউল্লাহ ও খলিলের সঙ্গে পরিকল্পনা করেন। সাতজনের পরিকল্পনায় গত ১ অক্টোবর বিকালে সোলেমান তার স্ত্রী ও বড় মেয়েকে শ্বশুর বাড়ি চান্দিনার রানীচড়া গ্রামে পাঠিয়ে দেয়। সেই রাতে বাড়িতে ছিলেন কেবল সোলেমান আর তার ছোট মেয়ে সালমা আক্তার (১৪)। গভীর রাতে ঘাতক বাবা সোলামান ও অন্যরা মেয়েকে ঘর থেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। ঘটনার পরদিন ভাতিজাসহ ১০ জনের নামে হত্যা মামলা করেন সোলেমান।
এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যস্ত পুলিশ। তদন্তের তীর ছুটে বাবার দিকে, বিষযটি বুঝতে পারেন ঘাতক বাবা। সাজিয়ে ফেলেন নতুন নাটক। ৫ অক্টোবর ভোরে বাড়ির বাগানে গলায় ছুরিকাহত অবস্থায় পাওয়া যায় সোলেমান বেপারিকে। আহত বাবা পুলিশকে জানায় তার ভাতিজাসহ অন্য আসামিরা হত্যা করার চেষ্টা করে। পাষণ্ড বাবার ঘটনায় পুলিশের সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়। সিনিয়র অফিসারদের নিয়ে চলে তদন্তের গভীরতা।
একপর্যায়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে আব্দুর রহমান ও খলিলকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে, পুলিশের সন্দেহ এড়াতে পাষণ্ড বাবার ছুরিকাঘাত করার বিষয়টি জানান। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে আটককৃতরা। হত্যার অভিযোগে বাবাসহ অন্যরা নজরদারিতে আছে জানায় পুলিশ। এতে এলাকায় চাঞ্চল্যতা সৃষ্টি হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়